ইমাম মাহদী’র আবির্ভাব সম্পর্কিত বিভিন্ন হাদিস : মহানবী ﷺ-এর ভবিষ্যতবাণী

ইমাম মাহদী রা. কেঁ , তাঁর আগমনপূর্ব আলামত ও পরবর্তী আমল সম্পর্কে মহানবী -এর ভবিষ্যতবাণী

بِسْمِ اللہِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِیۡمِ

الحمد لله و الصلاة و السلام على رسوله محمد و على أله و أمّته

اَللّٰهُمَّ صَلِّ عَليٰ سَيِّدِنَا مَوْلَانَا مُحَمَّدٍ وَعَليٰ اٰلِ سَيِّدِنَا مُحَمَّدٍ صَلوٰةً تُنَجِّيْنَا بِهَا مِنْ جَمِيْعِ الْأَهْوَالِ وَاْلآفَاتِ وَتَقْضِيْ لَنَا بِهَا مِنْ جَمِيْعِ الْحَاجَاتِ وَتُطَهِّرُنَا بِهَا مِنْ جَمِيْعِ السَّيِّاٰتِ وَتَرْفَعُنَا بِهَا عِنْدَكَ اَعْليٰ الدَّرَجَاتِ وَتُبَلِّغُنَا بِهَا اَقْصىٰ الْغَايَاتِ مِنْ جَمِيْعِ الْخَيْرَاتِ فِي الْحَيَاتِ وَبَعْدَ الْمَمَاتِ- اِنَّكَ عَليٰ كُلِّ شَيْئٍ قَدِيْرٍ بِرَحْمَتِكَ يَا اَرْحَمَ الرَّاحِمِيْنَ

[উল্লেখ্য, এই গোটা আলোচনায় উল্লেখিত বিভিন্ন হাদিস ও আছার এবং আরবী ইবারত সমূহের অনুবাদ’কে কোনো বিজ্ঞ মুহাক্কেক আলেমের পরামর্শ ব্যাতীত কারো কাছে বর্ণনা করা থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দিচ্ছি, যাতে আমার অযোগ্যতার কারণে এখানে কোনো উল্লেখযোগ্য ভুল হয়ে থাকলে তা সংশোধন করে নেয়ার আগেই মানব সমাজে ছড়িয়ে না যায়। এগুলো পড়ুন ইলম অর্জনের জন্য এবং যোগ্য আলেম থেকে তা বুঝিয়ে নিন। আর কোনো যোগ্য চোখে উল্লেখযোগ্য ভুল ধরা পড়লে তা আমাকে অবগত করুন।]

 

 

শেষ জামানার অন্ধকারময় জুলুম, অন্যায়-অবিচার ও পাপে ভরা পৃথিবীকে পূণরায় ইনসাফ দ্বারা ভরিয়ে দিতে এবং  মুসলীম উম্মাহ’কে কোমড়ের উপর শক্ত করে দাঁড় করিয়ে দেয়ার উদ্দেশ্যে আল্লাহ তাআলা মহানবী ﷺ -এর কন্যা হযরত ফাতেমা রা.-এর বংশধরদের মধ্য থেকে ইমাম মাহদী রা.-কে পাঠাবেন -একথা সহিহ ও নির্ভরযোগ্য হাদিস ও আছার দ্বারা দালিলিক ভাবে প্রমাণিত। তিনি না আসা পর্যন্ত কেয়ামত কায়েম হবে না, হবে না…হবেই না…। নিচের পাঁচটি রেওয়ায়েত একথা প্রমাণের জন্য যথেষ্ঠ, যার প্রত্যেকটি নির্ভরযোগ্য সনদে বর্ণিত।

ইমাম মাহদী রা.-এর আগমন সম্পর্কিত নির্ভরযোগ্য হাদিস সমূহ

# হযরত  আবু সাঈদ খুদরী রা. থেকে সহিহ সনদে বর্ণিত হয়েছে, রাসুলুল্লাহ ﷺ এরশাদ করেন- يَخْرُجُ فِي آخِرِ أُمَّتِي الْمَهْدِيُّ يَسْقِيهِ اللَّهُ الْغَيْثَ ، وَتُخْرِجُ الْأَرْضُ نَبَاتَهَا، وَ يُعْطِي الْمَالَ صِحَاحًا ، وَتَكْثُرُ الْمَاشِيَةُ وَتَعْظُمُ الْأُمَّةُ ، يَعِيشُ سَبْعًا أَوْ ثَمَانِيًا . اخرجه الحاكم فى المستدرك , كتاب الفتن والملاحم , المهدي يعيش سبعا أو ثمانيا : ٤/٦٠١ , وقال :  هذا حديث صحيح الإسناد ولم يخرجاه  ، ووافقه الذهبي . وقال الألباني في سلسلة الأحاديث الصحيحة : ٢/٣٣٦ رقم ٧١١ : هذا سند صحيح رجاله ثقات – ‘আমার উম্মতের শেষভাগে আল-মাহদী’র আবির্ভাব হবে। আল্লাহ তাকে প্রচুর (বরকতের) বৃষ্টি চাখাবেন এবং জমিন তার ফলন দিবে। তিনি (মানুষকে) সহিহ ভাবে ধ্বনসম্পদ দান করবেন। গবাদী পশু বেড়ে যাবে, উম্মত সম্মানীত হবে। তিনি সাত কিংবা আট বছর জীবিত থাকবেন’। [মুস্তাদরাকে হাকিম-৪/৬০১]

# আলী রা. থেকে সহিহ সনদে বর্ণিত হয়েছে, রাসুলুল্লাহ ﷺ এরশাদ করেন-  المهدي منا أهل البيت يصلحه الله في ليلة  . رواه أحمد في مسنده: ٢/٥٨ رقم ٦٤٥ تحقيق أحمد شاكر وقال : إسناده صحيح; و ابن ماجه في سننه: ٢/١٣٦٧ . والحديث صححه أيضاً الألباني في صحيح الجامع الصغير: رقم ٦٧٣٥- ‘আল-মাহদী হল আমাদের আহলে বাইতের মধ্যে একজন। (উম্মাহ’র সুযোগ্য আমীর হিসেবে তাদেরকে পরিচালনা করার জন্য) আল্লাহ তাকে এক রাতের মধ্যেই এসলাহ (সংশোধন) করে দিবেন’। [মুসনাদে আহমদ- ২/৫৮ হাদিস ৬৪৫; সুনানে ইবনে মাজাহ- ২/১৩৬৭]

# আবু সাঈদ খুদরী রা. থেকে উত্তম সনদে বর্ণিত হয়েছে, রাসুলুল্লাহ ﷺ এরশাদ করেন- الْمَهْدِيُّ مِنِّي، أَجْلَى الْجَبْهَةِ، أَقْنَى الْأَنْفِ، يَمْلَأُ الْأَرْضَ قِسْطًا وَعَدْلًا، كَمَا مُلِئَتْ جَوْرًا وَظُلْمًا، يَمْلِكُ سَبْعَ سِنِينَ . رواه أبو داود , كتاب المهدي: ١١/٣٧٥ رقم ٤٢٦٥ و حسنه الألباني في صحيح أبي داود ; و الحاكم في المستدرك: ٤/٥٥٧ و قال : هذا حديث صحيح على شرط مسلم ولم يخرجاه, و هو في صحيح الجامع: رقم ٦٧٣٦ – ‘আল-মাহদী’র আমার (বংশধরের) মধ্যে থেকে (হবে)। (সে হবে) প্রশস্ত কপাল (ও) লম্বা নাকের অধিকারী (এক ব্যাক্তি)। সে (পৃথিবীকে) ন্যায্যতা ও ইনসাফ দ্বারা ভরিয়ে দিবে, যেমনিভাবে (তাঁর আগমনের পূর্বে পৃথিবীটা তখন) পাপ-অপরাধ, জুলুম (অত্যাচার অন্যায় অবিচার) দিয়ে ভরে ছিল। সে (প্রায়) সাত বছর রাজ্য (খিলাফত) চালাবে’। [সুনানে আবু দাউদ– ১১/৩৭৫; মুসতাদরাকে হাকিম- ৪/৫৫৭]

# হযরত উম্মে সালমাহ রা. থেকে নির্ভরযোগ্য সনদে বর্ণিত হয়েছে, রাসুলুল্লাহ ﷺ এরশাদ করেন-  المهدي من عترتي , من ولد فاطمة .اخرجه أبو داود (رقم ٤٢٨٤) , وابن ماجة (رقم ٤٠٨٦), والحاكم ٤/٦٠٠ رقم ٨٧١٤, ٨٧١٥; قال الألباني رحمه الله: صحيح, (صحيح أبى داود)(٣٦٠٣), وقال في (الضعيفة)(١/١٠٨/٨٠): هذا إسناد جيد رجاله كلهم ثقات وله شواهد كثيرة.اهـ ,و قال في (المشكاة) (٥٤٥٣): إسناده جيد, وقال الشيخ أحمد الغماري في (إبراز الوهم المكنون)(ص٧٠): هو حديث صحيح أو حسن كما حكم به الحفاظ , رجاله كلهم عدول أثبات.اهـ , وقال أخوه الشيخ عبد الله في كتابه (المهدي المنتظر)(ص ٣٢): سكت عليه الحاكم والذهبي و إسناده صحيح – ‘আল-মাহদী হল আমার উত্তরসূরী; (আমার মেয়ে) ফাতেমা’র বংশধর’।  [সুনানে আবু দাউদ, হাদিস ৪২৮৪; সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস ৪০৮৬; মুসতাদরাকে হাকিম- ৪/৬০০, হাদিস ৮৭১৪, ৮৭১৫]

# হযরত আলী রা. থেকে নির্ভরযোগ্য সনদে বর্ণিত হয়েছে, রাসুলুল্লাহ ﷺ এরশাদ করেন- لو لم يبق من الدهر إلا يوم, لبعث الله رجلا من أهل بيتي , يملاهـا عدلا كما ملئت جورا .  اخرجه أحمد: ١/٩٩ رقم ٧٧٣, وابن أبى شيبة رقم ٣٧٦٤٨ , وأبو داود رقم ٤٢٨٣; قال الألباني رحمه الله:صحيح ,((صحيح ابي داود)) (٣٦٠٣) وقال الشيخ أحمد الغماري في (إبراز الوهم المكنون)(ص٦٠): صحيح على شرط البخاري ومسلم ولا علة له ولا مطعن في رجاله .اهـ وقال أيضا (ص٦٥): الحديث ليس فيه ما بنزل رتبته إلى درجة الحسن فضلا عن أن يحط قدره إلى مرتبة الضعيف بل هو صحيح بلا شك ولا شبهة .اهـ وقال أخوه عبد الله في كتابه (٢٩): إسناده صحيح – ‘যদি দুনিয়া ধ্বংসের একদিনও মাত্র বাকি থাকে, তবুও আল্লাহ আমার আহলে-বাইতে’র মধ্যে থেকে এক ব্যাক্তিকে পাঠাবেন, সে (পৃথিবীকে) ইনসাফ দ্বারা ভরিয়ে দিবে যেমনিভাবে (তাঁর আগমনের পূর্বে পৃথিবীটা তখন) পাপ-অপরাধে ভরে ছিল’।  [মুসনাদে আহমদ– ১/৯৯; আল-মুসান্নাফ, ইবনু আবি শায়বা, হাদিস ৩৮৬৪৮; সুনানে আবু দাউদ, হাদিস ৪২৮৩] 

# হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. থেকে হাসান সনদে বর্ণিত হয়েছে, রাসুলুল্লাহ ﷺ এরশাদ করেন-  لو لم يبق من الدنيا إلا يوم, لطول الله ذلك اليوم, حتى يبعث فيه رجلا من أهل بيتي يواطىء اسمه اسمي, واسم أبيه اسم أبي , فيملأ الأرض قسطا وعدلا, كما ملئت ظلما و جورا . أخرجه أبو داود: ٤٢٨٢; قال الألباني رحمه الله: حسن صحيح, كذا فى صحيح أبى داود:٣٦٠١ و صحيح الجامع : ٥٣٠٤; و أحمد: ١/٣٧٦ رقم ٣٥٧٢ , والترمذي: ٣٢٣٠ , وقال: حسن صحيح , و ابن أبى شيبة ٣٧٦٤٨, و الدراقطني في الأفراد:٣٦٤٣ ترتيب ابن طاهـر, و أبو نعيم: ١٩, والحاكم: ٤/٤٤٢ رقم ٨٤١٣ , الطبراني في الكبير: ١٠/١٣٣ رقم ١٠٢١٦– ‘যদি দুনিয়া (ধ্বংসে)র একদিনও মাত্র বাকি থাকে, তবুও আল্লাহ অবশ্যই সেই দিনটিকে দীর্ঘ বানিয়ে দিবেন, এমনকি তিনি তাতে আমার আহলে-বাইতে’র মধ্যে থেকে (এমন) এক ব্যাক্তিকে পাঠাবেন, যার নাম হবে আমার নামে এবং তার পিতার নাম হবে আমার পিতার নামে। সে পৃথিবীকে যথার্থতা ও  ইনসাফে ভরে দিবে যেমনিভাবে (তাঁর আগমনের পূর্বে পৃথিবীটা তখন) জুলুম ও পাপ-অপরাধে ভরে ছিল’। [সুনানে আবু দাউদ, হাদিস ৪২৮২; মুসনাদে আহমদ-১/৩৭৬, হাদিস ৩৫৭২; সুনানে তিরমিযী, হাদিস ৩২৩০; আল-মুসান্নাফ, ইবনু আবি শায়বাহ, হাদিস ৩৭৬৪৮; আল-আফরাদ, ইমাম দ্বারাকুতনী, হাদিস ৩৬৪৩; আবু নুআইম-১৯; মুসতাদরাকে হাকিম- ৪/৪৪২, হাদিস ৮৪১৩; আল-মু’জামুল কুবরা, ত্বাবরাণী- ১০/১৩৩, হাদিস ১০২১৬]

# হযরত সওবান রা. থেকে বর্ণিত হয়েছে, রাসুলুল্লাহ ﷺ এরশাদ করেন- يَقْتَتِلُ عِنْدَ كَنْزِكُمْ ثَلَاثَةٌ ، كُلُّهُمْ ابْنُ خَلِيفَةٍ ، ثُمَّ لَا يَصِيرُ إِلَى وَاحِدٍ مِنْهُمْ ، ثُمَّ تَطْلُعُ الرَّايَاتُ السُّودُ مِنْ قِبَلِ الْمَشْرِقِ فَيَقْتُلُونَكُمْ قَتْلًا لَمْ يُقْتَلْهُ قَوْمٌ – ثُمَّ ذَكَرَ شَيْئًا لَا أَحْفَظُهُ – فَقَالَ : فَإِذَا رَأَيْتُمُوهُ فَبَايِعُوهُ وَلَوْ حَبْوًا عَلَى الثَّلْجِ ، فَإِنَّهُ خَلِيفَةُ اللَّهِ الْمَهْدِيُّ – رواه ابن ماجه في ” السنن “, كتاب الفتن, باب “خروج المهدي ٢/ ١٣٦٧، رقم ٤١٨٤ , قال ابن كثير إسناده قوي صحيح: النهاية في الفتن والملاحم: ١/٢٩, وصححه القرطبي في ” التذكرة ” ص١٢٠١، وصححه البوصيري في ” مصباح الزجاجة ” ٣/٢٦٣، وصححه الشيخ حمود التويجري رحمه الله في كتابه ” إتحاف الجماعة بما جاء في الفتن والملاحم وأشراط الساعة ” ٢/١٨٧. و رواه البزار في ” المسند ” ٢/١٢٠، والروياني رقم ٦١٩، والحاكم في ” المستدرك ” ٤/٥١٠، ومن طريقه البيهقي في ” دلائل النبوة ” ٦/٥١٥ – ‘তিন ব্যাক্তি তোমাদের ধ্বনসম্পদ’কে কেন্দ্র করে লড়াইয়ে লিপ্ত হবে; তারা প্রত্যেকেই হবে খলিফার পুত্র। পরে (সেই ধ্বনসম্পদ বাস্তবে) তাদের কারোর হাতেই আসবে না। এরপর পূর্ব দিক (-এর একটি অঞ্চল) থেকে কালো পতাকা উত্তলিত হবে, তখন তারা তোমাদেরকে এমনভাবে হত্যা করবে যে, সেরকম হত্যা কোনো জাতি করেনি। এরপর তিনি আরো কিছু উল্লেখ করলেন, যা আমার স্মরণে নেই। এরপর বললেন: ‘(এরপর মুজাহিদগণের আরেকটি দল বের হবে, যার মধ্যে আমার আহলে বাইতের মধ্য থেকে এক ব্যাক্তি থাকবে, যার নাম হবে আমার নামে এবং তার পিতার নাম হবে আমার পিতার নামে)। সুতরাং তোমরা যদি তাঁকে দেখতে পাও, – যদি বরফের উপর দিয়েও হামাগুড়ি দিতে হয়- তবুও (সে কষ্ট সহ্য করে হলেও) তাঁর কাছে (গিয়ে) বায়াত করো। কারণ, তিনি হলেন (শেষ জামানায়) আল্লাহ’র (নিযুক্ত) খলিফাহ; আল-মাহদী’। [সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস ৪১৮৪; মুসনাদে বাযযার-২/১২০; মুসনাদে রোইয়ানী- হাদিস ৬১৯; মুসতাদরাকে হাকিম-৪/৫১০; দালায়েলুন্নাবুয়াত, বাইহাকী-৬/৫১৫]

# ইমাম হারিছ বিন আবি উসামা রহ. তাঁর ‘মুসনাদ’-এ যাবির রা. থেকে উত্তম সনদে বর্ণনা করেছেন যে, রাসুলুল্লাহ ﷺ এরশাদ করেন- ينزل عيسى بن مريم ، فيقول أميرهم المهدي : تعال صل بنا ، فيقول : لا إن بعضهم أمير بعض ، تكرمة الله لهذه الأمة . أخرجه الحارث بن أبي أسامة في مسنده و قال ابن القيم في المنار المنيف في الصحيح و الضعيف: ص ١٤٧ : و هذا إسناد جيد; و أقره الشيخ العباد في رسالته في ” المهدي ” المنشورة في العدد الأول من السنة الثانية عشرة من مجلة ” الجامعة الإسلامية: ص ٣٠٤; و صححه الألباني في ” السلسلة الصحيحة: رقم ٢٢٣٦ – ‘ঈসা ইবনে মারইয়াম আ. অবতরন করবেন। তখন তাদের আমীর আল-মাহদী (তাঁকে) বলবেন: (হে ঈসা ইবনে মারইয়াম আ. !) আসুন, (ইমাম হয়ে) আমাদেরকে নামায পড়ান। তখন তিনি বলবেন: না, নিশ্চই তাদেরই কেউ তাদের কতকের উপর আমীর হবে। এটা এই উম্মাতের জন্য আল্লাহর (দেয়া) সম্মান’ [মুসনাদে হারেছ: সহিহাহ, আলবানী-৫/২৭৬ হাদিস ২২৩৬]

# মুহাম্মাদ ইবনে হানাফিয়াহ রহ. থেকে নির্ভরযোগ্য সনদে বর্ণিত হয়েছে, তিনি বলেছেন-  كنا عند علي رضي الله عنه فسأله رجل عن المهدي فقال علي رضي الله عنه : هيهات ثم عقد بيده سبعا فقال : ذاك يخرج في آخر الزمان إذا قال الرجل الله الله قتل فيجمع الله تعالى له قوما قزع كقزع السحاب يؤلف الله بين قلوبهم لا يستوحشون إلى أحد ولا يفرحون بأحد يدخل فيهم على عدة أصحاب بدر لم يسبقهم الأولون ولا يدركهم الآخرون وعلى عدد أصحاب طالوت الذين جاوزا معه النهر قال أبو الطفيل : قال ابن الحنفية : أتريده ؟ قلت : نعم قال : إنه يخرج من بين هذين الخشبتين قلت : لا جرم والله لا أريهما حتى أموت فمات بها يعني مكة حرسها الله تعالى . اخرجه الحاكم : ٤/٥٩٦ رقم ٨٦٥٩ و قال : هذا حديث صحيح على شرط الشيخين و لم يخرجاه , ووافقه الذهبي في تلخيصه كما جاء في إتحاف الجماعة بما جاء في الفتن والملاحم وأشراط الساعة : ٢/٢٨٠ – ‘আমরা আলী রা.-এর কাছেই ছিলাম, এমন সময় এক ব্যাক্তি তাঁকে আল-মাহদী’র ব্যাপারে প্রশ্ন করলো। আলী রা. বললেন: (ওনার দেখা পাওয়া তোমাদের জন্য) অসম্ভব! অতঃপর তিনি তার হাতে(-র আঙ্গুলে) সাত (পর্যন্ত) গণনা করে বললেন: ‘তিনি শেষ জাামানায় বেড় হবেন (এমন এক বিশ্ব পরিস্থিতিতে), যখন কোনো (মুসলীম) ব্যাক্তি বলবে: ‘(আমার একমাত্র রব হলেন) আল্লাহ ! আল্লাহ ! (আর তাকে এই দোষেই) কতল করে ফেলা হবে। তখন আকাশের বিক্ষিপ্ত সাদা মেঘপুঞ্জের মতো বিক্ষিপ্ত একটি জামাআতকে আল্লাহ তাআলা তার পক্ষে একত্রিত করে দিবেন। আল্লাহ তাদের অন্তরগুলোর মাঝে ভালবাসা সৃষ্টি করে দিবেন। তারা না কারো প্রতি (অযাচিত) আশক্ত হবে, আর না কারো প্রতি (অযাচিত) আনন্দিত হবে। তাদের মাঝে বদরী সাহাবীদের সম-সংখ্যক (মুমিন এসে) শামিল হবে। (তাদের মর্যাদা এমন হবে যে,) না আগের লোকরা তাদেরকে পিছনে ফেলে অগ্রসর হতে পারবে, আর না পরবর্তীরা তাদের পর্যন্ত পৌছতে পারবে। তারা হবে তালুতের সাথিদের সমসংখ্যক যারা তার সাথে (জর্ডান) নদী অতিক্রম করেছিল’।

আবু তুফাইল বলেন: ইবনুল হানাফিয়্যাহ (আমাকে) জিজ্ঞেস করলেন: ‘তুমি কি তাঁকে (দেখতে) চাও’? আমি বললাম: ‘জি হ্যাঁ’ (সম্ভব হলে কেনো নয়!)। তিনি বললেন: ‘নিশ্চই তিনি এই দুই পিলারের মাঝখান থেকে আবির্ভূত হবেন’। আমি বললাম: ‘কোনো সমস্যা নেই। আল্লাহ’র শপথ, আমি না মড়া পর্যন্ত এই দুটিকে ছাড়বো না’। এরপর তিনি সেখানেই অর্থাৎ মক্কায় মাড়া যান। আল্লাহ তাআলা ওটির হিফাজত করুন’। [মুসতাদরাকে হাকিম– ৪/৫৯৬ হাদিস ৮৬৫৯]

ফায়দা:  উপরোক্ত নির্ভরযোগ্য রেওয়ায়েত সমূহ থেকে প্রমাণিত হয়: (১) আল-মাহদী’র আগমন হক্ব ও সত্য; (২) তিনি আখেরী জামানায় আগমন করবেন; (৩) তিনি রাসুলুল্লাহ ﷺ-এর মেয়ে হযরত ফাতেমা রা.-এর বংশধরগণের একজন হবেন; (৪) তার নাম হবে বিশ্বনবী মুহাম্মাদ ﷺ-এর নাম অনুযায়ী নাম; (৫) তার পিতার নাম হবে বিশ্বনবী মুহাম্মাদ ﷺ-এর পিতার নাম অনুযায়ী নাম; (৬) তিনি গোটা মুসলীম উম্মাহ’র আমীর/লিডার হবেন; (৭) তিনি ইসলামী রাষ্ট্রের খলিফায়ে-রাশেদ হবেন এবং পৃথিবীকে ইনসাফ দিয়ে ভরে দিবেন। (৮) তাঁর জামানাতেই ঈসা ইবনে মারইয়াম আ. আসমান থেকে আগমন করবেন। الله اعلم بالصواب

 

ইমাম মাহদী রা.-এর ঘটনার দিকে  ইংগীতবহ আরো কিছু রেওয়ায়েত 

# উম্মে সালমা রা. থেকে সহিহ সনদে বর্ণিত হয়েছে, রাসুলুল্লাহ ﷺ এরশাদ করেন- يَعُوذُ عَائِذٌ بِالْبَيْتِ فَيُبْعَثُ إِلَيْهِ بَعْثٌ ، فَإِذَا كَانُوا بِبَيْدَاءَ مِنَ الْأَرْضِ خُسِفَ بِهِمْ  ، فَقُلْتُ : يَا رَسُولَ اللَّهِ ، فَكَيْفَ بِمَنْ كَانَ كَارِهًا ؟ ، قَالَ : يُخْسَفُ بِهِ مَعَهُمْ ، وَلَكِنَّهُ يُبْعَثُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ عَلَى نِيَّتِهِ  . رواه مسلم، كتاب الفتن وأشراط الساعة، باب الخسف بالجيش الذي يؤم البيت: ٤/٢٢٠٨ رقم ٢٨٨٢; و ابو داود, كتاب الفتن والملاحم, باب ما يرجى في القتل: رقم ٤٢٨٩ – “এক আশ্রয়গ্রহনকারী (আল্লাহ’র) ঘরে আশ্রয় নিবে। তখন (কা’বায় তাকে আক্রমনের উদ্দেশ্যে) তার দিকে (একটি বাহিনী) প্রেরণ করা হবে। তারা যখন (আরব) ভূমির বায়দা (সমতল উপত্তকা)য় উপস্থিত হবে, তখন তারা ভূগর্ভে ধ্বসে যাবে’। তখন আমি জিজ্ঞেস করলাম: ‘ইয়া রাসুলাল্লাহ! (সেদিন) যে ব্যাক্তি অসন্তুষ্ট হৃদয়ে (সেই বাহিনীতে শরীক) থাকবে (তার সাথে) এটা কেমন করে হতে পারে? তিনি বললেন: ‘সেও তাদের সাথে ভূগর্ভে ধ্বসে যাবে। অবশ্য কেয়ামতের দিন সে তার নিয়তের ভিত্তিতে উত্থিত হবে”। [সহিহ মুসলীম- ৪/২২০৮ হাদিস ২৮৮২; সুনানে আবু দাউদ, হাদিস ৪২৮৯] 

 ফায়দা: আয়েশা রা. থেকে সহিহ সনদে বর্ণিত হয়েছে, রাসুলুল্লাহ ﷺ এরশাদ করেন-  يَغْزُو جَيْشٌ الْكَعْبَةَ فَإِذَا كَانُوا ببيْداءَ مِنَ الأَرْضِ يُخْسَفُ بأَوَّلِهِم وَآخِرِهِمْ . أخرجه البخاري ، كتاب البيوع، باب ما ذكر في الأسواق: ٣/٦٥ رقم ٢١١٨; و مسلم، كتاب الفتن وأشراط الساعة، باب الخسف بالجيش الذي يؤم البيت: رقم ٢٨٨٣  ‘একটি সৈন্যদল কা’বা(র উপর) আক্রমন করার উদ্দেশ্যে যাবে। পরে তারা যখন (আরব) ভূমির বাইদা (সমতল উপত্তকা)য় আসবে, তখন তাদের (বাহিনীর) আগা-গোড়া (সকলে) ভূগর্ভে তলিয়ে যাবে’। [সহিহ বুখারী- ৩/৬৫ হাদিস ২১১৮; সহিহ মুসলীম, হাদিস ২৮৮৩] 

আর হাফসা রা. থেকে সহিহ সনদে বর্ণিত হয়েছে, রাসুলুল্লাহ ﷺ এরশাদ করেন-  حَتَّى إِذَا كَانُوا بِبَيْدَاءَ مِنْ الْأَرْضِ يُخْسَفُ بِأَوْسَطِهِمْ وَيُنَادِي أَوَّلُهُمْ آخِرَهُمْ ثُمَّ يُخْسَفُ بِهِمْ فَلَا يَبْقَى إِلَّا الشَّرِيدُ الَّذِي يُخْبِرُ عَنْهُمْ . رواه مسلم، كتاب الفتن وأشراط الساعة، باب الخسف بالجيش الذي يؤم البيت: ٤/٢٢٠٩ رقم ٢٨٨٣  ‘….. এমনকি তারা যখন (আরব) ভূমির বাইদা (সমতল উপত্তকা)য় আসবে, তখন তাদের (বাহিনীর) মধ্যভাগটি ভূগর্ভে তলিয়ে যাবে এবং (তা দেখে) তাদের প্রথমাংশ তাদের শেষাংশ’দেরকে ডাক দিবে, অতঃপর তারা (সকলেই) ভূগর্ভে ধ্বসে যাবে। তখন (ভাগ্যক্রমে) শুধুমাত্র ওই বিচ্ছিন্ন ব্যাক্তিই (ধ্বসে যাওয়ার হাত থেকে) রেহাই পাবে, যে তাদের ব্যাপারে খবর দিবে’। [সহিহ মুসলীম– ৪/২২০৯ হাদিস ২৮৮৩]

উপরের মূল হাদিসে কা’বা ঘরে আশ্রয়গ্রহনকারী হবেন ইমাম মাহদী রা.। এই ঘটনাটি ঘটবে ইমাম মাহদী রা.-এর হাতে খিলাফতের বাইয়াত নেয়ার পর যখন সে খবর ছড়িয়ে পড়বে এবং একটি সৈন্যদল ইমাম মাহদী রা.কে মোকাবেলা করার জন্য শাম থেকে আগমন করবে। আল্লাহ তাআলা তাদেরকে আরবের বায়দা’য় ভূ-গর্ভে ধসিয়ে দিবেন। বায়দা মূলত: মক্কা ও মদীনার মাঝামাঝি একটি স্থান। [ফাতহুল বারী, ইবনে হাজার- ৪/৩৪০; উমদাতুল কারী, আইনী- ১১/২৩৬]

এতবড় খবর এই অত্যাধুনিক ইন্তারনেট ও স্যাটেলাইটের যুগে গোটা বিশ্বে মধ্যে ছড়িয়ে যেতে কতটুকু সময় লাগবে! মুসলমানরা ইমাম মাহদী রা.-এর হাতে খিলাফতের বাইয়াত করার পর সেদিন পর্যন্তও যারা দ্বিধাদ্বন্দ্বে থাকবে যে ‘ইমাম মাহদী হওয়ার এই দাবীদার আদপে খাঁটি মাহদী নাকি ভুয়া মাহদি, তাদের জন্য এই সৈন্যদলের ভূগর্ভে তলিয়ে যাওয়ার খবরটা হবে একটি বস্তুনিষ্ঠ মস্তবড় প্রমাণ যে, খাঁটি ইমাম মাহদী এসে গেছেন। ইমাম নুয়াইম বিন হাম্মাদ রহ. (মৃ: ২২৮ হি:) তাঁর কিতাব ‘আল-ফিতান’-এ নিজ সনদে আব্দুল্লাহ ইবনে আমর ইবনুল আস রা. থেকে বর্ণনা করেছেন যে, তিনি বলেছেন – حدثنا رشدين عن ابن لهيعة عن أبي قبيل حدثنا ابن وهب عن ابن لهيعة عن فلان المعافري سمع أبا فراس سمع عبد الله بن عمرو بن العاص رضى الله عنهما يقول علامة خروج المهدي إذا خسف بجيش بالبيداء فهو علامة خروج المهدي . رواه نعيم بن حماد في كتاب الفتن: رقم ٦٤, قال مجدى بن منصور بن سيد الشوري: ص ٢٣٠ رقم ٩٠٤: اسناده ضعيف – আল-মাহদী’র আবির্ভাবের আলামত রয়েছে। তখন (তাঁকে আক্রমন করার উদ্দেশ্যে গমনকারী একটি) সৈন্যদল (আরবের) বাইদা’(সমতল উপত্তকা)য় ভূগর্ভে তলিয়ে যাবে। এটাই হল আল-মাহদী’র আবির্ভাবের আলামত’। [আল-ফিতান, নুআইম বিন হাম্মাদ, আছার ৯০৪] الله اعلم بالصواب

# আবু হুরায়রাহ রা. থেকে সহিহ সনদে বর্ণিত হয়েছে, রাসুলুল্লাহ ﷺ এরশাদ করেন- لاَ تَنْتَهِي الْبُعُوثُ عَنْ غَزْوِ هَذَا الْبَيْتِ حَتَّى يُخْسَفَ بِجَيْشٍ مِنْهُمْ‏ ‏.‏ رواه النسائي في سننه , كتاب مناسك الحج : ٥/٢٠٦ رقم ٢٨٧٨ ، و صححه الألباني في صحيح النسائي و في سلسلة الأحاديث الصحيحة : ٢٤٣٢ ; و الحاكم في المستدرك : ٤/٤٣٠ – “(বিভিন্ন জামানার) সৈন্যবাহীনি এই (ক্বাবা) ঘরকে আক্রমন করা বন্ধ করবে না, যাবৎ না তাদের মধ্যে (একটি) সৈন্যবাহীনি (আখেরী জামানায় আল-মাহদীকে প্রতিহত করার উদ্দেশ্যে আরব ভূমির বায়দা’য়/সমতল উপত্তকায় উপস্থিত হয়ে) ভূগর্ভে ধ্বসে যায়”। [সুনানে নাসায়ী– ৫/২০৬ হাদিস ২৮৭৮; মুসতাদরাকে হাকিম– ৪/৪৩০] 

# উম্মে সালমাহ রা. বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ ﷺ এরশাদ করেন- يكُونُ اخْتِلافٌ عِنْدَ مَوْتِ خَلِيفَةٍ، فَيَخْرُجُ رَجُلٌ مِنْ أَهْلِ الْمَدِينَةِ هَارِبًا إِلَى مَكَّةَ، فَيَأْتِيهِ نَاسٌ مِنْ أَهْلِ مَكَّةَ فَيُخْرِجُونَهُ وَهُوَ كَارِهٌ. فَيُبَايِعُونَهُ بَيْنَ الرُّكْنِ وَالْمَقَامِ. وَيُبْعَثُ إِلَيْهِ بَعْثٌ مِنْ أَهْلِ الشَّامِ، فَيُخْسَفُ بِهِمْ بِالْبَيْدَاءِ بَيْنَ مَكَّةَ وَالْمَدِينَةِ. فَإِذَا رَأَى النَّاسُ ذَلِكَ أَتَاهُ أَبْدَالُ الشَّامِ وَعَصَائِبُ أَهْلِ الْعِرَاقِ فَيُبَايِعُونَهُ بَيْنَ الرُّكْنِ وَالْمَقَامِ. ثُمَّ يَنْشَأُ رَجُلٌ مِنْ قُرَيْشٍ أَخْوَالُهُ كَلْبٌ فَيَبْعَثُ إِلَيْهِمْ بَعْثًا فَيَظْهَرُونَ عَلَيْهِمْ وَذَلِكَ بَعْثُ كَلْبٍ، وَالْخَيْبَةُ لِمَنْ لَمْ يَشْهَدْ غَنِيمَةَ كَلْبٍ. فَيَقْسِمُ الْمَالَ وَيَعْمَلُ فِي النَّاسِ بِسُنَّةِ نَبِيِّهِمْ صَلَّى اللَّهم عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَيُلْقِي الْإِسْلامُ بِجِرَانِهِ فِي الْأَرْضِ. فَيَلْبَثُ سَبْعَ سِنِينَ ثُمَّ يُتَوَفَّى وَيُصَلِّي عَلَيْهِ الْمُسْلِمُونَ -قَالَ أَبُو دَاوُدَ قَالَ بَعْضُهُمْ عَنْ هِشَامٍ ‏”‏ تِسْعَ سِنِينَ ‏”‏ ‏.‏ وَقَالَ بَعْضُهُمْ ‏”‏ سَبْعَ سِنِينَ- أخرجه أبو داود: ٤/١٠٧ رقم ٤٢٣٧ ,أحمد رقم ٢٥٤٦٧ , الطبراني في الكبير: ٢٣/٢٩٠, ابن أبي شيبة :٨/٦٠٩ , والحاكم : ٤/٤٧٨, – ‘একজন খলিফা (শাসক/বাদশাহ)র মৃত্যুতে (পরবর্তি উত্তরসুরী নিয়ে) দ্বন্দ্ব দেখা দিবে। এর পর মদিনাবাসী এক ব্যাক্তি বেড় হয়ে মক্কার দিকে পালিয়ে যাবেন। এরপর মক্কাবাসী কিছু লোক তাঁর কাছে এসে -তিনি তা অপছন্দ করা সত্ত্বেও -তারা তাঁকে (এক বাড়ি থেকে) বের করে আনবে। এরপর তারা (ক্বাবা ঘরের কাছে) রুকন ও মাকাম (-ই-ইবরাহীম) -এর মাঝখানে তাঁর কাছে বাইয়্যাত হবে এবং (এ খবর শুনতে পেয়ে তাঁকে আটকানোর জন্য) শামের একটি সেন্যবাহিনীকে তাঁর দিকে প্রেরণ করা হবে। তখন তারা মক্কা ও মদিনার মাঝামাঝি একটি অনুর্বর মরু-উপত্যকায় ভূ-গর্ভে ধ্বসে যাবে। মানুষ যখন এটা দেখবে, তখন শামের আবদালগণ এবং ইরাকের আসাবাগণ তাঁর কাছে আসবে এবং রুকন ও মাকাম (-ই-ইবরাহীম) -এর মাঝখানে তাঁর কাছে বাইয়্যাত হবে। এরপর কুরাইশদের এক ব্যাক্তি -যার মামা হল কালব গোত্রের- দাঁড়াবে এবং তাদের দিকে একটি সৈন্যদল প্রেরন করবে এবং তারা ওইসব সৈন্যদের উপর বিজয়ী হবে। আফসোস তাদের জন্য যারা কালব’দের (থেকে প্রাপ্ত) গণীমত (বন্টনের সময় সেখানে) উপস্থিত থাকবে না। এরপর (ইমাম মাহদী) সম্পদসমূহ বন্টন করে দিবে এবং মানুষের মাঝে তাদের নবীর সুন্নাহ অনুযায়ী আমল করবে এবং দুনিয়ার দিকে দিকে ইসলামকে শানশওকতের সাথে ছড়িয়ে দিবেন। এরপর তিনি সাত বছর জীবিত থাকার পর ইন্তেকাল করবেন এবং মুসলমানরা তার (জানাযা’র) নামায পড়বে। [সুনানে আবু দাউদ-৪/১০৫, হাদিস ৪২৩৭; মুসনাদে আহমাদ, হাদিস ২৫৪৬৭; আল-মু’জামুল কাবীর, ত্বাবরানী-২৩/২৯০; আল-মুসান্নাফ, ইবনু আবি শায়বা- ৮/৬০৯; মুসতাদরাকে হাকিম-৪/৪৭৮]

ফায়দা: এই রেওয়ায়েতে খলিফা বলতে একজন মুসলীম বাদশাহ বোঝানো হয়েছে। বিভিন্ন হাদিস ও আছার থেকে বোঝা যায়, খলিফা আলা মিনহাজিন নবুওত অর্থাৎ নববী সুন্নাহ’র ভিত্তিতে নিযুক্ত খলিফা শেষ জামানায় ইমাম মাহদীর আগে আর কেউ হবে না। আর উপরোক্ত রেওয়ায়েতে যাঁর হাতে মক্কা, শাম ও ইরাকের মুসলমানদের বায়াতের কথা বলা হয়েছে তিনি হলেন ইমাম মাহদী, যা অপরাপর হাদিস ও আছার থেকে প্রমাণিত হয়। সুতরাং, ইমাম মাহদীর আবির্ভাবের পূর্বে এক খলিফার মৃত্য বলতে মূলতঃ একজন মুসলীম বাদশাহ/সুলতান-এর মৃত্যু বুঝানো হয়েছে

এরপর বলা হয়েছে- فَيَخْرُجُ رَجُلٌ مِنْ أَهْلِ الْمَدِينَةِ هَارِبًا إِلَى مَكَّةَ – ‘এর পর মদিনাবাসী এক ব্যাক্তি বেড় হয়ে মক্কার দিকে পালিয়ে যাবেন’ – এর দ্বারা ইমাম মাহদী রা. উদ্দেশ্য। তিনি সম্ভবত: তখনকার মদিনাতে বিপদজনক পরিস্থিতির সম্মুখিন হয়ে নিজের জীবন বাঁচানোর তাগিদে মদিনা থেকে মক্কার দিকে পালিয়ে আসবেন। পরে কোনো এক সময় ক্বাবা ঘরের রোকন ও মাকামের মাঝখানে মুসলমানরা তাঁর হাতে খিলাফতের বায়াত হবে। الله اعلم بالصواب

# হযরত আবু হুরায়রাহ রা. থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ ﷺ এরশাদ করেন- لاَ تَقُومُ السَّاعَةُ حَتَّى يَنْزِلَ الرُّومُ بِالأَعْمَاقِ أَوْ بِدَابِقَ فَيَخْرُجُ إِلَيْهِمْ جَيْشٌ مِنَ الْمَدِينَةِ مِنْ خِيَارِ أَهْلِ الأَرْضِ يَوْمَئِذٍ فَإِذَا تَصَافُّوا قَالَتِ الرُّومُ خَلُّوا بَيْنَنَا وَبَيْنَ الَّذِينَ سَبَوْا مِنَّا نُقَاتِلْهُمْ ‏.‏ فَيَقُولُ الْمُسْلِمُونَ لاَ وَاللَّهِ لاَ نُخَلِّي بَيْنَكُمْ وَبَيْنَ إِخْوَانِنَا ‏.‏ فَيُقَاتِلُونَهُمْ فَيَنْهَزِمُ ثُلُثٌ لاَ يَتُوبُ اللَّهُ عَلَيْهِمْ أَبَدًا وَيُقْتَلُ ثُلُثُهُمْ أَفْضَلُ الشُّهَدَاءِ عِنْدَ اللَّهِ وَيَفْتَتِحُ الثُّلُثُ لاَ يُفْتَنُونَ أَبَدًا فَيَفْتَتِحُونَ قُسْطُنْطِينِيَّةَ فَبَيْنَمَا هُمْ يَقْتَسِمُونَ الْغَنَائِمَ قَدْ عَلَّقُوا سُيُوفَهُمْ بِالزَّيْتُونِ إِذْ صَاحَ فِيهِمُ الشَّيْطَانُ إِنَّ الْمَسِيحَ قَدْ خَلَفَكُمْ فِي أَهْلِيكُمْ ‏.‏ فَيَخْرُجُونَ وَذَلِكَ بَاطِلٌ فَإِذَا جَاءُوا الشَّأْمَ خَرَجَ فَبَيْنَمَا هُمْ يُعِدُّونَ لِلْقِتَالِ يُسَوُّونَ الصُّفُوفَ إِذْ أُقِيمَتِ الصَّلاَةُ فَيَنْزِلُ عِيسَى ابْنُ مَرْيَمَ فَأَمَّهُمْ فَإِذَا رَآهُ عَدُوُّ اللَّهِ ذَابَ كَمَا يَذُوبُ الْمِلْحُ فِي الْمَاءِ فَلَوْ تَرَكَهُ لاَنْذَابَ حَتَّى يَهْلِكَ وَلَكِنْ يَقْتُلُهُ اللَّهُ بِيَدِهِ فَيُرِيهِمْ دَمَهُ فِي حَرْبَتِهِ – কেয়ামত সংঘটিত হবে না, যাবৎ রোম’রা আ’মাক অথবা দাবিক-এ অবতরণ না করে। সেসময় পৃথিবীবাসীর মধ্য থেকে (মুমিনদের) সর্বোত্তম একটি সৈন্যদল মদিনা হতে (বের হয়ে) তাদের দিকে ধাবিত হবে। তারা পরষ্পরে যখন সারিবদ্ধ হয়ে (মালহামাতুল কুবরা তথা মহাযুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হবে, তখন) রোম’রা বলবে: আমাদের এবং যারা আমাদের লোকদেরকে আটকিয়ে রেখেছে তাদের মাঝ থেকে তোমরা সরে যাও, আমরা ওদের সাথে যুদ্ধ করবো। তখন মুসলমানরা বলবে: (এটা কখনই হতে পারে) না, আল্লাহ’র শপথ, আমারা তোমাদের এবং আমাদের (মুসলমান) ভাইদের মাঝ থেকে সরে দাঁড়াবো না। এরপর তাঁরা তাদের (তথা রোম বাহিনীর) সাথে যুদ্ধ করবে। তখন (যদ্ধের ভয়াবহতা দেখে মুসলমানদের মধ্যে) তিন ভাগের এক ভাগ (ভয়ে) পালিয়ে যাবে, আল্লাহ তাদের তওবা আর কখনই কবুল করবেন না। আর এক তৃতীয়াংশ শহীদ হয়ে যাবে; তাঁরা হবে আল্লাহ’র কাছে (সেই জিহাদের) সর্বোত্তম শহীদ। আর (অবশিষ্ট) এক তৃতীয়াংশ (যাঁরা বেঁচে যাবে তাঁরা ওই জিহাদে রোমদের উপর) বিজয় লাভ করবে; (পরে) তাঁরা আর কখনই ফিতনায় পতিত হবে না। এরপর তাঁরা (সামনে অগ্রসর হয়ে) কুস্তুনতুনিয়া (কন্সট্যান্টিনোপোল/ ইস্তাম্বুল, তুরষ্ক) জয় করবে। তারা যখন তাদের তরবারী জয়তুন গাছে ঝুলিয়ে গণীমতের মাল বন্টন করতে থাকবে, এমন সময় শয়তান তাদের মাঝে চিৎকার দিয়ে বলবে: নিশ্চই মাসিহ (দাজ্জাল) তোমাদের পরিবারের পিছনে লেগেছে। তখন তাঁরা (অবস্থার সত্যতা যাঁচাইয়ের জন্য) বেরিয়ে পড়বে, কিন্তু (বাস্তবে) খবরটি ছিল মিথ্যা। তাঁরা যখন শাম-এ গিয়ে পৌছবে, (তখন) দাজ্জাল বের হবে। তাঁরা জিহাদের জন্য প্রস্তুতি নিয়ে সারিবদ্ধ হতে হতেই (আযান ও) নামাযের আকামত দেয়া হবে। তখন ঈসা ইবনু মারইয়াম (আ.) নাজিল হবেন। এরপর (নামায আদায় করা হবে ইমাম মাহদীর ইমামতীতে এবং নামাযের পর দাজ্জালের মুকাবেলায় মুসলীম উম্মাহ’র) তিনি নেতৃত্ব দিবেন। আল্লাহ’র দুশমন (দাজ্জাল) যখন তাঁকে দেখবে, তখন সে এমনভাবে গলে যাবে যেভাবে লবন পানিতে গলে যায়। তিনি যদি তাকে (ওভাবেই) ছেড়ে দিতেন, তাহলে (সে গলতে গলতে) একসময় (পুরাপুরি) ধ্বংস হয়ে যেতো। কিন্তু আল্লাহ  ঈসা আ.-এর হাত দ্বারা তাকে হত্যা করবেন। তাই (শেষ পর্যন্ত ) ঈসা আ.-এর বর্শার মধ্যে তার রক্ত তারা দেখতে পাবে। [সহিহ মুসলীম ২৮৯৭]

ফায়দা: এই হাদিসে ‘মদিনা’ বলতে মদিনা মুনাওয়ারাও  হতে পারে, আবার অনেকের মতে সিরিয়ার দামেশক শহরও উদ্দেশ্য হতে পারে।

এখানে রোম’রা যাদের সাথে যুদ্ধ করবে মর্মে এই হাদিসে ইংগিত রয়েছে তাঁরা হলে ইমাম মাহদী রা. ও তাঁর মুমিন মুজাহিদগণ। নবী করিম ﷺ এখানে ‘রোম’ বলতে তাঁর সময়কার যে সকল খৃষ্টান ধর্মাবলম্বী পরাশক্তিরা ‘রোম/বনু আসফার’ বলে পরিচিত ছিল, তাদের উত্তরসূরীদের মধ্যে যারা ইমাম মাহদী রা.-এর বিরুদ্ধে যুদ্ধে লিপ্ত হবে তাদেরকে বোঝানো হয়েছে।

হযরত আবু হুরায়রাহ রা. থেকে বর্ণিত,  রাসুলুল্লাহ ﷺ এরশাদ করেন-أخبرنا الحسن بن أبي بكر قال أخبرنا أحمد بن محمد بن عبد الله القطان قال حدثنامحمد بن غالب بن حرب قال وذكر أحمد بن حاتم عن إبراهيم بن يزيد البصري عن ابن عونعن ابن سيرين عن أبي هريرة رضي الله عنه قال قال رسول الله صلى الله عليه وعلىوسلم : يجيش الروم على وال من عترتي، اسمه يواطئ اسمي، فيلتقون بمكان يقال له: العماق، فيقتتلون، فيقتل من المسلمين الثلث أو نحو ذلك، ثم يقتتلون يومًا آخر، فيقتل من المسلمين نحو ذلك، ثم يقتتلون اليوم الثالث، فيكون على الروم، فلا يزالون حتى يفتحوا القسطنطينية، فبينما هم يقتسمون فيها بالأترسة؛ إذ أتاهم صارخ أن الدجال قد خلفكم في ذراريكم. . رواه الخطيب في “المتفق والمفترق في ترجمة إبراهيم: ٦٨, هذا حديث رجاله ثقات إلا إبراهيم بن يزيد هوالبصري الواسطي وقد فرق الخطيب بينه وبين الشامي، وقد ترجمه الخطيب ولم يذكره بجرحولا تعديل وقد روا عنه اثنان، وأما ابن حجر فقال بأنه نفسه، وهو مختلف في توثيقه، والحسنبن أبي بكر هو مسند العراق أحمد بن إبراهيم بن الحسن بن محمد بن شاذان البزازالثقة ، والبقية معروفون، وللحديث شواهد أخرى ; و ذكره السيوطي فى الحاوي: ٢/١٣٨ ; و حمود بن عبد الله بن حمود بن عبد الرحمن التويجري فى إتحاف الجماعة بما جاء في الفتن والملاحم وأشراط الساعة: ١/٣٩٧ – ‘(শেষ জামানায়) রোম’রা আমার পরিবারভুক্ত এক উত্তরসূরী’র বিপক্ষে সৈন্যবাহিনী পাঠাবে, তার নাম হবে আমার নামে নাম। পরে তারা ‘আ’মাক’ নামক একটি জায়গায় অবতরণ করে (তার মুজাহিদ বাহিনীর সাথে) যুদ্ধ করবে। এতে মুসলমানদের এক তৃতীয়াংশ বা ওই পরিমান (মুজাহিদ) ইন্তেকাল করবে। পরের দিন আবারও তারা (মুসলমানদের সাথে) যুদ্ধ করবে। এতেও মুসলমানদের ওই পরিমান (মুজাহিদ) ইন্তেকাল করবে। এরপর (আবারো) তারা তৃতীয় দিন যুদ্ধ করবে। এবারে তারা (তথা মুজাহিদগণ) রোম’দের উপর (চড়াও হবে ও বিজয় লাভ করবে)। তারপর তারা কুস্তুনতুনিয়া (কনস্টেন্টিনোপোল তথা তুরষ্কের ইস্তাম্বুল) জয় না করা পর্যন্ত অদম্য হয়ে থাকবে। এরপর তারা নিজেদের মাঝে (গণীমতের সম্পদ) বন্টন করবে যার মধ্যে বিভিন্ন কচ্ছপও থাকবে। এমন সময় তারা আওয়াজ শুনতে পাবে যে ‘দাজ্জাল তোমাদের পরিবার পরিজনের পিছনে পড়েছে’। [আল-মুত্তাফিক, খতীব: ৬৮; আল-হাবী, ইমাম সুয়ূতী- ২/১৩৮] الله اعلم بالصواب

# আবু হুরায়রাহ রা. থেকে সহিহ সনদে বর্ণিত হয়েছে, রাসুলুল্লাহ ﷺ এরশাদ করেন-  كَيْفَ أَنْتُمْ إِذَا نَزَلَ ابْنُ مَرْيَمَ فِيكُمْ وَإِمَامُكُمْ مِنْكُمْ . رواه بخاري في الصحيح, كتاب الأنبياء, باب نزول عيسى بن مريم عليهما السلام : رقم ٣٤٤٩; و مسلم في الصحيح: رقم ١٥٥ – ‘তখন তোমাদের কেমন (আনন্দঘন মুহূর্ত) হবে, যখন (ঈসা) ইবনে মারইয়াম (দ্বিতীয় আসমান থেকে দুইজন ফেরেশতার কাঁধে ভর দিয়ে) তোমাদের (মুসলমানদের) মাঝে অবতরন করবেন, আর তোমাদের ইমাম হবে তোমাদের (মুসলমানদের) মধ্য থেকেই’। [সহিহ বুখারী, হাদিস ৩৪৪৯; সহিহ মুসলীম, হাদিস ১৫৫]

ফায়দা: মুসলমানদের ইমাম (আমীর) বলতে এখানে ইমাম মাহদী রা. উদ্দেশ্য, ইনশাআল্লাহ। নিম্নের হাদিসটিও এর সমর্থন করে। الله اعلم بالصواب

# যাবের বিন আব্দুল্লাহ রা.-এর সূত্রে বর্ণিত হয়েছে, রাসুলুল্লাহ সা. এরশাদ করেন-  لاَ تَزَالُ طَائِفَةٌ مِنْ أُمَّتِي يُقَاتِلُونَ عَلَى الْحَقِّ ظَاهِرِينَ إِلَى يَوْمِ الْقِيَامَةِ ، قَالَ فَيَنْزِلُ عِيسَى ابْنُ مَرْيَمَ صلى الله عليه وسلم فَيَقُولُ أَمِيرُهُمْ تَعَالَ صَلِّ لَنَا ‏.‏ فَيَقُولُ لاَ ‏،‏ إِنَّ بَعْضَكُمْ عَلَى بَعْضٍ أُمَرَاءُ ‏.‏ تَكْرِمَةَ اللَّهِ هَذِهِ الأُمَّةَ ‏.‏ رواه مسلم في الصحيح, كتاب الإيمان , باب نُزُولِ عِيسَى ابْنِ مَرْيَمَ حَاكِمًا بِشَرِيعَةِ نَبِيِّنَا مُحَمَّدٍ صلى الله عليه وسلم : ١/١٣٧ رقم ١٥٦ ; و أحمد في مسنده : ٣/٣٨٤ اسناده صحيح – “আমার উম্মতের একটি গোষ্ঠি কেয়ামত পর্যন্ত সর্বদা সত্যের উপর বিরাজমান (থেকে) জিহাদ করতে থাকবে’। তিনি বলেন: ‘পরে (শেষ জামানার মুসলমানদের) মাঝে ঈসা ইবনে মারইয়াম (আসমান থেকে পূণরায়) নাজিল হবেন। পরে তাদের আমীর (আল-মাহদী তাঁকে) বলবেন: ‘(হে ঈসা ইবনে মারইয়াম আ. !) আসুন, (ইমাম হয়ে) আমাদেরকে নামায পড়ান’। তখন তিনি বলবেন: ‘না, নিশ্চই তোমাদের (মুসলমানদেরই) কেউ তোমাদের কতকের উপর আমীর হবে। (এটা) এই উম্মাহকে আল্লাহ’র (দেয়া বিশেষ) সম্মাননা”। [সহীহ মুসলীম- ১/১৩৭, হাদিস ১৫৬; মুসনাদে আহমদ- ৩/৩৮৪] 

ফায়দা: এখানে মুসলমানদের ‘আমীর’ (খলিফা/ইমাম) বলতে ইমাম মাহদী রা. উদ্দেশ্য। যেমন, উপরে উদ্ধৃত হরে এসেছি যে, ইমাম হারিছ বিন আবি উসামা রহ. তাঁর ‘মুসনাদ’-এ যাবির রা. থেকে উত্তম সনদে বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ ﷺ এরশাদ করেন: ينزل عيسى بن مريم ، فيقول أميرهم المهدي : تعال صل بنا ، فيقول : لا إن بعضهم أمير بعض ، تكرمة الله لهذه الأمة . أخرجه الحارث بن أبي أسامة في مسنده و قال ابن القيم في المنار المنيف في الصحيح و الضعيف: ص ١٤٧ : و هذا إسناد جيد; و أقره الشيخ العباد في رسالته في ” المهدي ” المنشورة في العدد الأول من السنة الثانية عشرة من مجلة ” الجامعة الإسلامية: ص ٣٠٤; و صححه الألباني في ” السلسلة الصحيحة: رقم ٢٢٣٦ – ‘ঈসা ইবনে মারইয়াম আ. অবতরন করবেন। তখন তাদের আমীর আল-মাহদী (তাঁকে) বলবেন: (হে ঈসা ইবনে মারইয়াম আ. !) আসুন, (ইমাম হয়ে) আমাদেরকে নামায পড়ান। তখন তিনি বলবেন: না, নিশ্চই তাদেরই কেউ তাদের কতকের উপর আমীর হবে। এটা এই উম্মাতের জন্য আল্লাহর (দেয়া) সম্মান’। [মুসনাদে হারেছ: সহিহাহ, আলবানী-৫/২৭৬ হাদিস ২২৩৬] الله اعلم بالصواب

 

 

মহানবী -এর আরো ভবিষ্যতবাণী জানতে নিম্নের পেজগুলোতে ক্লিক করুন


কেয়ামতের আলামত ও লক্ষন সমূহ (১ম সিরিজ)- [পৃষ্ঠা ১] , [পৃষ্ঠা ২] , [পৃষ্ঠা ৩] , [পৃষ্ঠা ৪] , [পৃষ্ঠা ৫] , [পৃষ্ঠা ৬] , [পৃষ্ঠা ৭[পৃষ্ঠা ৮] , [পৃষ্ঠা ৯] , [পৃষ্ঠা ১০


কেয়ামতের আলামত ও লক্ষন সমূহ (২য় সিরিজ)- [পৃষ্ঠা ১] , [পৃষ্ঠা ২] , [পৃষ্ঠা ৩] , [পৃষ্ঠা ৪] , [পৃষ্ঠা ৫] , [পৃষ্ঠা ৬] , [পৃষ্ঠা ৭[পৃষ্ঠা ৮] , [পৃষ্ঠা ৯] , [পৃষ্ঠা ১০] , [পৃষ্ঠা ১১] , [পৃষ্ঠা ১২] , [পৃষ্ঠা ১৩] , [পৃষ্ঠা ১৪] , [পৃষ্ঠা ১৫]