ধর্মনিরপেক্ষতার সংজ্ঞা ও অর্থ এবং অত্যাবশ্যক মৌলিক বৈশিষ্ট/শর্ত

ধর্মনিরপেক্ষতার সংজ্ঞা ও অর্থ এবং এর ৬টি অত্যাবশ্যক মৌলিক বৈশিষ্ট / শর্ত


>>> মূল সূচিপত্র (index) থেকে এ পেজের পূর্ববর্তী বা পরবর্তী আলোচনা পড়তে [এখানে ক্লিক করুন] 


 
পূর্ব আলোচনার পর…

ধর্মনিরপেক্ষতার সংগা অর্থ তাৎপর্য কী

সেকুলারিজম বা ধর্মনিরপেক্ষতা মতবাদটি কেনো একটি পরিষ্কার ইসলাম বিরোধী, পথভ্রষ্ঠ, কুফরী মতবাদ, এবং কেনই বা ধর্মনিরপেক্ষতায়  বিশ্বাসীরা পথভ্রষ্ঠ বে-দ্বীন কাফের – সেটা বোঝার আগে ধর্মনিরপেক্ষতাবাদীরা ‘ধর্মনিরপেক্ষতা’ বলতে বাস্তবে কী বোঝাতে চায় -তা জানা ও বোঝা অতীব জরুরী।

বাংলা ভাষায় ব্যবহৃত ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ শব্দটি যে অর্থ ও তাৎপর্য প্রকাশ করে, সেই অর্থ ও তাৎপর্য বুঝানোর ক্ষেত্রে আরবী পরিভাষা হিসেবে عَلمانية (আলমানিয়্যাহ) শব্দটি এবং ইংরেজী পরিভাষা হিসেবে Secularism (সেকুলারিজম) শব্দটি ব্যবহৃত হয়ে থাকে। এব্যাপারে প্রথমে বিশেষজ্ঞদের দেয়া ধর্মনিরপেক্ষতার সংজ্ঞা গুলোকে খুব ভালো করে পড়ে ও বুঝে নিন, যাতে এর পরে নিম্নেঅিালোচিত ধর্মনিরপেক্ষতাবাদের ৬টি অত্যাবশ্যক মৌলিক কৈশিষ্ট/শর্ত গুলো বোঝা সহজতর হয়।

ধর্মনিরপেক্ষতার সংজ্ঞা ও অর্থ

(১) অক্সফোর্ড অভিধানে ধর্মনিরপেক্ষতার সংজ্ঞা দেয়া হয়েছে এভাবে-

  • Secularism-(refers to)- the belief that the religion should not be involved in the organization of society, education etc. [অর্থ্ঃ- সেকুলারিজম ( তথা ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ অর্থ) এই কথা বিশ্বাস করা যে, কোনো সামাজিক প্রতিষ্ঠান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ইত্যাদির মধ্যে ধর্মকে জড়ানো অনুচিৎ]।
  • Secularization-(refers to)- the process of removing the influence or power that religion has over sth [অর্থ্ঃ- ধর্মনিরপেক্ষকরণ (সেকুলারাইজেশন )হল এমন একটি প্রক্রিয়া যা -কোনো কিছুর উপর ধর্মের যে প্রভাব-প্রতিপত্তি বা ক্ষমতা-শক্তি রয়েছে -তাকে ক্রমাহ্নয়ে দূরীভূত করে দেয়]। [দেখুন: Oxford Advanced Learner’s Dictionary: 1371 p, Seventh Edition; সূত্র:-অক্সফোর্ড এ্যডভান্স লারনার্স ডিকশনারী- ১৩৭১ পৃষ্ঠা, ৭ম সংস্করন]

(২) যুক্তরাজ্য ভিত্তিক ন্যশনাল সেকুলার সো্সাইটি (জাতীয় ধর্মনিরপেক্ষ সমাজ) ধর্মনিরপেক্ষতার সংজ্ঞা লিখেছে এভাবে-

  • The National Secular Society campaigns for the separation of religion and state and promotes secularism as the best means to create a society in which people of all religions or none can live together fairly and cohesively. The NSS sees secularism — the position that the state should be separate from religion — as an essential element in promoting equality between all citizens. [অর্থ- ‘ন্যাশনাল সেকুলার সোসাইটি’র সংগ্রাম হল ধর্ম ও রাষ্ট্রের মধ্যে বিভাজনের সংগ্রাম। এ সোসাইটি ধর্মনিরপেক্ষতাবাদকে সমাজ গঠনের এমন সর্বোৎকৃষ্ট একটি মাধ্যম হিসেবে তুলে ধরতে চায়, যে সমাজে সকল ধর্মের মানুষ অথবা যে মানুষগুলি কোনো ধর্ম মানে না তারা সবাই মিলে সুচারু রুপে এবং পারষ্পরিক সহযোগীতামূলক ভাবে একই সাথে বসবাস করতে পারে। ‘ন্যাশনাল সেকুলার সোসাইটি’ মনে করে-ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ তথা ‘রাষ্ট্র থেকে  ধর্মকে আলাদা রাখা বাঞ্চনিয়’ -এই অবস্থানটি সকল জনগণের মাঝে সাম্যতা সৃষ্টির একটি অত্যাবশ্যক হাতিয়ার] [দেখুন:- http://www.secularism.org.uk/about.html]
  • The separation of religion and state is the foundation of secularism. It ensures that religious groups don’t interfere in affairs of state, and makes sure the state doesn’t interfere in religious affairs. [অর্থ:-ধর্মনিরপেক্ষতাবাদের মূল ভিত্তি হল  ধর্ম ও রাষ্ট্রের মধ্যে বিভাজন। ধর্মের অনুসারীরা যাতে রাষ্ট্রীয় বিষয়গুলোতে হস্তক্ষেপ করতে না পারে এবং কোনো রাষ্ট্র যাতে ধর্মীয় বিষয়গুলোতে হস্তক্ষেপ করতে না পারে- ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ সে বিষয়টিকে নিশ্চিত করে’। [দেখুন: http://www.secularism.org.uk/what-is-secularism.html]

(৩) বিশ্বকোষ উইকিপেডিয়া-তে ধর্মনিরপেক্ষতার সংজ্ঞা প্রসঙ্গে ফিল্ডম্যান এর বক্তব্য তুলে ধরা হয়েছে এভাবে In political terms, secularism is a movement towards the separation of religion and government (often termed the separation of church and state). This can refer to reducing ties between a government and a state religion, replacing laws based on scripture (such as the Torah and Sharia law) with civil laws, and eliminating discrimination on the basis of religion. This is said to add to democracy by protecting the rights of religious minorities. [রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ হল ধর্ম ও সরকারের মাঝে বিভাজন সৃষ্টির নিমিত্তে পরিচালিত একটি সংগ্রাম (যেটাকে প্রায়ই ‘গির্জা ও রাষ্ট্রে’র মাঝে বিভাজন’ বলে সম্মোধন করা হয়ে থাকে)। ধর্মনিরপেক্ষতাবাদকে এভাবেও বলা যায় যে, এটি এমন একটি প্রক্রিয়া যা সরকার এবং একটি রাষ্ট্রধর্মের মধ্যে বিদ্যমান বন্ধনের মাঝে হ্রাস ঘটায়; সে এটি ঘটায় ধর্মীয় গ্রন্থনির্ভর আইনের (যেমনঃ তৌরাত ও শরীয়াহ আইনের) পরিবর্তে  রাষ্ট্রের  সাধারণ আইন প্রতিস্থাপনের মাধ্যমে এবং ধর্মের ভিত্তিতে সৃষ্ট পক্ষপাতিত্বকে দূরীভূত করণের মাধ্যমে।  বলা হয় যে  এটি (ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ) গণতন্ত্রের মধ্যে একটি মাত্রা সৃষ্টি করেছে  –ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের অধিকার সংরক্ষনের মাধ্যমে । [ডিভাইডেড বাই গড, ফিন্ডম্যান, নোয়াহ (২০০৫); ফ্যারার, সট্রয়াস এন্ড জিরোআক্সঃ ১৪পৃষ্ঠা; দেখুন:- http://en.wikipedia.org/wiki/Secularism]

(৪) বাংলা উইকিপিডিয়া-তে বলা হয়েছে- “ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ (ইংরেজি: Secularism) বলতে কিছু নির্দিষ্ট প্রথা বা প্রতিষ্ঠানকে ধর্ম বা ধর্মীয় রীতিনীতির বাইরে থেকে পরিচালনা করাকে বোঝানো হয়। এক অর্থে ধর্মনিরপেক্ষতা ধর্মীয় স্বাধীনতাকে প্রকাশ করে। এই মতবাদ অনুযায়ী, সরকার কোনরূপ ধর্মীয় হস্তক্ষেপ করবে না, কোন ধর্মীয় বিশ্বাসে বিশ্বাসী হবে না এবং কোন ধর্মকে কোন প্রকার অতিরিক্ত সুবিধা প্রদান করবে না। ধর্মনরপেক্ষতাবাদ সেই বিশ্বাসকে ধারণ করে যাতে বলা হয় মানুষের কর্মকাণ্ড এবং সিদ্ধান্তগুলো, বিশেষত রাজনীতিক সিদ্ধান্তগুলো, তথ্য এবং প্রমাণের উপর নির্ভর করবে, কোনো ধর্মীয় বিশ্বাসের উপর নয়। অর্থাৎ বলা যায়, “ধর্ম যার যার রাষ্ট্র সবার”।…..রাজনৈতিক ব্যবহারের দিক থেকে বলা হয়, ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ হলো ধর্ম এবং রাষ্ট্রকে পৃথক করার আন্দোলন, যাতে ধর্মভিত্তিক আইনের বদলে সাধারণ আইনজারি এবং সকল প্রকার ধর্মীয় ভেদাভেদ মুক্ত সমাজ গড়ার আহ্বান জানানো হয়। প্রকৃতপক্ষে সেকুলারিজম অর্থে উপমহাদেশে ধর্মনিরপেক্ষতা ব্যবহার করা হয় না। উপমহাদেশে ধর্মনিরপেক্ষতার প্রচলিত ধারণা হল, নাগরিকদের ধর্ম থাকবে তবে রাষ্ট্রের কোনো ধর্ম থাকবে না।……“ নিরপেক্ষ” শব্দের অর্থ কোনও পক্ষে নয় ৷ “ধর্ম-নিরপেক্ষ” শব্দের অর্থ, কোন ধর্মের পক্ষে নয় ৷ অর্থাৎ সমস্ত ধর্মের সাথে সম্পর্কহীন ৷ “Seculaism” শব্দের আভিধানিক অর্থ – একটি মতবাদ, যা মনে করে রাষ্ঠনীতি, শিক্ষা প্রভৃতি ধর্মীয় শাসন থেকে মুক্ত থাকা উচিত [দেখুন: https://bn.wikipedia.org/wiki/ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ ]

(৫) বাংলাদেশ ‘বাংলা একাডেমীর ইংলিশ-বাংলা ডিকশনারী’ পড়ে দেখুন, তাতে বলা হয়েছে-  “Secular-(অর্থ) পার্থিব, ইহজাগতিকতা, জড়, জাগতিক। Secular State ‘গীর্জার সঙ্গে বৈপরিত্যক্রমে রাষ্ট্র’। এ অর্থ অনুযায়ী মুসলিম দেশে এর ব্যাখ্যা হবে মসজিদের সঙ্গে বৈপরিত্যক্রমে রাষ্ট্র। Secularism নৈতিকতা ও শিক্ষা ধর্মকেন্দ্রিক হওয়া উচিৎ নয়-এই মতবাদ। জাগতিকতা, ইহবাদ”। [বাংলা একাডেমীর ইংলিশ-বাংলা ডিকশনারী’, ২০১২ সালের সংস্করণ; জিল্লুর রহমান সিদ্দিকী সাহেবের সম্পাদনায় প্রকাশিত]

এই অভিধানটি প্রকাশ করেছে বাংলাদেশের ধর্মনিরপেক্ষ সরকারের নিয়ন্ত্রিত সরকারী প্রতিষ্ঠান ‘বাংলা একাডেমী’ এবং এর সম্পাদনা করেছে প্রাক্তন প্রফেসর জিল্লুর রহমান সিদ্দিকী সাহেব (মৃ: ২০১৪ ইং)। সংগাগুলো দেখে ভালো লাগলো যে, তারা কোনো রাখঢাক না করেই Secularism (সেকুলারিজম / ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ) শব্দটির সাফ সাফ অর্থটিই মানুষকে জানিয়ে দিয়েছেন; ‘ধর্মনিরপেক্ষতা ধর্মহীনতা নয়’ বা ‘ধর্মনিরপেক্ষতা ধর্মকে অস্বীকার করে না’- ইত্যকার সাইড ব্যাখ্যার অবতারনা করেনি।

যে কোনো দেশের অভিধানে Secularism কথাটির অর্থ খোঁজ করে দেখুন, সবখানে একই মর্মের ব্যাখ্যা পাবেন। অক্সফোর্ড ইংরেজী-উর্দু ডিকশনারীতে Secularism অর্থ লেখা আছে, لا دينية  لا مذهبية  (ধর্মমুক্ততা, ধর্মীয় অনুশাসনমুক্ততা)। উইকিপিডিয়াতে সেকুলারিজমের ব্যাখ্যা করা হয়েছে Anti Islam দিয়ে।

উপরোক্ত সংঙ্গাসমূহ হতে ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ মতবাদটির যে বিশ্বাসগত সার-সংক্ষেপ ফুটে ওঠে তা আমরা নিম্নে ৬ টি পয়েন্ট আকারে তুলে ধরছি।

ধর্মনিরপেক্ষতা’র ৬টি উল্লেখযোগ্য মৌলিক বৈশিষ্ট বা শর্ত 

বৈশিষ্ট নং ১:- রাষ্ট্রব্যবস্থা থেকে ধর্মকে আলাদা রাখায় বিশ্বাস করা ধর্মনিরপেক্ষতাবাদের সর্ব প্রধান শর্ত ও ভিত্তি। এর খোলাসা অর্থ হল, ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ বিশ্বাস করে,  রাষ্ট্রের মৌলিক চেতনা-বিশ্বাস ও সরকারের সার্বিক রাষ্ট্রীয় কার্যক্রমের মধ্যে কোনো ধর্মীয় বিশ্বাস ও ধর্মীয় আইনকানুনের প্রবেশ ১০০% নিষিদ্ধ থাকবে, যাতে রাষ্ট্রযন্ত্র ও ধর্ম –এ দু’টি বিষয় সম্পূর্ণ আলাদা আলাদা থাকে; মানে ধর্মীয় আইনের আলোকে যাতে রাষ্ট্র পরিচালিত হতে না পারে। বরং, রাষ্ট্রের  প্রতিনিধি কর্ণধার ও হর্তাকর্তারাই  ঠিক করবে  যে, রাষ্ট্র কোন নীতিমালা ও বিধিবিধানের মোতাবেক চলবে। এটাই হল  Secular State  (ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র)-এর মূল কথা।

বৈশিষ্ট নং ২:- নাগরীকদেরকে শুধুমাত্র ব্যাক্তিগত বিশ্বাস ও বিশ্বাসকেন্দ্রিক অনুশাসন বা আচার অনুষ্ঠান পালন করতে দেয়ায় বিশ্বাস করা ধর্মনিরপেক্ষতাবাদের আরেকটি অন্যতম শর্ত। এর খোলাসা অর্থ হল,ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ বিশ্বাস করে, রাষ্ট্রের জনগণ তাদের স্ব স্ব ধর্মের মুধুমাত্র ব্যক্তি জীবন কেন্দ্রীক অনুশাসনগুলো স্বাধীন ভাবে পালন করার অধিকার সংরক্ষন করে। বাদবাকি  পারিবারিক ও সামাজিক জীবনে তাদের যে সকল ধর্মীয় অনুশাসন রয়েছে, তার মধ্যে মুধুমাত্র ওই সকল অনুশাসন পালন করার অধিকার থাকবে, যা ধর্মনিরপেক্ষ বিশ্বাস ও চেতনার সাথে সাংঘর্ষিক হবে না; যদি সাংঘর্ষিক হয় তাহলে তা হবে পরিত্যাজ্য।

বৈশিষ্ট নং ৩: শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসমূহ থেকে ধর্মকে দূরীভূত করায় বিশ্বাস করা ধর্মনিরপেক্ষতাবাদের আরেকটি অন্যতম শর্ত। এর খোলাসা অর্থ হল,‘ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ’ বিশ্বাস করে, রাষ্ট্রের সকল ধর্ম ও মতবাদের জনগণকে এমন একটি একক ধারার শিক্ষা ব্যবস্থর অন্তর্ভূক্ত করা হবে, যে শিক্ষা সকল জনগণের উপর সমভাবে প্রয়োগ করা যাবে এবং যে শিক্ষার দ্বারা জনগণকে ব্যপকভাবে খাঁটি ধর্মনিরপেক্ষ বানানোর প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে; সেখানে ধর্মভিত্তিক সরকার ও রাষ্ট্রব্যাবস্থা গঠনের সাথে সংশ্লিষ্ট এমন কোনো ধমীয় শিক্ষাকে অন্তর্ভূক্ত রাখা হবে না যা ধর্মনিরপেক্ষ বিশ্বাসের সাথে সাংঘর্ষি ক বা ভবিষ্যতে ধর্মনিরপেক্ষতার মূল চেতনা ও ভিত্তিকে অটুট রাখার বিষয়টিকে বিনষ্ট করে দিতে পারে

বৈশিষ্ট নং ৪:- সামাজীক প্রতিষ্ঠানসমূহ থেকে ধর্মকে দূরীভূত করায় বিশ্বাস করা ধর্মনিরপেক্ষতাবাদের আরেকটি অন্যতম শর্ত। এর খোলাসা অর্থ হল, ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ’ বিশ্বাস করে, দেশের জনগণকে ধর্মনিরপেক্ষতাবাদী চেতনায় বিশ্বাসী করে গড়ে তোলার লক্ষ্যে দেশের সকল সামাজিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে ১০০% ধর্মনিরপেক্ষতার চেতনায় বিশ্বাসী হতে হবে, যারা তাদের অপরাপর কার্যক্রমের পাশাপাশি জনগণকে ব্যপকভাবে খাঁটি ধর্মনিরপেক্ষ বানানোর প্রচেষ্টাও বিশেষভাবে অব্যাহত রাখবে;সেখানে ধর্মভিত্তিক সরকার ও রাষ্ট্রব্যাবস্থা গঠনের সাথে সংশ্লিষ্ট এমন কোনো ধমীয় শিক্ষনীয় বিষয় অন্তর্ভূক্ত রাখা হবে না যা ধর্মনিরপেক্ষ বিশ্বাসের সাথে সাংঘর্ষিক হয় কিংবা ভবিষ্যতে ধর্মনিরপেক্ষতার মূল চেতনা ও ভিত্তিকে অটুট রাখার বিষয়টিকে বিনষ্ট করে দিতে পারে।

বৈশিষ্ট নং ৫:– একথা বিশ্বাস করা ধর্মনিরপেক্ষতাবাদের একটি অন্যতম শর্ত যে, ধর্মনিরপেক্ষতা হল সকল নাগরীকের সাথে সমতা (Equality) ও সুবিচার (Justice) রক্ষা করার সর্বোত্তম রক্ষাকবজ। অপরদিকে ধর্মকে রাষ্ট্রব্যবস্থায় হস্তক্ষেপ করতে দেয়ার একটাই অর্থ, আর সেটা হল কারো প্রতি পক্ষপাতিত্বতা (Partiality/Discrimination) করা, আর কারো কারো প্রতি অন্যায়, অবিচার (Injustice) ও বৈষম্যতার (Inequality) দরজা উন্মুক্ত করে দেয়া। এর খোলাসা অর্থ হল, ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ বিশ্বাস করে, বিশেষ কোনো ধর্মের বিধিবিধান দ্বারা রাষ্ট্র পরিচালিত হওয়ার অর্থ রাষ্ট্রের ওই বিশেষ ধর্মের অনুসারী নাগরীকদের প্রতি পক্ষপাতিত্বতা (discrimination) করা এবং একইসাথে অপরাপর ধর্মের অনুসারী নাগরীকদের উপর উক্ত ধর্মের বিধিবিধান চাপিয়ে দিয়ে প্রকারন্তে তাদের প্রতি (বিশেষ ভাবে সংখ্যালঘু ধর্মাবলম্বীদের প্রতি) বৈষম্যতা (inequality) ও অন্যায়-অবিচার (injustice) করা। বিধায় তাদের বিশ্বাস, ‘রাষ্ট্র ব্যবস্থাকে ধর্ম থেকে আলাদা রাখা’ এবং ধর্মনিরপেক্ষ আইন দ্বারা রাষ্ট্র পরিচালনা করারই হল  রাষ্ট্রের সকল নাগরীকের প্রতি সুবিচার ও সাম্যতা (justice & equality between all citizens) বজায় রাখার রক্ষাকবচ। 

বৈশিষ্ট নং ৬:- ধর্মের অনুসারীরা যাতে রাষ্ট্রীয় ব্যপারে হস্তক্ষেপ করতে না পারে সেজন্য ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক-দল গঠন’ সহ তাদের যাবতীয় রাজনৈতিক তৎপরতা নিষিদ্ধ করায় বিশ্বাস করা ধর্মনিরপেক্ষতাবাদের আরেকটি অন্যতম লক্ষ্য । এর খোলাসা অর্থ হল, ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ বিশ্বাস করে, ‘ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দল গঠন’ করার সুযোগ আজীবনের জন্য ১০০% নিষিদ্ধ করে দেয়া ছাড়া কোনো রাষ্ট্রে ১০০% ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ প্রতিষ্ঠা করা সম্পূর্ণ অসম্ভব। কারণটা একদমই পরিষ্কার; রাষ্ট্রে ‘ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দল গঠন’ নিষিদ্ধ থাকা মানে রাষ্ট্রে  আধুনিক নির্বাচন পদ্ধতিতে  ধর্মভিত্তিক সরকার গঠনের পথও বন্ধ থাকা। এতে দেশের রাষ্ট্রযন্ত্র, সরকার ও আনুষঙ্গিক কার্যক্রম আজীবনের জন্য কোনো ধর্মীয় বিশ্বাস ও আইনকানুন দ্বারা প্রভাবিত ও পরিচালিত হওয়া থেকে ১০০% মুক্ত থাকবে। ফলে সেই দেশটি একটি খাঁটি ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র হিসেবে টিকে থাকতে পারবে আজীবন।

ধর্মনিরপেক্ষতাবাদের বহু শাখাগত বৈশিষ্ট রয়েছে, তবে চোখে পড়ার মত মৌলিক বৈশিষ্ট আমার মতে উপরোক্ত এই ৬ টি, যা বিশেষভাবে প্রনিধানযোগ্য।

এবারে আমরা এই ৬ টি বৈশিষ্ট/শর্ত’কে এক এক করে বিস্তারিত বিশ্লেষন করে দেখবো যে, এজাতীয় বিশ্বাস পোষন করা কেনো প্রকাশ্য ইসলাম-বিরোধীতা, আল্লাহদ্রোহীতা, পথভ্রষ্ঠতা, মুনাফেকী ও কুফরী। কারণ, আল্লাহ তাআলা শুধুমাত্র এবং কেবলমাত্র তাঁর নাজিলকৃত   ইসলামী শরীয়ত (ইসলামী বিধিবিধান) মানাকে মুসলমানদের জন্য ফরয করে দিয়েছেন এবং ইসলামী শরীয়ত বহির্ভূত অন্য সকল শরীয়ত (আইন ও বিধিবিধান)কে মানা হারাম করে দিয়েছেন – চাই তা মুসলমানদের ব্যাক্তিজীবন, পারিবারিকজীবন, সামাজিক বা রাষ্ট্রিয়জীবনই হোক না কেনো। যেমন আল্লাহ তাআলা  এরশাদ করেন-

 ثُمَّ جَعَلْنَاكَ عَلَىٰ شَرِيعَةٍ مِنَ الْأَمْرِ فَاتَّبِعْهَا وَلَا تَتَّبِعْ أَهْوَاءَ الَّذِينَ لَا يَعْلَمُونَ 

‘অতঃপর (হে নবী মুহাম্মাদ!) আমি তোমাকে (আমার) নির্দেশিত একটি   শরীয়তের উপর স্থাপন করেছি। অতএব তুমি তার অনুসরণ করে চলো এবং যারা (এই শরীয়ত সম্পর্কে) জানে না তুমি তাদের প্রবৃত্তির অনুসরণ করো না’। [সূরা জাসিয়া ১৮]
 
 اتَّبِعُوا مَا أُنزِلَ إِلَيْكُم مِّن رَّبِّكُمْ وَلَا تَتَّبِعُوا مِن دُونِهِ أَوْلِيَاءَ 

‘(হে মুমিনগণ!) তোমাদের রবের পক্ষ থেকে (নবী মুহাম্মাদের উপর) তোমাদের জন্য (শরীয়ত হিসেবে) যা নাজিল করা হয়েছে, তোমরা তার অনুগত্য করে চলো। আর তাঁকে বাদ দিয়ে (অন্য এমন অন্য কোনো) অভিভাবকের  অনুগত্য-অনুসরণ করো না (যারা এই শরীয়ত বহির্ভূত অন্য কোনো শরীয়তের কথা বলে)’। [সূরা আ’রাফ ৩]

 
উপরের এসকল আয়াত থেকে সুস্পষ্টরূপে প্রমাণিত হয়-
 
(১) আল্লাহ তাআলা তাঁর সর্বোশেষ নবী ও রাসুল মুহাম্মাদ কে নবুওত দানের পর তাঁর শেষ জীবন পর্যন্ত যে ইসলামী শরীয়তের উপর রেখেছেন, তাঁর অনুসারী বলে দাবীদার মুসলমানদের জন্য শুধু সেই শরীয়তের অনুগত্য-অনুসরণ করা মুসলমানদের জন্য ফরয (obligatory)। 
 
(২) ইসলামী শরীয়তের সাথে সাংঘর্ষিক বা বিরোধী যে কারো উদ্ভাবীত বা আমদানীকৃত যে কোনো বিশ্বাস, আদর্শ, মতবাদ-মতাদর্শ ও বিধি-নিষেধের অনুগত্য-অনুসরণ করা মুসলীম উম্মাহ’র জন্য সম্পূর্ণ হারাম।  

এব্যাপারে মুসলীম উম্মাহ’র ইজমা রয়েছে যে,  ‘সলামী শরীয়তের উৎস ও মানদন্ড’ হল ৪টি:- কুরআন, সুন্নাহ, ইজমাকিয়াস’। এটাই ইসলামী শরীয়ত, এটাই আল্লাহ’র দ্বীন ইসলাম, এটাই নবী মুহাম্মাদ সা.-এর দেখানো সুন্নাহ, এটাই সাহাবী ও পরবর্তী সুপথপ্রাপ্ত মুমিনদের পথ, এটাই সিরাতে মুস্তাক্বিম। [বিস্তারিত

وَمَن يُشَاقِقِ الرَّسُولَ مِن بَعْدِ مَا تَبَيَّنَ لَهُ الْهُدَىٰ وَيَتَّبِعْ غَيْرَ سَبِيلِ الْمُؤْمِنِينَ نُوَلِّهِ مَا تَوَلَّىٰ وَنُصْلِهِ جَهَنَّمَ ۖ وَسَاءَتْ مَصِيرًا

‘আর যে ব্যাক্তির কাছে (আল্লাহ’র নাজিলকৃত) ‘হুদা’ (সঠিক পথ, সিরাতে মুস্তাক্বিম) প্রতিভাত হয়ে যাওয়ার পরও রাসুলের বিরুদ্ধে (তাঁর মিশনের বিপক্ষে) অবস্থান নেয় এবং মুমিনদের পথভিন্ন অন্য পথের অনুসরণ করে, আমরা তাকে সেই দিকেই ফিরারো যে দিকে সে ফিরেছে এবং তাকে দগ্ধ করবো জাহান্নামে। আর তা কতই না নিকৃষ্ট গন্তব্যস্থল’। [সূরা নিসা ১১৫]

এই ইসলামী শরীয়তের আলোকেই আমরা ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ’কে নিরিক্ষন করে দেখবো যে, তা আল্লাহ, তাঁর রাসুল সা. এবং মুমিনদের পথ কিনা; নাকি পথভ্রষ্ঠ কোনো নেতা, লিডার বা গুরু-মাতব্বর’দের পথ।

নসর বিন আসেম আল-লাইস রহ. থেকে বর্ণিত, হযরত হুযাইফা রা. বলেন- كان الناس يسألون رسول الله صلى الله عليه و سلم عن الخير وأسأله عن الشر وعرفت أن الخير لن يسبقني قلت يا رسول الله أبعد هذا الخير شر قال يا حذيفة تعلم كتاب الله واتبع ما فيه ثلاث مرات قال قلت يا رسول الله أبعد هذا الشر خير قال هدنة على دخن وجماعة على أقذاء قال قلت يا رسول الله الهدنة على دخن ما هي قال لا ترجع قلوب أقوام على الذي كانت عليه قال قلت يا رسول الله أبعد هذا الخير شر قال فتنة عمياء صماء عليها دعاة على أبواب النار وأنت أن تموت يا حذيفة وأنت عاض على جذل خير لك من أن تتبع أحدا منهم. مسند الإمام أحمد: ٥/٣٨٦ رقم ٢٣٣٣٠ , تعليق شعيب الأرنؤوط : حديث حسن – ‘লোকজন রাসুলুল্লাহ ﷺ-কে কল্যান সম্পর্কে জিজ্ঞেস করতো, আর আমি জিজ্ঞেস করতাম মন্দ সম্পর্কে, (যাতে) আমি চিনে নিতে পারি যে, কল্যান আমাকে পিছনে ফেলে অগ্রসর হয়ে যায়নি। আমি জিজ্ঞেস করলাম: ইয়া রাসুলাল্লাহ! এই কল্যানের পর কি কোনো মন্দ আছে? তিনি তিনবার বললেন: হে হুযাইফা! আল্লাহ’র কিতাবের ইলম হাসিল করো এবং তার মধ্যে যা আছে তার অনুসরণ করো। তিনি বলেন: আমি জিজ্ঞেস করলাম: ইয়া রাসুলাল্লাহ! এই মন্দের পর কি কোনো কল্যান আছে? তিনি বললেন: (হ্যাঁ, আছে। সেটা এমন যেন পাপের) ধোয়ার উপর (ইমান ও আমলের অপূর্ণ) স্থিরতা এবং (গোনাহ’র ছিটেফোটা) ধুলোবালির উপর (জীবন অতিবাহীত করা মুসলমানদের এক) জামাআত।তিনি বলেন: আমি জিজ্ঞেস করলাম: ইয়া রাসুলাল্লাহ! ধোয়ার উপর (ইমান ও আমলের অপূর্ণ) স্থিরতা -এটা কি? তিনি বললেন: (সে জামানার মুসলমান) গোষ্ঠিদের অন্তরসমূহ (ইমানের) যে অবস্থার উপর বিদ্যমান ছিল, তাতে আর ফিরে না যাওয়া (বরং ইমান ও আমলের মধ্যে পাপের কিছুটা ধোয়াসে ভাব থেকে যাওয়া)। তিনি বলেন: আমি জিজ্ঞেস করলাম: ইয়া রাসুলাল্লাহ! এই কল্যানের পর কি কোনো মন্দ আছে? তিনি বললেন: (হ্যাঁ, আছে। আর সেটা হল এমন এক) ফিতনা যা (আকিদা ও বিশ্বাসগত) অন্ধত্ব ও বধিরতা (-র অন্ধকার নিয়ে আবির্ভূত হবে), যার উপর ভিত্তি করে দোযখের বিভিন্ন দরজায় দাঁড়িয়ে (পথভ্রষ্ঠতার ধারক-বাহক নেতা ও লিডার’দের পক্ষ থেকে তোমাদের মুসলমানদেরকে তাদের আদর্শ গ্রহনের দিকে) ডাক দেয়া হবে। হে হুযাইফা, তুমি যদি (তখন আল্লাহ’র রাস্তায় মড়ে যেতে পরো, তো) মড়ে যেও (তবুও কোনো অবস্থাতেই ওদের অনুসরণ করতে যেও না)। ওদের (মতো পথভ্রষ্ঠ লিডারদের) কোনো একজনের অনুগত্য-অনুসরণ করার থেকে তুমি আনন্দ-উল্লাসে (তোমার ধ্বনসম্পদ) উড়িয়ে দিবে সেটাও তোমার জন্য অধিক কল্যানকর হবে’। [মুসনাদে আহমদ- ৫/৩৮৬, হাদিস ২৩৩৩০; সুনানুল কুবরা, নাসায়ী- ৫/১৮ হাদিস ৮০৩২, ৮০৩৩; আত-তবাকাত, ইবনে সা’দ- ৪/২৫২] 

হযরত ইবনে ওমর রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেছেন- سمعت رسول الله صلى الله عليه وسلم يقول : إن في أمتي لنيفا وسبعين داعيا ، كلهم داع إلى النار ، لو أشاء لأنبأتكم بأسمائهم وقبائلهم . رواه أبو يعلى الموصلي فى مسنده: ١٠/٦٥ رقم ٥٧٠١ . قال ابن كثير فى البداية والنهاية , كتاب الفتن والملاحم وأشراط الساعة والأمور العظام يوم القيامة: ١٩/١١٨ وهذا إسناد لا بأس به; قال الهيثمى : رواه أبو يعلى وفيه ليث بن أبي سليم وهو مدلس،وبقية رجاله ثقات:٧/٣٣٢ –‘আমি রাসুলুল্লাহ সা.-কে বলতে শুনেছি যে, আমার উম্মতের মধ্যে সত্তর জনের বেশি আহবানকারী (লিডার/গুরু) হবে। তাদের প্রত্যেকেই (একেকজন পথভ্রষ্ঠ এবং তাদের জীবনকালে তারা নিজ নিজ প্রথভ্রষ্ঠ মত ও পথকে মুক্তির সঠিক পথ বলে প্রচার করবে, ফলে আদপে তারা মানুষকে) দোযখের দিকে আহবান করবে। (তাদের থেকে সাবধান থেকো)। আমি চাইলে তোমাদেরকে তাদের নাম ও তাদের এলাকার খবর বলে দিতে পারি’। [মুসনাদে আবু ইয়া’লা- ১০/৬৫ হাদিস ৫৭০১; আল-বিদায়াহ ওয়ান্নিহায়াহ, ইবনে কাছির- ১৯/১৮৮; মাজমাউয যাওয়ায়ীদ, হাইছামী- ৭/৩৩২]

হযরত হুযাইফা রা. থেকে বর্ণিত,  তিনি বলেন- حدثنا عبد الخالق بن يزيد الدمشقي عن أبيه عن مكحول عن حذيفة بن اليمان رضى الله عنه قال: ما من صاحب فتنة يبلغون ثلثمائة إنسان إلا ولو شئت أن أسميه باسمه واسم أبيه ومسكنه إلى يوم القيامة كل ذلك مما علمنيه رسول الله صلى الله عليه و سلم .قالوا بأعيانها قال أو أشباهها يعرفها الفقهاء أو قال العلماء . اخرجه نعيم بن حماد المروزي فى الفتن: رقم ١٦ – ‘সাহেবুল-ফিতান (ফিতনার ধারক-বাহক) -কেয়ামত পর্যন্ত যাদের সংখ্যা গিয়ে দাঁড়াবে তিন’শ জনে -তাদের মধ্যে এমন কেউ নেই, আমি চাইলে যাদের প্রত্যেকের নাম, তার পিতার নাম এবং তার এলাকার নাম বলে দিতে না পারি’। এর সবই রাসুলুল্লাহ সা, আমাকে জানিয়েছেন। লোকেরা জিজ্ঞেস করলো: (তাদের পরিচয়গুলি কি) একদম স্পষ্ট (যে, যে কেউ তাদেরকে চিনে নিতে পারবে)? তিনি বললেন: (না,) বরং (তাদের পরিচয়গুলো এমন ভাবে জানানো হয়েছে, যা) সাদৃশ্যপূর্ণ; ফকিহগণ (তথা দ্বীনের গভীর জ্ঞানীগণ) অথবা বলেছেন, আলেমগণ তাদেরকে চিনে নিতে পারবেন।  [আল-ফিতান, নুআইম বিন হাম্মাদ- ১৬]

ইনশাআল্লাহ, আপনারা এই আলোচনাটি আগা-গোড়া পাঠ করলে বুঝতে পারবেন যে,  যারা ধর্মনিরপেক্ষবাদের দিকে ডাক দেয়, তারা মূলতঃ দোযখের দরজায় দাড়িয়ে ডাক্হাক-কারী এবং যে এই ডাকে সাড়া দিবে তারা তাকে দোযখে ঢোকার ব্যবস্থা করে দিবে। 

 


>>> এই পেজের পূর্ববর্তী বা পরবর্তী আলোচনা পড়ার সুবিধার্থে সরাসরি সূচিপত্র (index) থেকে পছন্দনীয় শীরনামের পাশে ক্লিক করুন 

মূল সূচিপত্র (index): [এখানে ক্লিক করুন]