# ইউসাইর বিন আমর রা. থেকে বর্ণিত হয়েছে, তিনি বলেন- قُلْتُ لِسَهْلِ بْنِ حُنَيْفٍ هَلْ سَمِعْتَ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ فِي الْخَوَارِجِ شَيْئًا قَالَ سَمِعْتُهُ يَقُولُ ـ وَأَهْوَى بِيَدِهِ قِبَلَ الْعِرَاقِ ـ يَخْرُجُ مِنْهُ قَوْمٌ يَقْرَءُونَ الْقُرْآنَ لاَ يُجَاوِزُ تَرَاقِيَهُمْ، يَمْرُقُونَ مِنَ الإِسْلاَمِ مُرُوقَ السَّهْمِ مِنَ الرَّمِيَّةِ . رواه البخاري: ٦٩٣٤ و مسلم: ١٠٦٨ – ‘আমি সাহল বিন হুনায়েফ রা.-কে জিজ্ঞেস করলাম: ‘আপনি কি রাসুলুল্লাহ ﷺ-কে খারেজীদের ব্যাপারে কিছু বলতে শুনেছেন?’ তিনি বললেন: আমি তাঁকে ইরাকের দিকে ইশারা করে বলতে শুনেছি: ‘সেখান থেকে একটি গোষ্ঠীর আবির্ভাব হবে, যারা কুরআন পাঠ করবে, কিন্তু (কুরআনের মর্ম ও আহকামের বুঝ) তাদের কন্ঠনালী অতিক্রম করবে না, (তা অন্তরে প্রবেশ করা-তো আরো পরের কথা)। তারা দ্বীন থেকে এমনভাবে ছিটকে বেড়িয়ে যাবে, যেভাবে তীর শিকারকে ভেদ করে (অপর দিক দিয়ে) ছিটকে বেড়িয়ে যায়’। [সহিহ বুখারী, হাদিস ৬৯৩৪; সহিহ মুসলীম, হাদিস ১০৬৮]
# আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর রা. থেকে বর্ণিত হয়েছে, রাসুলুল্লাহ ﷺ এরশাদ করেছেন- رَأَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُشِيرُ بِيَدِهِ يَؤُمُّ الْعِرَاقَ : هَا ، إِنَّ الْفِتْنَةَ هَاهُنَا ، هَا ، إِنَّ الْفِتْنَةَ هَاهُنَا ثَلَاثَ مَرَّاتٍ مِنْ حَيْثُ يَطْلُعُ قَرْنُ الشَّيْطَانِ . رواه أحمد في مسنده:١٠/٣٩١ رقم ٦٣٠٢ و ٦١٢٩ , واسناد صحیح علی شرط الشیخین- ‘আমি দেখেছি, রাসুলুল্লাহ ﷺ ইরাকের দিকে ইশারা করে বললেন: ওখানে, নিশ্চই ফিতনা ওখানে, নিশ্চই ফিতনা ওখানে, যেখানে শয়তানের শিং উত্থিত হবে’। [মুসনাদে আহমদ- ১০/৩৯১ হাদিস ৬৩০২, ৬১২৯]
# আবু যর রা. থেকে বর্ণিত হয়েছে, রাসুলুল্লাহ ﷺ এরশাদ করেছেন- إِنَّ بَعْدِي مِنْ أُمَّتِي أَوْ سَيَكُونُ بَعْدِي مِنْ أُمَّتِي قَوْمٌ يَقْرَءُونَ الْقُرْآنَ لَا يُجَاوِزُ حَلَاقِيمَهُمْ يَخْرُجُونَ مِنْ الدِّينِ كَمَا يَخْرُجُ السَّهْمُ مِنْ الرَّمِيَّةِ ثُمَّ لَا يَعُودُونَ فِيهِ هُمْ شَرُّ الْخَلْقِ وَالْخَلِيقَةِ . رواه مسلم في الصحيح, كتاب الزكاة, باب الخوارج شر الخلق والخليقة: رقم ١٠٦٧; و ابن ماجه: رقم ١٧٠ – ‘আমার (ইন্তেকালের) পরে আমার উম্মতের মধ্যে অথবা (বলেছেন) অচিরেই আমার পরে আমার উম্মতের মধ্যে থেকে একটি গোষ্ঠীর আবির্ভাব হবে। তারা কুরআন পাঠ করবে, কিন্তু (কুরআনের মর্ম ও আহকামের বুঝ) তাদের কন্ঠনালী অতিক্রম করবে না, (তা অন্তরে প্রবেশ করা-তো আরো পরের কথা)। তারা (এক সময়) দ্বীন থেকে এমনভাবে (ছিটকে) বেড়িয়ে যাবে, যেভাবে তীর শিকারকে ভেদ করে (অপর দিক দিয়ে) বেড়িয়ে (চলে) যায়। তারা আর তাতে ফিরে আসবে না। ওরা হচ্ছে নিকৃষ্ট সৃষ্টি ও সৃষ্ট-প্রাণি’। [সহিহ মুসলীম, হাদিস ১০৬৭; সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস ১৭০]
# আনাস বিন মালেক রা. থেকে বর্ণিত হয়েছে, রাসুলুল্লাহ ﷺ এরশাদ করেছেন- سَيَكُونُ فِي أُمَّتِي اخْتِلَافٌ وَفُرْقَةٌ قَوْمٌ يُحْسِنُونَ الْقِيلَ وَيُسِيئُونَ الْفِعْلَ يَقْرَءُونَ الْقُرْآنَ لَا يُجَاوِزُ تَرَاقِيَهُمْ يَمْرُقُونَ مِنْ الدِّينِ مُرُوقَ السَّهْمِ مِنْ الرَّمِيَّةِ لَا يَرْجِعُونَ حَتَّى يَرْتَدَّ عَلَى فُوقِهِ هُمْ شَرُّ الْخَلْقِ وَالْخَلِيقَةِ طُوبَى لِمَنْ قَتَلَهُمْ وَقَتَلُوهُ يَدْعُونَ إِلَى كِتَابِ اللَّهِ وَلَيْسُوا مِنْهُ فِي شَيْءٍ مَنْ قَاتَلَهُمْ كَانَ أَوْلَى بِاللَّهِ مِنْهُمْ قَالُوا يَا رَسُولَ اللَّهِ مَا سِيمَاهُمْ قَالَ التَّحْلِيقُ . رواه ابو داؤد في سننه, كتاب السنة, باب في قتال الخوارج: رقم ٤٧٦٥ و صححه الالباني في صحيح أبى داود; و الحاكم في المستدرك: ٢/١٧٦ رقم ٢٧٠٦ – ‘শিঘ্রই আমার উম্মাতের মধ্যে মতদ্বন্দ্ব ও দলাদলীর সময় একটি গোষ্ঠীর আবির্ভাব হবে। তারা কথাবার্তা সুন্দর করে বলবে, তবে (দ্বীনের নামে) মন্দ কাজ করবে।তারা কুরআন পাঠ করবে, কিন্তু (কুরআনের মর্ম ও আহকামের বুঝ) তাদের কন্ঠনালী অতিক্রম করবে না, (তা অন্তরে প্রবেশ করা-তো আরো পরের কথা)। তারা দ্বীন থেকে এমনভাবে ছিটকে বেড়িয়ে যাবে, যেভাবে তীর শিকারকে ভেদ করে (অপর দিক দিয়ে) বেড়িয়ে চলে যায়’ এবং তারা আর (দ্বীনের ভিতরে) ফিরে আসবে না যেমনিভাবে (তীর) অার (ধনুকের) উপর ফিরে আসে না। ওরা হচ্ছে নিকৃষ্ট সৃষ্টি ও সৃষ্ট-প্রাণি। সুসংবাদ তার জন্য যে তাদেরকে কতল করবে এবং তারাও তাকে কতল করবে। তারা আল্লাহ’র কিতাবের দিকে (মানুষকে) ডাকবে, কিন্তু তাদের (নিজেদের) মধ্যে তার কিছুই থাকবে না। যে ব্যাক্তি তাদেরকে কতল করবে সে আল্লাহ’র কাছে তাদের চেয়ে উত্তম (বিবেচিত) হবে। লোকেরা জিজ্ঞেস করলো: ইয়া রাসুলাল্লাহ! তাদের চিহ্ন কী? তিনি বললেন: (তাদের মাথা) মুন্ডানো (থাকবে)’। [সুনানে আবু দাউদ, হাদিস ৪৭৬৫; মুসতাদরাকে হাকিম- ২/১৭৬ হাদিস ২৭০৬]
# অন্য হাদিস সমূহে তাদের আরো কিছু বৈশিষ্টের কথা বর্ণিত আছে, যেমন: আবু সাঈদ খুদরী রা. -এর হাদিসে আছে: يقتلون أهل الإسلام ويدعون أهل الأوثان، لئن أنا أدركتهم لأقتلنهم قتل عاد . أخرجه البخاري في باب: قتل الخوارج والملحدين بعد إقامة الحجة عليهم رقم: ٣١٦٦; و مسلم في الزكاة، باب: ذكر الخوارج وصفاتهم، رقم: ١٠٦٤ – ‘তারা মুসলমানদেরকে হত্যা করবে, আর মুর্তিপুজকদেরকে (নিরাপত্তা ও বন্ধুত্বের জন্য) আহবান করবে। আমি যদি তাদের সাক্ষাত পেতাম, তাহলে অবশ্যই আমি তাদেরকে আদ (জাতিকে পাইকারী হারে) কতল করার ন্যায় কতল করতাম’। [সহিহ বুখারী, হাদিস ৩১৬৬; সহিহ মুসলীম, হাদিস ১০৬৪]
# আবু সাঈদ খুদরী রা. থেকে বর্ণিত হয়েছে, তিনি এরশাদ করেছেন- بينما نحنُ عند رسولِ اللهِ صلَّى اللهُ عليهِ وسلَّمَ وهو يَقْسِمُ قِسْمًا ، أتاهُ ذو الخويصرةِ ، وهو رجلٌ من بني تميمٍ ، فقال : يا رسولَ اللهِ اعدلْ ، فقال : ويلكَ ، ومن يعدلْ إذا لم أعدلْ ، قد خبتُ وخسرتُ إن لم أكن أعدلُ . فقال عمرُ : يا رسولَ اللهِ ، ائذن لي فيهِ فأضربُ عنقَهُ ؟ فقال : دَعْهُ ، فإنَّ لهُ أصحابًا يُحَقِّرُ أحدكم صلاتَهُ مع صلاتهم ، وصيامَهُ مع صيامِهم ، يقرؤونَ القرآنَ لا يُجاوزُ تراقيهم ، يمرقونَ من الدِّينِ كما يمرقُ السهمُ من الرَّمِيَّةِ ، ينظرُ إلى نصلِهِ فلا يوجد فيهِ شيٌء ، ثم ينظرُ إلى رِصَافِهِ فما يوجد فيهِ شيٌء ، ثم ينظرُ إلى نَضِيِّهِ – وهو قَدَحُهُ – فلا يوجد فيهِ شيٌء ، ثم ينظرُ إلى قُذَذِهِ فلا يوجد فيهِ شيٌء ، قد سبقَ الفرثُ والدمُ ، آيتهم رجلٌ أسودُ ، إحدى عضديْهِ مثلُ ثديْ المرأةِ ، أو مثلُ البضعَةِ تَدَرْدَرُ ، ويخرجونَ على حين فُرْقَةٍ من الناسِ . قال أبو سعيدٍ : فأشهدُ أني سمعتُ هذا الحديثَ من رسولِ اللهِ صلَّى اللهُ عليهِ وسلَّمَ ، وأشهدُ أنَّ عليَّ بنَ أبي طالبٍ قاتلهم وأنا معهُ ، فأمر بذلكَ الرجلَ فالتُمِسَ فأُتِيَ بهِ ، حتى نظرتُ إليهِ على نَعْتِ النبيِّ صلَّى اللهُ عليهِ وسلَّمَ الذي نَعَتَهُ . أخرجه مسلم : ١٠٦٤; البخاري: ٣٦١٠; ابن حبان: ٦٧٤١ – ‘রাসুলুল্লাহ ﷺ (একবার সম্পদ) বন্টন করে দিচ্ছিলেন, তখন আমরা তাঁর কাছেই ছিলাম। (এমন সময়) যুল খুওয়াইসিরাহ এলো (রাসুলুল্লাহ ﷺ-এর কাছে)। সে ছিল বনু তামীম গোত্রের লোক। সে বললো: ‘ইয়া রাসুলাল্লাহ! (বন্টনে) ইনসাফ করেন, (আপনি-তো ইনসাফ করছেন না)’। এতে রাসুলুল্লাহ ﷺ বললে: ‘দুর্ভোগ তোমার। আমি (নবী হয়ে) যদি ইনসাফ না করি, তাহলে আর কে ইনসাফ করবে? আমি যদি ইনসাফ না করি, তবে তো আমি (দুনিয়া ও আখেরাতে) বরবাদ ও ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে যাবো’। তখন ওমর রা. বলে উঠলেন: ‘ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমাকে ওর গর্দানটা নেয়ার অনুমতি দিবেন না’ !? রাসুলুল্লাহ ﷺ বললেন: ‘ওকে যেতে দাও (তোমরা)! নিশ্চই তার (এমন সব) সঙ্গী-সাথী রয়েছে, যাদের নামাযের কাছে তোমাদের যে কারো নামায এবং যাদের রোযার কাছে তোমাদের রোযা তুচ্ছ মনে হবে। (অথচ বাস্তবতা হল) তারা কুরআন পাঠ করে, কিন্তু (কুরআনের মর্ম ও আহকামের বুঝ) তাদের কন্ঠনালী অতিক্রম করে না, (সেখানে অন্তরে প্রবেশ করা-তো আরো পরের কথা)। তারা (এক সময়) দ্বীন থেকে এমনভাবে ছিটকে বেড়িয়ে যাবে, যেভাবে তীর শিকারকে ভেদ করে (অপর দিক দিয়ে) ছিটকে বেড়িয়ে (চলে) যায়; (এবং তখন) সেটির (চোখা) ফলকের দিকে তাকালে তাতে (শিকারের রক্ত, চর্বি, গোস্তের) কিছুই পাওয়া যায়না, অতঃপর সেটির রিসাফের দিকে তাকালে তাতেও কিছু পাওয়া যায় না, অতঃপর সেটির নাযী’ -আর সেটা হল ক্বিদহ- এর দিকে তাকালে তাতেও কিছু পাওয়া যায় না, অতঃপর সেটির কুযাযে’র দিকে তাকালে তাতেও কিছু পাওয়া যায়না। অথচ, (তীরটি আগা গোড়া পশুর) গোশত ও রক্তের ভিতর দিয়ে চলে গেছে। এদের চিহ্ন হবে, (এদের মধ্যে এমন) একজন কালো ব্যাক্তি থাকবে, যার এক হাতের কনুই’-এ নারীর স্তনের মতো বা গোস্তের সামান্য টুকড়ার মতো থাকবে, (যা) নড়াচড়া করবে। এরা লোকজনের মাঝে বিভক্তির সময় আত্বপ্রকাশ করবে’। আবু সাঈদ (খুদরী) রা. বলেন: ‘আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, এই হাদিসটি আমি রাসুলুল্লাহ ﷺ থেকে শুনেছি। আমি (এও) সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আলী বিন আবি ত্বালেব আমার উপস্থিতিতে তাদেরকে হত্যা করেন। তখন তিনি (ওই কালো) লোকটির (খোঁজ বেড় করার) নির্দেশ দেন। পরে (তাকে মৃত অবস্থায়) পাওয়া যায়। এমনকি আমি তাকিয়ে দেখলাম যে, রাসুলুল্লাহ ﷺ তার যেমনটা বর্ণনা দিয়েছিলেন, সে তেমনই (দেখতে)’। [সহিহ বুখারী, হাদিস ১৭৩; সহিহ মুসলীম, হাদিস ৩০০০; সহিহ ইবনে হিব্বান, হাদিস ১৯১৩০]
# ইউসুর বিন সাঈদ রহ. উবাইদুল্লাহ বিন আবি রাফে’ রা. থেকে বর্ণনা করেছেন যে- أَنَّ الْحَرُورِيَّةَ لَمَّا خَرَجَتْ وَهُوَ مَعَ عَلِيِّ بْنِ أَبِي طَالِبٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالُوا لَا حُكْمَ إِلَّا لِلَّهِ قَالَ عَلِيٌّ كَلِمَةُ حَقٍّ أُرِيدَ بِهَا بَاطِلٌ إِنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَصَفَ نَاسًا إِنِّي لَأَعْرِفُ صِفَتَهُمْ فِي هَؤُلَاءِ يَقُولُونَ الْحَقَّ بِأَلْسِنَتِهِمْ لَا يَجُوزُ هَذَا مِنْهُمْ وَأَشَارَ إِلَى حَلْقِهِ مِنْ أَبْغَضِ خَلْقِ اللَّهِ إِلَيْهِ مِنْهُمْ أَسْوَدُ إِحْدَى يَدَيْهِ طُبْيُ شَاةٍ أَوْ حَلَمَةُ ثَدْيٍ فَلَمَّا قَتَلَهُمْ عَلِيُّ بْنُ أَبِي طَالِبٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ انْظُرُوا فَنَظَرُوا فَلَمْ يَجِدُوا شَيْئًا فَقَالَ ارْجِعُوا فَوَاللَّهِ مَا كَذَبْتُ وَلَا كُذِبْتُ مَرَّتَيْنِ أَوْ ثَلَاثًا ثُمَّ وَجَدُوهُ فِي خَرِبَةٍ فَأَتَوْا بِهِ حَتَّى وَضَعُوهُ بَيْنَ يَدَيْهِ قَالَ عُبَيْدُ اللَّهِ وَأَنَا حَاضِرُ ذَلِكَ مِنْ أَمْرِهِمْ وَقَوْلِ عَلِيٍّ فِيهِمْ زَادَ يُونُسُ فِي رِوَايَتِهِ قَالَ بُكَيْرٌ وَحَدَّثَنِي رَجُلٌ عَنْ ابْنِ حُنَيْنٍ أَنَّهُ قَالَ رَأَيْتُ ذَلِكَ الْأَسْوَدَ . رواه مسلم, كتاب الزكاة, باب التحريض على قتل الخوارج : رقم ١٠٦٦ – ‘হারুরিয়্যাহ’রা যখন বেড় হল, তখন তিনি (তথা উবাইদুল্লাহ বিন আবি রাফে) আলী রা.-এর সাথে ছিলেন। তারা বললো: لَا حُكْمَ إِلَّا لِلَّهِ – ‘আল্লাহ ছাড়া কোনো হুকুমদাতা নেই’। তখন: আলী রা. বললেন: ‘কথাটা বরহক্ব-সত্য, (কিন্তু) তা বাতিল উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত হয়েছে। নিশ্চই রাসুলুল্লাহ ﷺ (আমাদের কাছে এক শ্রেণির) মানুষের বৈশিষ্ট বর্ণনা করেছিলেন (যে, নিকট ভবিষ্যতে তাদের আবির্ভাব হবে এবং মুসলীম উম্মাহ’র মাঝে ফিতনা ঘটাবে)। আমি অবশ্যই এইসব লোকদের মধ্যে (সেসব বিশেষ) বৈশিষ্ট (দেখে বিলক্ষন) চিনে নিতে পারছি। তারা তাদের মুখে (কুরআনের) হক্ব কথা বলে বটে, (কিন্তু সেটা) তাদের কারো এই অংশ অতিক্রম করে না -একথা বলে তিনি কন্ঠনালীর দিকে ইশারা করলেন। (আরো বললেন:) আল্লাহ’র সৃষ্টির মধ্যে সবচেয়ে ক্রধের পাত্র তারা। তাদের মধ্যে একজন কালো ব্যাক্তি হবে, যার এক হাতে ভেড়া’র স্তনবৃন্ত বা (নারীর) স্তনের বোঁটার মতো থাকবে’। (এরপর এক সময় যখন বাস্তবেই তাদের আবির্ভাব হল এবং) আলী রা. (যুদ্ধ করে) তাদেরকে কতল করলেন, তখন বললেন: তোমরা (ওই কালো ব্যাক্তিটিকে) খোঁজো’। ফলে (মৃতদেহ গুলোর মধ্যে) তার খোঁজ করা হল, কিন্তু (সম্ভাব্য কারো হাতের মধ্যে সেরকম) কিছুই পাওয়া গেল না। তিনি বললেন: ‘তোমরা (ওখানে আবার) ফিরে যাও, (সে অবশ্যই আছে)। আল্লাহ’র কসম, আমি মিথ্যা বলিনি এবং আমাকেও মিথ্যা বলা হয়নি’। (একথা তিনি) দুবার বা তিন বার বললেন। অতপর (তারা সেখানে আবার ফিরে গিয়ে খুঁজতে লাগলো। অবশেষে) তাকে তারা (মৃত দেহের) স্তুপের মধ্যে (মড়া অবস্থায় পড়ে) পেলো। তখন তারা তাকে এনে একেবারে তাঁর সামনে রেখে দিলো’। [সহিহ মুসলীম, হাদিস ১০৬৬; সুনানুল কুবরা, বাইহাকী– ৮/২৯৬ হাদিস ১৬৭০১]
# খারেজীদের ব্যাপারে খোদ রাসুলুল্লাহ ﷺ এরশাদ করেছিলেন- لَئِنْ أَدْرَكْتُهُمْ لأَقْتُلَنَّهُمْ قَتْلَ ثمود – ‘আমি যদি তাদের সাক্ষাত পেতাম তাহলে অবশ্য অবশ্যই তাদেরকে ছামুদ (জাতি)কে (পাইকারী হারে) কতল করার ন্যায় কতল করতাম’। [সহিহ বুখারী, সহিহ মুসলীম]
# হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর ইবনুল আস রা. থেকে নির্ভরযোগ্য সূত্রে বর্ণিত হয়েছে, তিনি বলেন- سَمِعْتُ رسولَ اللَّهِ صلَّى اللَّهُ عليهِ وسلَّمَ يقولُ : يَخرجُ قومٌ من قَبَلِ المشرقِ ، يقرَؤونَ القرآنَ لا يجاوِزُ تراقيَهُم ، كلَّما قُطِعَ قرنٌ نشأَ قَرنٌ حتَّى يخرُجَ في بقيَّتِهِمُ الدَّجَّالُ . اخرجه أحمد في المسند: ٦/٤١٣ رقم ٦٩٥٢, و قال أحمد شاكر: إسناده صحيح ; و الحاكم في المستدرك: رقم ٨٥٥٨ ; قال الهيثمي في مجمع الزوائد: ٦/٢٣٠: رواه الطبراني وإسناده حسن; و ابو داود طيالسي: رقم ٢٢٩٣ و رواته ثقات كما في إتحاف الخيرة ألبوصيرى :٨/١١٨ رقم ٧٦٢٢ – ‘আমি রাসুলুল্লাহ ﷺ-কে এরশাদ করতে শুনেছি: পূর্ব দিক থেকে একটি গোষ্ঠী বেড় হবে, তারা কুরঅান পড়বে, (কিন্তু আয়াতগুলো) তাদের (গলার) কন্ঠনালী অতিক্রম করবে না। (প্রকৃত অর্থ ও মর্ম কলবে ঢোকা তো পরের কথা)। যতবারই (তাদের দৌরাত্বের) শিং-কে কেটে ফেলা হবে, (ততবারই তাদের) নতুন শিং গজাবে। এমনকি (এভাবে চলতে চলতে) তাদের অবশিষ্ঠাংশের মধ্যে দাজ্জাল বেড় হবে’। [মুসনাদে আহমাদ-৬/১৫৩ হাদিস ৬৯৫২; মুসতাদরাকে হাকিম, হাদিস ৮৫৫৮; আবু দাউদ তায়ালিসী, হাদিস ২২৯৩; ত্বাবরাণী: মাজমাউয যাওয়ায়ীদ, হাইছামী- ৬/২৩০]
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর রা. থেকে নির্ভরযোগ্য সূত্রে বর্ণিত হয়েছে, তিনি বলেন- سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: كُلَّمَا خَرَجَ قَرْنٌ قُطِعَ , أَكْثَرَ مِنْ عِشْرِينَ مَرَّةً حَتَّى يَخْرُجَ فِي عِرَاضِهِمُ الدَّجَّالُ . رواه ابن ماجة: ١٧٤ ; وصححه البوصيري في “الزوائد”: ١/٢٦ ، وحسنه الألباني في “صحيح ابن ماجة – ‘আমি রাসুলুল্লাহ ﷺ-কে এরশাদ করতে শুনেছি: ‘যতবারই তাদের (দৌরাত্বের) শিং বেড় হবে, (ততবারই তা) কেটে ফেলা হবে’। (এই একই কথা তিনি বিশ বারেরও বেশি বললেন। তারপর বললেন:) এমনকি (এভাবে চলতে চলতে) তাদের শেষাংশের মধ্যে দাজ্জাল বেড় হবে’। [সুনানে ইবনে মাজাহ- ১/৪৭ হাদিস ১৭৪]
# অালী রা. থেকে সহিহ সূত্রে বর্ণিত হয়েছে, রাসুলুল্লাহ ﷺ এরশাদ করেছেন- سَيَخْرُجُ قَوْمٌ فِي آخِرِ الزَّمَانِ، أَحْدَاثُ الأَسْنَانِ، سُفَهَاءُ الأَحْلاَمِ، يَقُولُونَ مِنْ خَيْرِ قَوْلِ البَرِيَّةِ، لاَ يُجَاوِزُ إِيمَانُهُمْ حَنَاجِرَهُمْ، يَمْرُقُونَ مِنَ الدِّينِ، كَمَا يَمْرُقُ السَّهْمُ مِنَ الرَّمِيَّةِ، فَأَيْنَمَا لَقِيتُمُوهُمْ فَاقْتُلُوهُمْ، فَإِنَّ فِي قَتْلِهِمْ أَجْرًا لِمَنْ قَتَلَهُمْ يَوْمَ القِيَامَةِ . رواه بخاري , كتاب استتابة المرتدين والمعاندين وقتالهم, باب قتل الخوارج والملحدين بعد إقامة الحجة عليهم: رقم ٦٩٣٠ ; و مسلم: رقم ١٠٦٦; احمد: ١/٤٣١ رقم ٦١٦ بإسناد صحيح, تحقيق: حمزة أحمد الزين; – ‘শিঘ্রই শেষ জামানায় (এমন একটি) গোষ্ঠীর আবির্ভাব হবে, (যারা হবে) কাঁচা- বয়সের (সব ছেলেপুলে/উর্তি যুবক এবং) জ্ঞান-বুদ্ধিতে অপরিপক্ক/নির্বোধসূলভ। তারা কথা বলবে উৎকৃষ্ট কথা (কিন্তু কথাগুলোর সহিহ ব্যাখ্যা না বোঝার কারণে তারা মুর্খতা বসতঃ তা গলত স্থানে প্রয়োগ করবে)। তারা কুরআন পাঠ করবে, (কিন্তু আয়াতগুলো) তাদের (গলার) কণ্ঠনালী অতিক্রম করবে না, (ক্বলবে ঢোকা তো পরের কথা)। তারা দ্বীন (ইসলাম) থেকে (এমনভাবে) ছিটকে বেড় হয়ে যাবে, যেভাবে তীর শিকার ভেদ করে ছিটকে বেড় হয়ে যায়। তোমরা তাদেরকে যেখানেই সাক্ষাত পাবে, কতল করে ফেলবে। কারণ, যে তাদের কতল করবে, নিশ্চই তার জন্য কেয়ামতের দিন আল্লাহ’র কাছে তাদেরকে কতলের মধ্যে পুরষ্কার রয়েছে ’। [সহিহ বুখারী, হাদিস ৬৯৩০; সহিহ মুসলীম, হাদিস ১০৬৬; মুসনাদে আহমদ– ১/৪৩১ হাদিস ৬১৬; সুনানে আবু দাউদ, হাদিস ৪৭৬৭; সুনানে নাসায়ী, হাদিস ৪১১৩; সুনানে তিরমিযী, হাদিস ২১৮৮; সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস ১৬৮]