কে আপনাকে কালো জাদু টোনা বা বান মেড়েছে -দেখে নেয়ার শক্তিশালী তদবীর 

কে আপনাকে কালো জাদু টোনা বা বান মেড়েছে -দেখে নেয়ার শক্তিশালী তদবীর   

 

بِسْمِ اللہِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِیۡمِ

الحمد لله و الصلاة و السلام على رسوله محمد و على أله و أمّته

 

[বিশেষ: দ্রষ্টব্য, (১) এখানে উল্লেখিত “কালো জাদু টোনা ও বান এবং জ্বীনের আছর পরীক্ষা করার তদবীরটি” ইসলামী শরীয়তেরে জায়েয সীমা-রেখার মধ্যেই রয়েছে ইনশাআল্লাহ; তবুও এব্যাপারে বিজ্ঞ আলেমের কাছে জেনে নিন। (২) এব্যাপারে বিজ্ঞ ও অভিজ্ঞ তদবীরকারীর পরামর্শ ও এজাজত (অনুমতি) সাপেক্ষে আমল করলে ভাল হয়]

 

কবিরাজী আমলকারীর গুণ বৈশিষ্ট 

যিনি কারোর উপরে জাদু-টোনা বা বান কাটানোর আমল করবেন, তাকে নিম্নোক্ত গুণ বৈশিষ্টে সমৃদ্ধ হওয়া আবশ্যক। যথা:-

(১) সহিহ আকীদা-বিশ্বাস সম্পন্ন মুসলীম হওয়া,

(২) পাঁচ ওয়াক্ত নামাযী হওয়া এবং শরীয়তের অপরাপর অপরিহার্য ফরয ও ওয়াজিবগুলো যথাসাধ্য আদায়কারী হওয়া এবং সুন্নাহ মতো চলা,

(৩) কুফর শিরক বিদআত ও অপরাপর হারাম থেকে পরহেয হয়ে চলা,

(৪) হালাল রেযেক খাওয়া, সর্বদা সত্য কথা বলা (মিথ্যা না বলা)।

(৫) সব সময় পাক-পবিত্র ও ওযু অবস্থায় থাকা। কোনো কারণে নাপাক হলে বা ওযু নষ্ট হয়ে গেলে পূণরায় পাকপবিত্র ও ওযু করে নেয়া।

(৬) যথাসম্ভব বেশি বেশি করে আল্লাহ তাআলার তাসবিহ তাহলিল আদায় করা এবং (যে কোনো প্রমাণিত) দরূদ শরীফ পড়া। …ইত্যাদি। 

তবে, এমন কে আছে, যে প্রতিনিয়ত ছোট বড় অনেক গোনাহ করে না। তাই, আমরা প্রত্যেক গোনাহগারই এসব আমল করতে পারি এবং আল্লাহ তাআলা’র অশেষ রহমত ও দয়ার ভিখারী হয়ে এসব আমল দ্বারা ফায়দাবান হওয়ার আশা করতে পারি। এজন্য কোনো বুজুর্গ খুঁজে তারপর তাঁর দ্বারা এসকল আমল করাতে হবে, এ ধারণা ভুল। আপনি নিজেও আমল করে দেখতে পারেন। ইনশাআল্লাহ, আপনিও এর ফল দেখতে/অনুভব করতে পারবেন।

 

কে আপনার উপরে কালো জাদু টোনা ও বান মেড়েছে কিংবা কোন জ্বীন আছর করেছে – তা দেখে নেয়ার পরীক্ষিত শক্তিশালী তদবীর – (১)

 
প্রথমে জেনে নিন, আমলটি করার আগে আপাকে কিভাবে প্রস্তুতি নিতে হবে:
(১) ভাল ভাবে পাক-পবিত্র হয়ে ওযু সহ বসে আমলটি করবেন।
(২) আমল করার আগে পবিত্র সুগন্ধি আতর মেখে নিবেন।
(৩) একই দিনে ফজর নামাযের পর একবার আমলটি করবেন, ওই একই দিনে একবার সন্ধার নামাযের পর আমলটি করবেন। ওই একই দিনে রাতে শোয়ার আগে একবার আমলটি করে নিবেন এবং রাতের আমল থেকে ঘুমানোর আগ পর্যন্ত আর কারোর সাথে কথা বলবেন না। (উল্লেখ্য, আমলটি বৃহ:স্পতিবার করলে ভাল হয়)  
 
 
(১)بِسْمِ اللہِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِیۡمِ’ (বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম) ১ বার পড়ুন। 
 
(২) ‘দরূদ ইব্রাহিম’ ৭ থেকে ১১ বার পড়ুন। (‘দরূদ ইব্রাহিম’ হল যে দরূদ আমরা নামাযে পড়ে থাকি, যা নিম্নে দেয়া হল)

اَللّٰھُمَّ صَلِّ عَلٰی مُحَمَّدٍ وَّ عَلٰٓی اٰلِ مُحَمَّدٍ کَمَا صَلَّیْتَ عَلٰٓی اِبْرَاھِیْمَ وَعَلٰٓی اٰلِ اِبْرَاھِیْمَ اِنَّکَ حَمِیْدٌ مَّجِیْدٌ اَللّٰھُمَّ بَارِکْ عَلٰی مُحَمَّدٍ وَّعَلٰٓی اٰلِ مُحَمَّدٍ کَمَا بَارَکْتَ عَلٰٓی اِبْرَاھِیْمَ وَعَلٰٓی اٰلِ اِبْرَاھِیْمَ اِنَّکَ حَمِیْدٌ مَّجِیْدٌ

বাংলা উচ্চারণ:- (আল্লহুম্মা, ছল্লি আলা মুহাম্মাদ, ওয়া আলা আলি মুহাম্মাদ, কামা ছল্লাইতা আলা ইব্রাহীম, ওয়া আলা আলি ইব্রাহীম, ইন্নাকা হামিদুম মাজীদ। আল্লহুম্মা, বারিক আলা মুহাম্মাদ, ওয়া আলা আলি মুহাম্মাদ, কামা বারকতা আলা ইব্রাহীম, ওয়া আলা আলি ইব্রাহীম, ইন্নাকা হামিদুম মাজীদ)।

(৩)  أَعُوذُ بِاللَّهِ مِنَ الشَّيْطَانِ الرَّجِيمِ (আঊযু বিল্লাহি মিনাশ-শাইত্বনির রাজিম) ১ বার পড়ুন। 

 
(৪) ‘সুরা আলাম নাশরাহ’ ৭ বার পড়ুন এবং প্রতিবার শুরু করার আগে ‘بِسْمِ اللہِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِیۡمِ’ (বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম) ১ বার পড়ে নিন।। (নিম্নে ‘সুরা আলাম নাশরাহ’ দেয়া হল)
 
أَلَمْ نَشْرَحْ لَكَ صَدْرَكَ – وَوَضَعْنَا عَنكَ وِزْرَكَ – الَّذِي أَنقَضَ ظَهْرَكَ – وَرَفَعْنَا لَكَ ذِكْرَكَ – فَإِنَّ مَعَ الْعُسْرِ يُسْرًا – إِنَّ مَعَ الْعُسْرِ يُسْرًا – فَإِذَا فَرَغْتَ فَانصَبْ – وَإِلَىٰ رَبِّكَ فَارْغَب
 
(৫) ‘সুরা ইখলাস’ ৭ বার পড়ুন এবং প্রতিবার শুরু করার আগে ‘بِسْمِ اللہِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِیۡمِ’ (বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম) ১ বার পড়ে নিন।। (নিম্নে সুরা ইখলাস দেয়া হল)
 
قُلْ هُوَ اللَّهُ أَحَدٌ – اللَّهُ الصَّمَدُ – لَمْ يَلِدْ وَلَمْ يُولَدْ – وَلَمْ يَكُن لَّهُ كُفُوًا أَحَدٌ
 
 
(৬) ‘সুরা ফালাক’ ৭ বার পড়ুন এবং প্রতিবার শুরু করার আগে ‘بِسْمِ اللہِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِیۡمِ’ (বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম) ১ বার পড়ে নিন।। (নিম্নে সুরা ফালাক দেয়া হল)
 
قُلْ أَعُوذُ بِرَبِّ الْفَلَقِ – مِن شَرِّ مَا خَلَقَ – وَمِن شَرِّ غَاسِقٍ إِذَا وَقَبَ – وَ مِن شَرِّ النَّفَّاثَاتِ فِي الْعُقَدِ – وَ مِن شَرِّ حَاسِدٍ إِذَا حَسَدَ
 
(৭) ‘সুরা নাস’ ৭ বার পড়ুন এবং প্রতিবার শুরু করার আগে ‘بِسْمِ اللہِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِیۡمِ’ (বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম) ১ বার পড়ে নিন।। (নিম্নে সুরা নাস দেয়া হল)
 
قُلْ أَعُوذُ بِرَبِّ النَّاسِ – مَلِكِ النَّاسِ – إِلَٰهِ النَّاسِ – مِن شَرِّ الْوَسْوَاسِ الْخَنَّاسِ – الَّذِي يُوَسْوِسُ فِي صُدُورِ النَّاسِ – مِنَ الْجِنَّةِ وَالنَّاسِ
 
(৮) ‘দরূদ ইব্রাহিম’ আবারো ৭ থেকে ১১ বার পড়ুন। (‘দরূদ ইব্রাহিম’ হল যে দরূদ আমরা নামাযে পড়ে থাকি, যা নিম্নে দেয়া হল)

اَللّٰھُمَّ صَلِّ عَلٰی مُحَمَّدٍ وَّ عَلٰٓی اٰلِ مُحَمَّدٍ کَمَا صَلَّیْتَ عَلٰٓی اِبْرَاھِیْمَ وَعَلٰٓی اٰلِ اِبْرَاھِیْمَ اِنَّکَ حَمِیْدٌ مَّجِیْدٌ اَللّٰھُمَّ بَارِکْ عَلٰی مُحَمَّدٍ وَّعَلٰٓی اٰلِ مُحَمَّدٍ کَمَا بَارَکْتَ عَلٰٓی اِبْرَاھِیْمَ وَعَلٰٓی اٰلِ اِبْرَاھِیْمَ اِنَّکَ حَمِیْدٌ مَّجِیْدٌ

বাংলা উচ্চারণ:- (আল্লহুম্মা, ছল্লি আলা মুহাম্মাদ, ওয়া আলা আলি মুহাম্মাদ, কামা ছল্লাইতা আলা ইব্রাহীম, ওয়া আলা আলি ইব্রাহীম, ইন্নাকা হামিদুম মাজীদ। আল্লহুম্মা, বারিক আলা মুহাম্মাদ, ওয়া আলা আলি মুহাম্মাদ, কামা বারকতা আলা ইব্রাহীম, ওয়া আলা আলি ইব্রাহীম, ইন্নাকা হামিদুম মাজীদ)।

 
(৯) এবারে কারোর সাথে কথা না বলে রাতে শুয়ে পড়ুন এবং ঘুম না আসা পর্যন্ত আল্লাহ’র কাছে ও ফল পাওয়া প্রবল আশা নিয়ে কায় মনো বাক্যে মনে মনে দোয়া করতে থাকুন। ইনশা-আল্লহ, ঘুমের মধ্যে কেউ আপনাকে জানিয়ে যাবে যে কে কোথায় আপনার উপরে জাদু বান বান মেড়েছে। (ইনশা-আল্লহ, ভয় পাওয়ার কিছু নেই)
 
বি:দ্র: এই আমলটি করার রাতেই আপনি কোনো ফল নাও পেতে পারেন। যদি ফল পান তবে তো আলহামদুলিল্লাহ। আর যদি সেই রাতে ফল না পান, তাহলে হতাশ না হয়ে একটু ধৈর্য সহকারে আমলটি প্রতি দিন একই নিয়মে করতে থাকুন -যাবৎ না ফল পান। এটাও পরীক্ষিত আমল, ইনশাআল্লাহ আল্লাহ’র ফজলে এর দ্বারা ফল হবে….।