ইসলামে মানুষ হত্যা’র শাস্তি ও ভয়াবহতা : কুরআনের আয়াত ও হাদিস সমূহ
بِسْمِ اللہِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِیۡمِ
الحمد لله و الصلاة و السلام على رسوله محمد و على أله و أمّته
[উল্লেখ্য, এখানে উল্লেখিত আয়াতে কারিমা এবং হাদিস সমূহের ইবারত ও অনুবাদ গুলোকে কোনো বিজ্ঞ মুহাক্কেক আলেমের পরামর্শ ব্যাতীত কারো কাছে বর্ণনা করা থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দিচ্ছি, যাতে আমার অযোগ্যতার কারণে এখানে কোনো উল্লেখযোগ্য ভুল হয়ে থাকলে তা সংশোধন করে নেয়ার আগেই মানব সমাজে ছড়িয়ে না যায়। এগুলো পড়ুন ইলম অর্জনের জন্য এবং যোগ্য আলেম থেকে তা বুঝিয়ে নিন। আর কোনো যোগ্য চোখে উল্লেখযোগ্য ভুল ধরা পড়লে তা আমাকে অবগত করুন।]
আল্লাহ তাআলা এরশাদ করেন-
وَاتْلُ عَلَيْهِمْ نَبَأَ ابْنَيْ آدَمَ بِالْحَقِّ إِذْ قَرَّبَا قُرْبَانًا فَتُقُبِّلَ مِنْ أَحَدِهِمَا وَلَمْ يُتَقَبَّلْ مِنَ الْآخَرِ قَالَ لَأَقْتُلَنَّكَ ۖ قَالَ إِنَّمَا يَتَقَبَّلُ اللَّهُ مِنَ الْمُتَّقِينَ – لَئِن بَسَطتَ إِلَيَّ يَدَكَ لِتَقْتُلَنِي مَا أَنَا بِبَاسِطٍ يَدِيَ إِلَيْكَ لِأَقْتُلَكَ ۖ إِنِّي أَخَافُ اللَّهَ رَبَّ الْعَالَمِينَ – إِنِّي أُرِيدُ أَن تَبُوءَ بِإِثْمِي وَإِثْمِكَ فَتَكُونَ مِنْ أَصْحَابِ النَّارِ ۚ وَذَٰلِكَ جَزَاءُ الظَّالِمِينَ – فَطَوَّعَتْ لَهُ نَفْسُهُ قَتْلَ أَخِيهِ فَقَتَلَهُ فَأَصْبَحَ مِنَ الْخَاسِرِينَ
“ আর (হে নবী, মুহাম্মাদ!) তুমি তাদের কাছে আদমের দু’পুত্রের ঘটনাটি সত্য সহকারে জানিয়ে দাও। তারা দুজন যখন (তাদের নিজ নিজ কৃত) কুরবাণীকে (আল্লাহ’র সমিপে) পেশ করলো, তখন তাদের দু’জনের মধ্য থেকে একজনেরটা কবুল করা হল, আর অপর জনের থেকে কবুল করা হল না। (যার কুরবাণী কবুল হল না) সে (অপরজনকে) বললো: ‘আমি তোমাকে অবশ্যই কতল করবো’। (যার কুরবাণী কবুল হয়েছিল) সে বললো: ‘আল্লাহ শুধু মুত্তাকীদের থেকে (কুরবাণী) কবুল করে থাকেন। তুমি যদি আমাকে কতল করার জন্য তোমার হাতকে আমার দিকে সম্প্রসারিত করই (সেটা তোমার বিষয়। কিন্তু) আমি তোমাকে কতল করার জন্য আমার হাতকে তোমার দিকে সম্প্রসারকারী হবো না। আল্লাহ রাব্বুল আলামিনকে আমি ভয় করি। আমি চাই, তুমি অামার পাপ এবং তোমার পাপ (উভয়টাই একাই) বহন করো, তারপর দোযখবাসী হয়ে যাও। আর জালেমদের এটাই প্রতিফল। (কিন্তু) পরে তার নফস (কৃপ্রবৃত্তি) তাকে তার (নিজ) ভাইকে কতল করার জন্য উষ্কে দিলো। ফলে সে তাকে কতল করে ফেললো। ফলত: সে ক্ষতিগ্রস্থদের মধ্যে শামিল হয়ে গেল”। [সূরা আল-মায়েদাহ ২৭-৩০]
مِنْ أَجْلِ ذَٰلِكَ كَتَبْنَا عَلَىٰ بَنِي إِسْرَائِيلَ أَنَّهُ مَن قَتَلَ نَفْسًا بِغَيْرِ نَفْسٍ أَوْ فَسَادٍ فِي الْأَرْضِ فَكَأَنَّمَا قَتَلَ النَّاسَ جَمِيعًا وَمَنْ أَحْيَاهَا فَكَأَنَّمَا أَحْيَا النَّاسَ جَمِيعًا ۚ وَلَقَدْ جَاءَتْهُمْ رُسُلُنَا بِالْبَيِّنَاتِ ثُمَّ إِنَّ كَثِيرًا مِّنْهُم بَعْدَ ذَٰلِكَ فِي الْأَرْضِ لَمُسْرِفُونَ – إِنَّمَا جَزَاءُ الَّذِينَ يُحَارِبُونَ اللَّهَ وَرَسُولَهُ وَيَسْعَوْنَ فِي الْأَرْضِ فَسَادًا أَن يُقَتَّلُوا أَوْ يُصَلَّبُوا أَوْ تُقَطَّعَ أَيْدِيهِمْ وَأَرْجُلُهُم مِّنْ خِلَافٍ أَوْ يُنفَوْا مِنَ الْأَرْضِ ۚ ذَٰلِكَ لَهُمْ خِزْيٌ فِي الدُّنْيَا ۖ وَلَهُمْ فِي الْآخِرَةِ عَذَابٌ عَظِيمٌ – إِلَّا الَّذِينَ تَابُوا مِن قَبْلِ أَن تَقْدِرُوا عَلَيْهِمْ ۖ فَاعْلَمُوا أَنَّ اللَّهَ غَفُورٌ رَّحِيمٌ
‘এ কারণেই আমরা বনী-ইসরাঈলের প্রতি (এই বিধান) লিখে দিয়েছিলাম যে, যে ব্যাক্তি -(কোনো খুনী) মানুষ(-এর হত্যার শরয়ী শাস্তি কায়েম করনার্থে) ব্যাতীত (স্বেচ্ছায় কোনো) মানুষকে হত্যা করলো কিংবা জমিনে ফ্যাসাদ সৃষ্টি(র শরয়ী শাস্তি কায়েম করনার্থে) ব্যাতীত (অন্য কোনো কারণে হত্যা করলো), সে যেন সকল মানুষকেই হত্যা করলো। আর যে ব্যাক্তি কাউকে বাঁচালো, সে যেন সকল মানুষকে বাঁচালো। (কিন্তু এদের অবস্থা এই যে,) আমাদের রাসুলগণ তাদের কাছে (আমাদের পক্ষ থেকে) সুস্পষ্ট প্রমাণ সহকারে এসেছিল, তারপরও তাদের বহু লোকজন জমিনে ফ্যাসাদ সৃষ্টি করেই ছেড়েছে। নিশ্চই যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের সাথে যুদ্ধ করে এবং জমিনে ফ্যাসাদ সৃষ্টি করতে সচেষ্ট হয়, পৃথিবীতে তাদের শাস্তি হল, তাদেরকে শুলে চড়ানো হবে, অথবা তাদের হাতগুলো ও পাগুলো বিপরীত দিক থেকে কেটে দেয়া হবে, কিংবা তাদেরকে দেশ থেকে নির্বাসন করা হবে। এটা তাদের জন্য দুনিয়াতে (এক প্রকারের) লাঞ্চনা। আর আখেরাতে তাদের জন্য রয়েছে বিরাট আযাব। তবে তাদের বিষয়টি ভিন্ন, যারা তওবা করে নেয় -তোমরা তাদের উপরে আধিপত্য স্থাপন করার পূর্বেই, সেক্ষেত্রে তোমারা জেনো রাখো, আল্লাহ হলেন গাফুরুর রাহিম”। [সূরা আল-মায়েদাহ ৩২-৩৪]
إِنَّ الَّذِينَ يَكْفُرُونَ بِآيَاتِ اللَّهِ وَ يَقْتُلُونَ النَّبِيِّينَ بِغَيْرِ حَقٍّ وَ يَقْتُلُونَ الَّذِينَ يَأْمُرُونَ بِالْقِسْطِ مِنَ النَّاسِ فَبَشِّرْهُمْ بِعَذَابٍ أَلِيمٍ
“নিশ্চই যারা আল্লাহ’র আয়াত সমূহের ব্যাপারে কুফরী করে এবং না-হক্ব (অন্যায়) ভাবে (তাদের কাছে প্রেরিত) নবীগণকে হত্যা করে এবং মানুষের মধ্য হতে যারা (আল্লাহ’র শরীয়তকে) ইনসাফের সাথে (মেনে চলার) নির্দেশ দেয় তাদেরকে (যারা) হত্যা করে, তাদের (সকল)কে সুকঠিন আযাবের সুসংবাদ দান করুন”। [সুরা আল-ইমরান ২১]
আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা.-এর সূত্রে বর্ণিত হয়েছে, রাসুলুল্লাহ ﷺ এরশাদ করেছেন– أَشَدُّ النَّاسِ عَذَابًا يَوْمَ الْقِيَامَةِ رَجُلٌ قَتَلَ نَبِيًّا أَوْ قَتَلَهُ نَبِيٌّ وَ إِمَامُ ضَلَالَةٍ وَ مُمَثِّلٌ مِنَ الْمُمَثِّلِينَ . رواه أحمد في مسنده: ١/٤٠٧، و قال احمد شاكر في تحقيقه علي المسند: ٤/٦٥ رقم ٣٨٦٨ : إسناده صحيح، و رواه الطحاوي في شرح مشكل الآثار: ١/١٠ رقم ٦ و قال شعيب الأرناؤوط: اسناده حسن، و قاله في الأحاديث القدسية , كتاب التصاوير : ص ٢٧٦ : و قد اخرج احمد و غيره باسناده جيد، و قال الوداعي في الجامع الصحيح مما ليس في الصحيحين : ٥/٧٥ رقم ٨٣٥ : هذا حديث حسن، و حسنه الألباني في صحيح الترغيب : رقم ٢١٨٥ و صححه في السلسلة الصحيحة: رقم ٢٨١ – “কেয়ামতের দিন মানুষের মধ্যে সর্বাধিক কঠিন আযাব ভোগ করবে- (যে) ব্যাক্তি কোনো নবীকে হত্যা করেছে অথবা কোনো নবী তাকে হত্যা করেছে, পথভ্রষ্ঠ রাষ্ট্রপ্রধান, এবং মুমাছ্ছীল (জীবের তিমছাল/প্রতিকৃতি/মূর্তি/অবয়ব/চিত্র তৈরীকারী)দের মধ্যে কোনো মুমাছ্ছীল”। [মুসনাদে আহমদ– ১/৪০৭; শারহু মুশকিলিল আছার, ইমাম তাহাবী– ১/১০ হাদিস ৬; মুসনাদে বাযযার, হাদিস ১৬০৩; আল-মু’জামুল কাবীর, ইমাম ত্বাবরাণী- ১০/২১৬ হাদিস ১০৫১৫]
وَ الَّذِينَ لَا يَدْعُونَ مَعَ اللَّهِ إِلَٰهًا آخَرَ وَلَا يَقْتُلُونَ النَّفْسَ الَّتِي حَرَّمَ اللَّهُ إِلَّا بِالْحَقِّ وَلَا يَزْنُونَ ۚ وَمَن يَفْعَلْ ذَٰلِكَ يَلْقَ أَثَامًا – يُضَاعَفْ لَهُ الْعَذَابُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ وَيَخْلُدْ فِيهِ مُهَانًا – إِلَّا مَن تَابَ وَآمَنَ وَعَمِلَ عَمَلًا صَالِحًا فَأُولَٰئِكَ يُبَدِّلُ اللَّهُ سَيِّئَاتِهِمْ حَسَنَاتٍ ۗ وَكَانَ اللَّهُ غَفُورًا رَّحِيمًا – وَمَن تَابَ وَعَمِلَ صَالِحًا فَإِنَّهُ يَتُوبُ إِلَى اللَّهِ مَتَابًا
“আর যারা আল্লাহ’র সাথে অপর কাউকে ইলাহ (উপাস্য) হিসেবে ডাকে না এবং আল্লাহ হারাম করেছেন -এমন কাউকে হক্ব সহকারে ব্যাতীত হত্যা করে না এবং জেনা-ব্যাভিচার করে না। আর যে তা করবে, সে গুনাহ অর্জন করবে। কেয়ামতের দিন তার জন্য আযাবকে দ্বিগুণ করা হবে এবং সে তাতে হীন-লাঞ্চিত অবস্থায় স্থায়ী ভাবে থাকবে। ব্যাতীক্রম সে, যে তওবা করে, ইমান আনে এবং নেক আমল করে। বস্তুত: ওরাই তারা যাদের গোনাহগুলিকে আল্লাহ নেকিতে বদলিয়ে দিবেন। আর আল্লাহ হলেন ক্ষমাশীল দয়ালু। আর যে তওবা করে এবং নেক আমল করে বস্তুত: সে আল্লাহ দিকে ফিরে আসে অনুতপ্ত হয়ে”। [সূরা ফুরক্বান ৬৯]
وَمَن يَقْتُلْ مُؤْمِنًا مُّتَعَمِّدًا فَجَزَاؤُهُ جَهَنَّمُ خَالِدًا فِيهَا وَغَضِبَ اللَّهُ عَلَيْهِ وَلَعَنَهُ وَأَعَدَّ لَهُ عَذَابًا عَظِيمًا
“আর যে ব্যাক্তি কোনো মুমিনকে ইচ্ছকৃত ভাবে হত্যা করে, তার প্রতিদান হল জাহান্নাম, সেখানে সে চিরকাল থাকবে। আল্লাহ তার উপরে ক্রধাহ্নিত হয়েছেন এবং তাকে তিনি করেছেন অভিশম্পাত। আর তার জন্য তিনি প্রস্তুত করে রেখেছেন বিরাট এক আযাব”। [সূরা নিসা ৯৩]
# আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ ﷺ এরশাদ করেন- أَوَّلُ مَا يُقْضَى بَيْنَ النَّاسِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ فِي الدِّمَاءِ . رواه مسلم , رقم ١٦٧٨ ; و النسائى : ٧/٨٣ ; و ابن ماجه : ٢٦١٥ – ‘কেয়ামতের দিন মানুষের মাঝে সর্বপ্রথমে যে জিনিসের বিচার করা হবে সেটা হবে রক্ত (খুন) সম্পর্কে’। [সহিহ মুসলীম, হাদিস ১৬৮০; সহিহ ইবনে হিব্বান, হাদিস ৭৩৪৪; সুনানে নাসায়ী, হাদিস ৭/৮৩; সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস ২৬১৫; আল-মুসান্নাফ, ইবনু আবি শায়বাহ, হাদিস ১৮৪০৫; মুসনাদে আবু ইয়া’লা, হাদিস ৫২১৫; মুসনাদে আহমদ, হাদিস ৪২০১]
# আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. রা. থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ ﷺ এরশাদ করেন- يجيءُ المقتولُ بالقاتلِ يومَ القيامةِ ناصيتُهُ ورأسُهُ بيدِهِ وأوداجُهُ تشخَبُ دمًا يقولُ يا ربِّ هذا قتلَني حتَّى يُدنيَهُ منَ العرشِ قالَ فذَكروا لابنِ عبَّاسٍ التَّوبةَ فتلا هذِهِ الآيةَ وَمَنْ يَقْتُلْ مُؤْمِنًا مُتَعَمِّدًا فَجَزَاؤُهُ جَهَنَّمُ قالَ ما نُسخَت هذِهِ الآيةُ ولا بُدِّلت وأنَّى لَهُ التَّوبةُ . رواه الترمذي: رقم ٣٠٢٩ , و صححه ابن حجر في موافقة الخبر : ٢/٣٣٤ و الألباني في صحيح سنن الترمذي : ٣/٤٠ و في السلسلة الصحيحة : رقم ٢٦٩٧ ; أخرجه ايضا النسائى في سننه : ٤٠٠٥ ; و ابن ماجه في سننه : رقم ٢٦٢١ و غيرهم – “নিহত ব্যাক্তি কেয়ামতের দিন (তার) হত্যাকারীকে (আল্লাহ তাআলার আদালতে) নিয়ে আসবে; (তখন) তার (নিজের) মাথার অগ্রভাগ (তার গলা থেকে বিচ্ছিন্ন অবস্থায় তার এক) হাতে (ধৃত) থাকবে এবং তার গলার শিরাগুলি থেকে রক্ত পড়তে থাকবে। তখন সে বলবে: ‘হে প্রভু ! একে জিজ্ঞেস করুন, কেনো সে আমাকে হত্যা করেছিল, (আমি আজ তার বিচার চাই)’? এমন কি সে তাকে (আল্লাহ’র) আরশের সন্নিকটে নিয়ে যাবে”। রাবী বলেন, (ইবনে আব্বাসের কাছে উপস্থিত) লোকজন তার তওবা (কবুল হওয়ার কোনো আশা আছে কিনা, সে) সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে তিনি এই আয়াতটি তেলাওয়াত করলেন – وَمَن يَقْتُلْ مُؤْمِنًا مُّتَعَمِّدًا فَجَزَاؤُهُ جَهَنَّمُ – ‘আর যে ব্যাক্তি কোনো মুমিনকে ইচ্ছকৃত ভাবে হত্যা করে, তার প্রতিদান হল জাহান্নাম…..’ (আয়াতটি তেলাওয়াত করার পর) তিনি বললেন: এই আয়াতটি (তাওবা সংশ্লিষ্ট অন্য কোনো আয়াত দ্বারা) মানসুখ/রহিত হয়নি, আর না (তাতে উল্লেখীত হুকুমটি) পরিবর্তীত হয়ে গেছে। (সুতরাং,) তার জন্য তওবা কোথায় রইলো’! [সুনানে তিরমিযী, হাদিস ৩০২৯; সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস ২৬২১; সুনানে নাসায়ী, হাদিস ৪০০৫; আল-মু’জামুল কাবির, ত্বাবরাণী, হাদিস ১০৭৪২, ১২৫৯৭; মুসনাদে আহমদ, হাদিস ২৬৭৮, ২১৪৩, ৩৪৩৫; মুসনাদে হুমাইদী, হাদিস ৪৯৪; মুসনাদে আব্দ বিন হুমায়েদ, হাদিস ৬৮০; আদ-দিয়াত, ইবনু আবি আসেম, হাদিস ৪১; জামেউল বয়ান, ইমাম তাবারী – ৭/৩৪৪]
ফায়দা: সেই ব্যাক্তি চিরকাল জাহান্নামে থাকবে, যে কোনো মুমিন-মুসলমানকে হত্যা করাকে হালাল মনে করে। [জামেউল বয়ান, ইমাম তাবারী- ৯/৬১] আল্লাহ তাআলা ইসলামী শরীয়তে যা কিছু হারাম করেছেন, তা যে ব্যাক্তি জানা সত্ত্বেও ‘হালাল’ বলে বিশ্বাস করে, সে সর্বসম্মতিক্রমে কাফের/মুরতাদ, আর কাফের অবস্থায় মৃত্যু হওয়া ব্যাক্তি কোনো দিন জান্নাতে যাবে না।
# আবু দারদাহ রা. রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন- سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ : كُلُّ ذَنْبٍ عَسَى اللَّهُ أَنْ يَغْفِرَهُ إِلاَّ مَنْ مَاتَ مُشْرِكًا أَوْ مُؤْمِنٌ قَتَلَ مُؤْمِنًا مُتَعَمِّدًا . رواه أبو داود , كتاب الفتن والملاحم : ٢/٣٠٧ رقم ٤٢٧٠ ; صححه الألباني في صحيح أبي داود و في صحيح الجامع : ٧٦٩٣ – ‘আমি রাসুলুল্লাহ ﷺ-কে এরশাদ করতে শুনেছি- ‘ যে ব্যাক্তি মুশরেক অবস্থায় মাড়া গেছে কিংবা যে মুমিন আরেক মুমিনকে সেবচ্ছায় ((না-হক্ব ভাবে)) হত্যা করেছে -সে ছাড়া প্রত্যেক গোনাহ সম্পর্কে আশা করা যায় যে, আল্লাহ তাকে ক্ষমা করে দিবেন’। [সুনানে আবু দাউদ- ২/৩০৭ হাদিস ৪২৭০]
# আব্দুল্লাহ বিন আমর বিন আস রা. থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ ﷺ এরশাদ করেন- والَّذي نفسي بيدِهِ لقَتلُ مؤمنٍ أعظمُ عندَ اللَّهِ من زوالِ الدُّنيا . أخرجه النسائي : ٣٩٨٦ و صححه الألباني في صحيح سنن النسائي ، وابن أبي حاتم في العلل : ٦/٣٠١ ، والطبراني : ١٣/٤١٦ رقم ١٤٢٥٦ ; – ‘ওই সত্ত্বার শপথ যাঁর হাতে আমার জীবন, অবশ্যই আল্লাহ’র কাছে (গোটা) পৃথিবী ধ্বংস হওয়ার চাইতে (একজন) মুমিনকে (না-হক্ব ভাবে) হত্যা করা অধিক মারাত্মক (অপরাধ ও পাপ)’। [সুনানে নাসায়ী, হাদিস ৩৯৮৬; আল-ইলাল, ইমাম ইবনু আবি হাতিম- ৬/৩০১; ত্বাবরাণী- ১৩/৪১৬ হাদিস ১৪২৫৬]
# আবু হুরায়রাহ রা. এবং আবু সাঈদ খুদরী রা. থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ ﷺ এরশাদ করেন- لَوْ أَنَّ أَهْلَ السَّمَاءِ وَأَهْلَ الْأَرْضِ اشْتَرَكُوا فِي دَمِ مُؤْمِنٍ لَأَكَبَّهُمْ اللَّهُ فِي النَّارِ. رواه الترمذي : رقم ١٣٩٨ ، وصححه الألباني في صحيح الترمذي – ‘যদি আসমানবাসী ও জমিনবাসী (সকলে মিলে না-হক্ব ভাবে কোনো) মুমিনের হত্যায় শরিক হয়, (তাহলে) আল্লাহ অবশ্যই তাদের(সকল)কে দোযখে নিক্ষেপ করবেন’। [সুনানে তিরমিযী, হাদিস ১৩৯৮]
# আবু হুরায়রাহ রা. থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ ﷺ এরশাদ করেন- لاَ تَحَاسَدُوا وَلاَ تَنَاجَشُوا وَلاَ تَبَاغَضُوا وَلاَ تَدَابَرُوا وَلاَ يَبِعْ بَعْضُكُمْ عَلَى بَيْعِ بَعْضٍ وَكُونُوا عِبَادَ اللَّهِ إِخْوَانًا . الْمُسْلِمُ أَخُو الْمُسْلِمِ لاَ يَظْلِمُهُ وَلاَ يَخْذُلُهُ وَلاَ يَحْقِرُهُ . التَّقْوَى هَا هُنَا ” . وَيُشِيرُ إِلَى صَدْرِهِ ثَلاَثَ مَرَّاتٍ ” بِحَسْبِ امْرِئٍ مِنَ الشَّرِّ أَنْ يَحْقِرَ أَخَاهُ الْمُسْلِمَ كُلُّ الْمُسْلِمِ عَلَى الْمُسْلِمِ حَرَامٌ دَمُهُ وَمَالُهُ وَعِرْضُهُ . رواه مسلم في صحيحه , كتاب البر والصلة والآداب : رقم ٢٥٦٤ – ‘তোমরা (মুমিন মুসলমানরা) পরষ্পরে হিংসা করো না, পরষ্পরকে ধোকা দিওনা, পরষ্পরে বিদ্বেষ রেখো না, পরষ্পরের দোষের পিছনে লেগে থেকো না, তোমাদের কেউ অন্যের ক্রয়বিক্রয়ের উপরে ক্রয়বিক্রয় করতে যেও না, বরং তোমরা (সকল মুসলমান জামাআতবদ্ধ) ভ্রাত্রিত্ববন্ধনে আল্লাহ’র বান্দা হয়ে থাকো। (একজন) মুসলীম অপর মুসলীমের (দ্বীনী) ভাই। সে তার সাথে জুলুম (অন্যায় অবিচার) করবে না, তাকে অপদস্থ করবে না, তাকে হেয়/তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করবে না। পরহেজগারী এখানে -একথা বলে তিনি তিনবার তাঁর বক্ষের দিকে ইশারা করলেন। (আরো বললেন:) কারো মন্দ হওয়ার জন্য এটাই যথেষ্ট যে, সে তার মুসলীম ভাইকে হেয়/তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করে। প্রত্যেক মুসলীমের জন্য অপর মুসলীমের রক্ত (ঝড়ানো), মাল-সম্পদ (অন্যায়/না-হক্ব ভাবে হাতিয়ে নেয়া), মানসম্ভ্রম (নষ্ট করা) হারাম’। [সহিহ মুসলীম, হাদিস ২৫৬৪]
# আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. রা. থেকে বর্ণিত, তিনি এরশাদ করেন- نَظَرَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِلَى الْكَعْبَةِ ، فَقَالَ : مَا أَعْظَمَ حُرْمَتَكِ . وَفِي رِوَايَةِ أَبِي حَازِمٍ : ” لَمَّا نَظَرَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِلَى الْكَعْبَةِ ، قَالَ : مَرْحَبًا بِكِ مِنْ بَيْتٍ ، مَا أَعْظَمَكِ وَأَعْظَمَ حُرْمَتَكِ ، وَلَلْمُؤْمِنُ أَعْظَمُ حُرْمَةَ عِنْدَ اللَّهِ مِنْكِ ، إِنَّ اللَّهَ حَرَّمَ مِنْكِ وَاحِدَةً وَحَرَّمَ مِنَ الْمُؤْمِنِ ثَلاثًا : دَمَهُ ، وَمَالَهُ ، وَأَنْ يُظَنَّ بِهِ ظَنَّ السَّوْءِ . رواه البيهقي في شعب الإيمان , فَصْلٌ فِيمَا وَرَدَ مِنَ الأَخْبَارِ فِي التَّشْدِيدِ : ٥/٢٩٦ رقم ٦٧٠٦ , حسنه الالبانى في الصحيحة : رقم ٣٤٢٠ – ‘রাসুলুল্লাহ ﷺ (এক দিন ক্বাবা’র দিকে তাকিয়ে বললেন: তোমার হুরমত (মান-মর্যাদা) কতই না মহৎ (বিষয়)’ -আর আবু হাযেমের রেওয়ায়েতে আছে- রাসুলুল্লাহ ﷺ যখন ক্বাবা’র দিকে তাকালেন, তখন বললেন: (হে ক্বাবা) ঘর, তোমার জন্য মারহাবাহ ! তুমি কতই না মহৎ (জিনিস) এবং তোমার হুরমত (মান-মর্যাদা) কতই না মহৎ (বিষয়)! অবশ্যই আল্লাহ’র কাছে একজন মুমিনের হুরমত (মান-মর্যাদা) তোমার চাইতেও অনেক বড় (বিষয়)। নিশ্চই আল্লাহ (তাআলা তাঁর কিতাবে) তোমার থেকে একটি বিষয়কে হারাম করেছেন, কিন্তু একজন মুমিনের থেকে হারাম করেছেন তিনটি বিষয়কে: তার রক্তকে (না-হক্ব ভাবে ঝড়ানোকে), তার মাল-সম্পদকে (অন্যায়/না-হক্ব ভাবে হাতিয়ে নেয়াকে) এবং তার সম্পর্কে (শরীয়ত সম্মত কারণ ব্যাতীত) মন্দ ধারনা পোষন করাকে’। [শুয়াবুল ইমান, ইমাম বাইহাকী– ৫/২৯৬ হাদিস ৫৭০৬]
আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর রা. থেকে অন্য এক রেওয়ায়েতে বর্ণিত হয়েছে, তিনি এরশাদ করেন- رَأَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ يَطُوفُ بِالْكَعْبَةِ وَيَقُولُ مَا أَطْيَبَكِ وَأَطْيَبَ رِيحَكِ مَا أَعْظَمَكِ وَأَعْظَمَ حُرْمَتَكِ وَالَّذِي نَفْسُ مُحَمَّدٍ بِيَدِهِ لَحُرْمَةُ الْمُؤْمِنِ أَعْظَمُ عِنْدَ اللَّهِ حُرْمَةً مِنْكِ مَالِهِ وَدَمِهِ وَأَنْ نَظُنَّ بِهِ إِلاَّ خَيْرًا . رواه ابن ماجه , كِتَاب الْفِتَنِ » بَاب حُرْمَةِ دَمِ الْمُؤْمِنِ وَمَالِهِ : رقم ٧٨٥ , قال البوصيري في الزوائد ابن ماجه : ٢/٢٨٤ : اسناده فيه مقال – ‘আমি (একবার) দেখলাম, রাসুলুল্লাহ ﷺ ক্বাবা’র তাওয়াফ করছেন এবং বলছেন: তুমি কতই না পবিত্র! তোমার বাতাস কতই না পবিত্র! তুমি কতই না মহৎ (জিনিস) এবং তোমার হুরমত (মান-মর্যাদা) কতই না মহৎ (বিষয়)। ওই সত্ত্বার শপথ, যাঁর হাতে মুহাম্মাদের জীবন, অবশ্যই আল্লাহ’র কাছে একজন মুমিনের হুরমত (মান-মর্যাদা), তার মাল-সম্পদ এবং তার রক্ত তোমার চাইতেও অনেক বড় (বিষয়)। আর আমরা (যারা এক দেহরূপ মুসলীম জামাআত, তারা শরীয়ত সম্মত কারণ ব্যাতীত) তার ব্যাপারে ভাল ছাড়া (অকারণে) কোনো (মন্দ) ধারনা রাখিনা, (এটাই আমাদের মুমিনদের বৈশিষ্ট)’। [সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস ৭৮৫]
# আব্দুল্লাহ বিন আমর বিন আস রা. থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ ﷺ এরশাদ করেন- لَزَوالُ الدُّنيا أهْوَنُ علَى اللَّهِ مِن قتلِ رجلٍ مسلمٍ . أخرجه النسائي : ٧/٨٦ رقم ٣٩٨٧ و صححه الألباني في صحيح سنن النسائي , و الترمذي : ٤/١٠ رقم ١٣٩٥ و صححه الألباني في صحيح الترغيب الترهيب : رقم ٢٤٣٩، روي مرفوعاً وموقوفاً وهو أصح , قال البخاري : الصحيح عن عبد الله بن عمرو موقوف كما في العلل الكبير – ‘অবশ্যই আল্লাহ’র কাছে (কোনো) মুসলীম ব্যাক্তিকে (না-হক্ব ভাবে) হত্যা করার চাইতে (গোটা) পৃথিবীর ধ্বংস হওয়া অধিক তুচ্ছ (বিষয়)’। [সুনানে নাসায়ী -৭/৮৬ হাদিস ৩৯৮৭; সুনানে তিরমিযী- ৪/১০ হাদিস ১৩৯৫; সুনানুল কুবরা, বাইহাকী- ৮/২৩; হিলইয়াতুল আউলিয়া, আবু নুআইম- ৭/৩১৯; তারিখে বাগদাদ, ইমাম খতীব -২/৩৯১; আল-কামেল, ইবনুল আদী- ৪/৬১; মু’জামুশ শুয়ুখ, ইবনে আসাকীর- ৬৫/১৯৩]
# উবাইদুল্লাহ বিন আদী রহ. বর্ণনা করেছেন যে- أَنَّ الْمِقْدَادَ بْنَ عَمْرٍو الْكِنْدِيَّ حَلِيفَ بَنِي زُهْرَةَ حَدَّثَهُ وَكَانَ، شَهِدَ بَدْرًا مَعَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَنَّهُ قَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنْ لَقِيتُ كَافِرًا فَاقْتَتَلْنَا، فَضَرَبَ يَدِي بِالسَّيْفِ فَقَطَعَهَا، ثُمَّ لاَذَ بِشَجَرَةٍ وَقَالَ أَسْلَمْتُ لِلَّهِ. آقْتُلُهُ بَعْدَ أَنْ قَالَهَا قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ” لاَ تَقْتُلْهُ ”. قَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ فَإِنَّهُ طَرَحَ إِحْدَى يَدَىَّ، ثُمَّ قَالَ بَعْدَ مَا قَطَعَهَا، آقْتُلُهُ قَالَ : لاَ تَقْتُلْهُ، فَإِنْ قَتَلْتَهُ فَإِنَّهُ بِمَنْزِلَتِكَ قَبْلَ أَنْ تَقْتُلَهُ، وَأَنْتَ بِمَنْزِلَتِهِ قَبْلَ أَنْ يَقُولَ كَلِمَتَهُ الَّتِي قَالَ . وَقَالَ حَبِيبُ بْنُ أَبِي عَمْرَةَ عَنْ سَعِيدٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم لِلْمِقْدَادِ ” إِذَا كَانَ رَجُلٌ مُؤْمِنٌ يُخْفِي إِيمَانَهُ مَعَ قَوْمٍ كُفَّارٍ، فَأَظْهَرَ إِيمَانَهُ، فَقَتَلْتَهُ، فَكَذَلِكَ كُنْتَ أَنْتَ تُخْفِي إِيمَانَكَ بِمَكَّةَ مِنْ قَبْلُ . . رواه بخاري , كتاب الديات : رقم ٦٨٦٥ – ‘বনু যুহরা গোত্রের মিত্র মিকদাদ ইবনু আমর আল-কিনদী রা. তার কাছে বর্ণনা করেছেন যে, তিনি রাসুলুল্লাহ ﷺ-এর সাথে বদরের যুদ্ধ উপস্থিত ছিলেন। তিনি বললেন, ‘ইয়া রাসুলাল্লাহ ! (জিহাদের সময় এক) কাফের আমার মুখোমুখি হলে আমার (দুজনে পরষ্পরে) লড়াই করি। তখন সে তরবারী দিয়ে আমার (একটি) হাতে আঘাত করে তা কেটে ফেলে। এরপর সে (পালিয়ে গিয়ে) একটি গাছের আড়ালে আশ্রয় নেয় এবং বলে: ‘আমি আল্লাহ’র জন্য ইসলাম গ্রহন করলাম’। (প্রশ্ন হল,) সে ওকথা বলার পর কি আমি তাকে হত্যা করতে পারি’? রাসুলুল্লাহ ﷺ বললেন:‘(সে তার ইমান ও মুসলমানিত্ব প্রকাশ করার পর) তুমি তাকে হত্যা করতে পারো না’। মিকদাদ রা. বললেন: ‘ইয়া রাসুলাল্লাহ ! সে-তো আমার (দেহ থেকে) একটা হাতই আলাদা করে দিয়েছে, আর সে তা কাটার পরই (কথাটি) বলেছিল। (এমতাবস্থায়) আমি কি তাকে হত্যা করতে পারি’? রাসুলুল্লাহ ﷺ বললেন: ‘(সে তার ইমান ও মুসলমানিত্ব প্রকাশ করার পর) তুমি তাকে হত্যা করতে পারো না। তুমি যদি তাকে হত্যা করে থাকো, তাহলে নিশ্চই তুমি তাকে হত্যা করার পূর্বে যেখানে ছিলে, সে তোমার সেই স্থানে চলে এসেছে, আর সে উক্ত কালেমা বলার পূর্বে যে স্থানে ছিল, তুমি চলে গেছো তার স্থানে’। হাবিব ইবনু আবূ আমরা রহ. সাঈদ রহ.-এর সুত্রে ইবনু আব্বাস রা. থেকে বর্ণনা করেন যে, রাসুলুল্লাহ ﷺ মিকদাদ রা.-কে বলেছিলেন: (সেই) মুমিন ব্যাক্তিটি কাফের গোষ্ঠির সাথে থাকাবস্থায় সে তার ইমানকে গোপন করে রেখেছিল। পরে (তোমার হাত কাটার পর) সে তা প্রকাশ করে। পরে তুমি তাকে হত্যা করে ফেললে। (অথচ) এর আগে মক্কায় তুমিও (অত্যাচার বা নিহত হওয়ার ভয়ে) তোমার ইমানকে গোপন করে রেখেছিলে’। [সহিহ বুখারী, হাদিস ৬৮৬৫]
# আবু হুরায়রাহ রা. থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ ﷺ এরশাদ করেন- مَنْ أَشَارَ إِلَى أَخِيهِ بِحَدِيدَةٍ ، فَإِنَّ الْمَلَائِكَةَ تَلْعَنُهُ ، حَتَّى يَدَعَهُ وَإِنْ كَانَ أَخَاهُ لِأَبِيهِ وَأُمِّهِ . رواه مسلم في صحيحه , كتاب الْبِرِّ وَالصِّلَةِ وَالْآدَابِ , بَابُ النَّهْيِ عَنِ الْإِشَارَةِ بِالسِّلَاحِ إِلَى مُسْلِمٍ : رقم ٢٦١٦ – ‘যে (মুসলমান) তার (আরেক মুসলমান) ভাইয়ের দিকে কোনো হাদিদাহ (ধারালো-অস্ত্র) দিয়ে ইশারা/তাক্ করে, তখন নিশ্চই ফেরেশতারা তাকে লা’নত করতে থাকে যাবৎ না সে তা (করা) থেকে ফিরে আসে -চাই তার ভাইটি তার পিতা দিককার (ভাই) হোক বা তার মাতার দিককার’। [সহিহ মুসলীম, হাদিস ২৬১৬; সুনানে তিরমিযী- ৪/৪০৩ হাদিস ২১৬২; মুসনাদে আহমদ- ২/২০৬]
# যাবের বিন আব্দুল্লাহ রা. থেকে বর্ণিত হয়েছে, তিনি এরশাদ করেন- نَهَى رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَنْ يُتَعَاطَى السَّيْفُ مَسْلُولاً . رواه الترمذي ,كتاب الفتن عن رسول الله ﷺ , باب ما جاء في النهي عن تعاطي السيف مسلولا : رقم ٢١٦٣ , صححه الألباني في صحيح سنن الترمذي ; و أبو داود , كتاب الجهاد : رقم ٢٥٨٨ ; صححه الألباني في صحيح أبي داود – ‘(মুসলমানদেরকে) খাপমুক্ত অবস্থায় তরবারী পরষ্পরে দেয়া-নেয়া করতে রাসুলুল্লাহ ﷺ নিষেধ করেছেন, (যাতে ধারালো অস্ত্রের দ্বারা কোনো মুসলমানের ক্ষতি হয়ে না যায়)’। [সুনানে তিরমিযী, হাদিস ২১৬৩; সুনানে আবু দাউদ, হাদিস ২৫৮৮]
# আবু হুরায়রাহ রা. থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ ﷺ এরশাদ করেন- لاَ يُشِرْ أحَدُكُمْ إلَى أخِيهِ بِالسِّلاَحِ، فَإنَّهُ لاَ يَدْرِي لَعَلَّ الشَّيْطَانَ يَنْزِعُ فِي يَدِهِ، فَيَقَعَ فِي حُفْرَةٍ مِنَ النَّارِ. رواه البخاري : رقم ٧٠٧٢ ; و مسلم : رقم ٢٦١٧ – ‘তোমাদের কেউ যেন তার (কোনো মুসলমান) ভাইয়ের দিকে কোনো অস্ত্র দিয়ে ইশারা/তাক্ না করে। কারণ, সে জানে না, হয়তো শয়তান তার হাতে ধাক্কা দিয়ে (উভয়ের মাঝে কোনো ফিতনাহ ফ্যাসাদ সৃষ্টি করে) বসবে। ফলে (শেষমেস উভয়ের জন্য) দোযাখের গহবরে (পতিত হওয়ার মতো) ঘটে যাবে’। [সহিহ বুখারী, হাদিস ৭০৭২; সহিহ মুসলীম, হাদিস ২৬১৭]
ফায়দা: ইমাম ইবনুল আরাবী রহ. বলেছেন, কেউ তার ভাইয়ের দিকে অস্ত্র তাক্ করলে -চাই সত্যি সত্যিই ভয় দেখানোর জন্য তাক্ করুক বা ঠাট্টা করেই তাক্ করুক – উভয় অবস্থাতেই সে লা’নত পাওয়ার উপযুক্ত হবে। অস্ত্র তাক্ করে ঠাট্টাও করা হয় মূলত: অন্যকে ভয় দেখানোর জন্যই’। [ফাতহুল বারী, ইবনে হাজার- ১৩/২৫] এই দুই হাদিস থেকে প্রমাণিত হয়, যে কোনো মুসলমানের দিকে অস্ত্র তাক্ করে ভয় দেখানো হারাম -চাই সত্যি সত্যিই ভয় দেখাক বা ঠাট্টা করেই ভয় দেখাক। [শারহুল মুসলীম, ইমাম নববী- ১৬/১৭০] চিন্তা করে দেখুন, ইসলামে একজন মুমিন-মুসলমান ব্যাক্তির কত মর্যাদা ও সম্মান যে, তার দিকে অস্ত্র তাক্ করাটাই নাজায়েয। সেখানে একজন মুমিনকে হত্যা করা কত বড় হারাম পাপ হতে পারে!!!
# উবাদাহ বিন সামেত রা. রা. থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ ﷺ এরশাদ করেন- مَنْ قَتَلَ مُؤْمِنًا فَاعْتَبَطَ بِقَتْلِهِ لَمْ يَقْبَلِ اللَّهُ مِنْهُ صَرْفًا وَلاَ عَدْلاً . رواه أبو داود , كتاب الفتن والملاحم : ٢/٣٠٧ رقم ٤٢٧٠ ; صححه الألباني في صحيح أبي داود و في صحيح الجامع : ٧٦٩٣ ; رواه ايضا الطبراني في مسند الشاميين : ١٣١١ ; و الداني في السنن الواردة في الفتن : ٩٦ ; و البيهقي في السنن الكبرى : ٨/٢١ – ‘যে ব্যাক্তি (না-হক্ব ভাবে) কোনো মুমিনকে খুন করে তার খুনের ব্যাপারে সন্তুষ্ট থাকে (তাকে খুন করা সঠিক কাজ হয়েছে মনে করে), আল্লাহ তার থেকে নফল ও ফরয (কোনো) ইবাদতই কবুল করবেন না’। [সুনানে আবু দাউদ– ২/৩০৭ হাদিস ৪২৭০; মুসনাদে শামেয়ীন, ত্বাবরাণী, হাদিস ১৩১১; সুনানুল কুবরা, বাইহাকী- ৮/২১; আস-সুনানুল ওয়ারিদাহ, ইমাম দানী, হাদিস ৯৬]
ফায়দা: ইমাম আবু দাউদ রহ. নিজ সনদে বর্ণনা করেছেন যে, হাদিসের রাবী খালিদ বিন হিদক্বান বলেছেন, سألت يحيى بن يحيى الغساني عن قوله: اغتبط بقتله قال: الذين يقاتلون في الفتنة فيقتل أحدهم فيرى أنه على هدى لا يستغفر الله ، يعنى من ذلك – ‘আমি ইয়াহইয়া বিন ইয়াহইয়া আল-গাসানীকে (হাদিসটিতে বর্ণিত) اعْتَبَطَ بِقَتْلِهِ (তার খুনের ব্যাপারে সন্তুষ্ট থাকে) সম্পর্কে জিজ্ঞাস করলে তিনি বললেন: এরা হল তারা যারা (শরীয়তের হুকুম পালনের স্বার্থে নয়, বরং শরীয়ত পরিপন্থি বিভিন্ন পার্থিব) ফিতনায় লিপ্ত হয়ে পরষ্পরে লড়াই করে। পরে তাদের কেউ অন্য কাউকে খুন করে (মুর্খতা বসত:) ভাবে যে, সে সঠিক পথের উপরে আছে (এবং উক্ত ব্যাক্তিকে হত্যা করে সঠিক কাজটিই করেছে)। ফলে সে আল্লাহ’র কাছে (তার মুসলমান ভাইকে না-হক্ব ভাবে হত্যা করার পাপ থেকে আর) ক্ষমা চায় না’। [সুনানে আবু দাউদ- ২/৩০৭]
ইমাম খাত্তাবী রহ. এর ব্যাখ্যায় বলেছেন যে, يريد أن قتله ظلما لا عن قصاص – ‘সে (হত্যা করার সময়) চেয়েছিল যে, তাকে সে না-হক্ব/অন্যায় ভাবে হত্যা করবে; (এক্ষেত্রে শরিয়তের বিধান) কিসাস গ্রহনের স্বার্থে (তাকে হত্যা করতে) চায়নি’। [আন-নিহায়াহ ফি গারিবিল হাদিস, ইবনুল আছির- ৩/১৭২; আউনুল মা’বুদ- ১১/২৩৭]
এককথায়, ইসলামী শরীয়তে একজন মুসলমানকে যে সকল কারণে হত্যা করা হালাল এবং শরীয়ত যে ব্যাক্তিকে তাকে হত্যা করার অধিকারী করেছে, সেই অধিকারী ব্যাক্তি ব্যাতীত এবং উক্ত শরয়ী কারণগুলো ছাড়া অন্য যে মুসলমান কোনো মুসলমানকে হত্যা করবে, সে উক্ত নিহত মুসলমানকে মূলত: না-হক্ব/অন্যায় ভাবে হত্যা করলো। এরকম হত্যা ব্যাক্তিতে ব্যাক্তিতেও হতে পারে, আবার শরীয়ত পরিপন্থি যুদ্ধ ক্ষেত্রেও হতে পারে। যে মুসলমান এরকম না-হক্ব ভাবে অপর কোনো মুসলমানকে হত্যা করে তাতে সন্তুষ্ট থাকে এবং ভাবে যে, সে ঠিক কাজটাই করেছে, তার ফরয ও নফল কোনো ইবাদতই কবুল হবে না। و الله اعلم بالصواب
# আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. রা. থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ ﷺ এরশাদ করেন- من شرك في دم حرام بشطر كلمة جاء يوم القيامة مكتوب بين عينيه آيس من رحمة الله . أخرجه الطبراني في المعجم الكبير: ١١/٧٩ برقم ١١١٠٢; قال الهيثمي: ٧/٢٩٨ : “وفيه عبد الله بن خراش؛ ضعفه البخاري وجماعة، ووثقه ابن حبان وقال: ربما أخطأ، وبقية رجاله ثقات – ‘যে ব্যাক্তি একটি কথার দ্বারাও (আল্লাহ তাআলা কর্তৃক কোনো) হারামকৃত হত্যায় শরিক থাকে, সে কিয়ামতের দিন তার দুই চোখের মাঝখানে (কপালে এই কথা) লিখিত অবস্থায় আসবে: আল্লাহ’র রহমত থেকে বঞ্চিত’। [আল-মু’জামুল কাবির, ত্বাবরাণী- ১১/৭৯ হাদিস ১১১০২; মাজমাউয যাওয়ায়ীদ, হাইছামী- ৭/২৯৮; কানজুল উম্মাল- ১৫/৩১ হাদিস ৩৯৯৩৫]
ফায়দা: এই হাদিসের সমর্থন অপরাপর হাদিস দ্বারাও হয়। যেমন, আবু হুরায়রাহ রা. থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ ﷺ এরশাদ করেন- مَنْ أَعَانَ عَلَى قَتْلِ مُؤْمِنٍ بِشَطْرِ كَلِمَةٍ لَقِىَ اللَّهَ عَزَّ وَجَلَّ مَكْتُوبٌ بَيْنَ عَيْنَيْهِ آيِسٌ مِنْ رَحْمَةِ اللَّه . أخرج ابن ماجه في سننه ; كِتَاب الدِّيَاتِ , بَاب التَّغْلِيظِ فِي قَتْلِ مُسْلِمٍ ظُلْمًا : ٢/٨٧٤ رقم ٢٦٢٠ ; ذكره الألباني في “ضعيف سنن ابن ماجه” وقال : ضعيف جداًّ ; و أخرجه ايضا أبو يعلى : ١٠/٣٠٦ رقم ٥٩٠٠ ، والبيهقى : ٨/٢٢ رقم ١٥٦٤٣ ، والديلمى : ٣/٥٨٢ رقم ٥٨٢٢ ,– ‘যে ব্যাক্তি একটি কথার দ্বারাও কোনো মুমিনকে হত্যায় সাহায্য করে, সে (কিয়ামতের দিন) আল্লাহ তাআলার সাথে -তার দুই চোখের মাঝখানে (কপালে এই কথা) লিখিত অবস্থায় সাক্ষাত করবে: আল্লাহ’র রহমত থেকে বঞ্চিত’। [সুনানে ইবনে মাজাহ- ২/৮৭৪ হাদিস ২৬২০; মুসনাদে আবু ইয়া’লা- ১০/৩০৬ হাদিস ৫৯০০; বাইহাকী- ৮/২২ হাদিস ১৫৬৪৩; দাইলামী- ৩/৫৮২ হাদিস ৫৮২২; কানজুল উম্মাল- ১৫/৩১ হাদিস ৩৯৯৩৭] এমনি ভাবে আবু সাঈদ রা. থেকে বির্ণত হয়েছে- يجئ القاتل يوم القيامة مكتوب بين عينيه: آئس من رحمة الله عز وجل. اخرجه الخطيب البغدادي في تاريخ بغداد : ٩/٣٥٥ – “কেয়ামতের দিন হত্যাকারী তার দুই চোখের মাঝখানে (কপালে এই কথা) লিখিত অবস্থায় আসবে: আল্লাহ আযযা ও জাল্লা’র রহমত থেকে বঞ্চিত”। [তারিখে বাগদাদ, ইমাম খতীব বাগদাদী- ৯/৩৫৫; কানজুল উম্মাল- ১৫/৩১ হাদিস ৩৯৯৩৯]
# আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. রা. থেকে বর্ণিত, তিনি এরশাদ করেন- قُتل بِالْمَدِينَةِ قَتِيل على عهد رَسُول الله لم يُعلم من قَتله ، فَصَعدَ النَّبِي الْمِنْبَر فَقَالَ : يَا أَيهَا النَّاس يقتل قَتِيلوَأَنا فِيكُم وَلَا يعلم من قَتله لَو اجْتمع أهل السَّمَاء وَالْأَرْض على قتل امرىء لعذبهم الله إِلَّا أَن يفعل مَا يَشَاء . رواه البيهقي في شعب الإيمان : ٤/٣٤٧ رقم ٥٣٥١ , اسناده حسن كما في الجامع لشعب الإيمان : ٧/٢٦٠ رقم ٤٩٦٧ – “(একবার) রাসুলুল্লাহ ﷺ-এর জামানায় মদিনায় (এমন এক ব্যাক্তি) নিহত হল, যার নিহত হওয়ার কথা (কারোর) জানা ছিল না (যে, কে বা কারা কি কারণে তাকে হত্যা করেছে)। তখন নবী ﷺ মিম্বরে দাড়িয়ে বললেন: ‘হে লোক সকল! তোমাদের মাঝে (এক ব্যাক্তি) নিহত হল, আর কে তাকে হত্যা করেছে, তা জানা যায়নি। (শুনে রাখো) যদি কোনো ব্যাক্তির হত্যায় আসমান ও জমিনবাসী (সকলে) একজোট হয়, আল্লাহ তাদেরকে অবশ্যই আযাব দিবেন। অবশ্য তিঁনি যা চান তাই করেন”। [শুয়াবুল ইমান, ইমাম বাইহাকী- ৪/৩৪৭ হাদিস ৫৩৫১; আল-মু’জামুল কাবীর, ত্বাবরাণী- ১২/১৩৩ হাদিস ১২৬৮১; আত-তারগীব ওয়াত-তারহীব, ইমাম মুনযিরী, হাদিস ৩৭২৪; মাজমাউয যাওয়ায়ীদ, হাইছামী- ৭/২৯৭; আদ-দুররুল মানসুর, ইমাম সুয়ূতী- ৪/৬০৯]
# আব্দুল্লাহ ইবনে আমর রা. থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ ﷺ এরশাদ করেন- مَنْ قَتَلَ مُعَاهَدًا لَمْ يَرَحْ رَائِحَةَ الْجَنَّةِ، وَإِنَّ رِيحَهَا تُوجَدُ مِنْ مَسِيرَةِ أَرْبَعِينَ عَامًا . رواه بخارى , كتاب الديات , باب إثم من قتل ذميا بغير جرم , رقم ٢٩١٤ و ايضا ٣١٦٦ ; و النسائى : ٨/٢٥ رقم ٤٧٤٩ ; و ابن ماجه : رقم ٢٦٨٦ ; و احمد : ٢/١٨٦ – ‘যে (মুসলমান কোনো) মুআহিদ’কে (না-হক্ব ভাবে) হত্যা করে, সে জান্নাতের ঘ্রানও আস্বাদন করতে পাবে না -যদিও সেই ঘ্রান (জান্নাতের) চল্লিশ বছরের দূরত্ব থেকেও পাওয়া যাবে’। [সহিহ বুখারী, হাদিস ২৯১৪, ৩১৬৬]
উপরোক্ত আয়াতে কারিমা ও হাদিসগুলো একথার শক্তিশালী দলিল যে, যে কোনো মানুষ -চাই মুসলীম হোক চাই অমুসলীম -তাকে স্বেচ্ছায় না-হক্ব ভাবে হত্যা করা কঠিন হারাম কাজ ও কবীরাহ গোনাহ, যার আযাব হবে অত্যন্ত কঠিন।
তবে খোদ আল্লাহ তাআলাই তার বান্দাদেরকে কোনো কোনো ক্ষেত্রে হত্যা করে দুনিয়া থেকে বিদায় করে দেয়ার অনুমতি দিয়েছেন। কাকে কোন অবস্থায় হত্যা করা হালাল, সেটা জানা একটি অতীব গুরুত্বপূর্ণ ইলম, যা জানা জরুরী। এজন্য নিম্নোক্ত আলোচনাগুলো পড়ুন। (আলোচনাটি এখনো শেষ হয়নি। দোয়া করবেন, যাতে অচিরেই শেষ করার তৌফিক হয়)