“ ধর্মনিরপেক্ষতা মতবাদ : পরিষ্কার আল্লাহদ্রোহিতা, কুফর ও পথভ্রষ্ঠতা ” – একথা প্রমাণে নতুন করে আমার কলম ধরার কারণ
بِسْمِ اللہِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِیۡمِ
الحمد لله و الصلاة و السلام على رسوله محمد و على أله و أمّته
اَللّٰهُمَّ صَلِّ عَليٰ مُحَمَّدٍ النبي الأمي عَدَدَ خَلْقِك وَ رِضَا نَفْسِك وَزِنَةَ عَرْشِك وَ مِدَادَ كَلِمَاتِك، صَلِّ عَليه صَلاَةً كَامِلَةً دَائِمَةً كَمَا يَنْبَغِي أَنْ يُصَلَّى عَلَيهِ وَ سَلِّمْ تَسلِيمَاً بِقَدرِ عَظَمَةِ ذَاتِكَ فِى كُلِّ وَقتٍ وَ حِين، صلاة تكون لك رضاء و له جزاء، صلاة لا غاية لها ولا منتهى ولا انقضاء باقية ببقائك الى يوم الدين ، و اعطه الوسيلة و الفضيلة و المقام المحمود الذي وعدته، و اجزه عنا ما هو اهله، و على اله وأصحابه و أزواجه و ذريته و أهل بيته و سلم تسليما مثل ذلك، اَللّٰهُمَّ اجمعني معه في الفردوس و جنة المأوى، اَللّٰهُمَّ صَلِّ عَليٰ مُحَمَّدٍ صَلوٰةً تُنَجِّيْنَا بِهَا مِنْ جَمِيْعِ الْأَهْوَالِ وَاْلآفَاتِ وَتَقْضِيْ لَنَا بِهَا مِنْ جَمِيْعِ الْحَاجَاتِ وَتُطَهِّرُنَا بِهَا مِنْ جَمِيْعِ السَّيِّاٰتِ وَتَرْفَعُنَا بِهَا عِنْدَكَ اَعْليٰ الدَّرَجَاتِ وَتُبَلِّغُنَا بِهَا اَقْصىٰ الْغَايَاتِ مِنْ جَمِيْعِ الْخَيْرَاتِ فِي الْحَيَاتِ وَبَعْدَ الْمَمَاتِ- اِنَّكَ عَليٰ كُلِّ شَيْئٍ قَدِيْرٍ بِرَحْمَتِكَ يَا اَرْحَمَ الرَّاحِمِيْنَ
[উল্লেখ্য, ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ বা সেকুলারিজম বিষয়ক এই গোটা আলোচনায় উল্লেখিত বিভিন্ন আয়াতে কারিমা, হাদিস ও আছার, আরবী ইবারত সমূহের অনুবাদ’কে এবং এতদসংশ্লিষ্ট আলোচনাকে কোনো বিজ্ঞ মুহাক্কেক আলেমের পরামর্শ ব্যাতীত কারো কাছে বর্ণনা করা থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দিচ্ছি, যাতে আমার অযোগ্যতার কারণে এখানে কোনো উল্লেখযোগ্য ভুল হয়ে থাকলে তা সংশোধন করে নেয়ার আগেই মানব সমাজে ছড়িয়ে না যায়। এগুলো পড়ুন ইলম অর্জনের জন্য এবং যোগ্য আলেম থেকে তা বুঝিয়ে নিন। আর কোনো যোগ্য চোখে উল্লেখযোগ্য ভুল ধরা পড়লে তা আমাকে অবগত করুন]
>>> মূল সূচিপত্র (index) থেকে এ পেজের পরবর্তী আলোচনা পড়তে [এখানে ক্লিক করুন]
যারা কুরআন ও সুন্নাহ’র আলোকে ‘দ্বীন ইসলামে’র পরিচয় লাভ করেছেন এবং আল্লাহ তাআলা কী উদ্দেশ্যে সর্বশেষ নবী ও রাসুল মুহাম্মাদ ﷺ-এর উপর ‘ইসলামী শরীয়ত’ নাজিল করেছেন তা অবগত আছেন, আর একই সাথে যারা ধর্মনিরপেক্ষ মতবাদ –এর মূল বৈশিষ্ট সম্পর্কে অবগত, তাদের কাছে একথা সূর্যের আলোর মতোই পরিষ্কার যে, ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ আপাদমস্তক একটি খাঁটি ইসলাম বিরোধী পথভ্রষ্ঠ কুফরী মতবাদ। কারণ, ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে ইসলামের আগমনকে পুরাপুরি অস্বীকার করে এবং যে ব্যাক্তি এই অস্বীকার করায় বিশ্বাসী নয় সে ধর্মনিরপেক্ষতাবদের দৃষ্টিতে আদপে কোনো ধর্মনিরপেক্ষতাবাদই নয়। কারণ, ধর্মনিরপেক্ষতাবাদী হওয়ার পূর্বশর্তই হল ‘রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে যে কোনো ধর্মের আগমনকে পুরাপুরি অস্বীকার করা; অর্থাৎ রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থা বলতে যা বুঝায় তা কোনো ধর্মীয় বিধিবিধানের আলোকে পরিচালিত হতে পারবে না’। আর একথা কোন্ মুসলমান না জানে যে, দ্বীন ইসলামে কুরআন-সুন্নাহ’য় প্রমাণিত যে কোনো শরয়ী একটি আইন বা বিধানকেও যদি কেউ অস্বীকার করে বা বাদ দেয়ায় বিশ্বাস করে, সে সর্বোসম্মতিক্রমে কাফের হয়ে যায়। সেখানে কোন্ যুক্তিতে রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থার সাথে সম্পর্কিত কুরআন-সুন্নাহ’য় প্রমাণিত যাবতীয় আইন ও বিধানকে অস্বীকার করলে বা বাদ দেয়ায় বিশ্বাস করলে সে কাফের হয়ে যাবে না?! অবশ্যই কাফের হবে এবং পূর্বাপর সকল নির্ভরযোগ্য ওলামায়ে কেরামের সর্বম্মতিক্রমে এরকম আকীদায় বিশ্বাসী ব্যাক্তি -কাফের (যার প্রমাণ আপনারা সামনে যতই পড়তে থাকবেন, ততই অনুধাবন করতে পারবেন ইনশাআল্লাহ)।
কিন্তু অত্যন্ত পরিতাপের বিষয়, আজ মুসলমান বলে দাবীদার পৃথিবীর অধিকাংশ ইনসান ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ –কে তাদের মৌলিক বিশ্বাস ও জীবনব্যবস্থা হিসেবে অত্যন্ত গর্বভোরে গ্রহন করে নিয়েছে। শুধু তা-ই নয়, অনেকে নির্লজ্জ্বের মতো একথাও বলে থাকে যে ‘ইসলাম ধর্মনিরপেক্ষতা-ই শিক্ষা দেয়’ ! ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাযিউন।
এদিকে যারাও-বা ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ –কে আখেরী জামানার একটি ভয়ঙ্কর ইসলাম বিরোধী কুফরী ফিতনা হিসেবে বিশ্বাস করেন, তাদেরর কাছে কেউ যদি প্রশ্ন করে বসে যে – ‘ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ ’ কেনো ইসলাম বিরোধী কুফরী মতবাদ ?’, তখন তারা যে জবাব দেন, তাতে সত্যপিপাসু ব্যাক্তিরা একটা ধারনা লাভ করেন বটে, কিন্তু তা থেকে দ্বীন ইসলাম ও ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ-এর মূল বৈশিষ্টটা যেমন আলাদা আলাদা করে ভালভাবে ফুটে ওঠে না, তেমনি এ দু’য়ের মধ্যে আগা-গোড়া কী কী অতিব উল্লেখযোগ্য ভংঙ্কর পার্থক্য রয়েছে এবং কী কী কারণে আমরা বলে থাকি যে, কেয়ামত পর্যন্ত ইসলাম ও ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ –এর মধ্যে একটি স্থায়ী দা-কুমড়া স্বতীনী সম্পর্ক থাকতে বাধ্য – তাও পরিষ্কার হয়ে ওঠেনা। তাছাড়া আক্ষেপের বিষয় হল, লাইব্রেরী ও দোকানগুলোতে অগণিত ভিন্ন ভিন্ন লেখকের লিখিত দৈনন্দিন মাসলা-মাসায়েল, তাবিজ-কবজ আর অযিফা-আমলের যত বই পাবেন, তার শতকরা ০.০১ ভাগো এমন কোনো বই-এর সন্ধান পাবেন না, যা ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ , গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র বা কমিউনিজম-এর মতো ইমান বিনষ্টকারী নাজুক কুফরী মতবাদ গুলোর যথার্থ পরিচয় তুলে ধরা হয়েছে। আর যাও-বা শতকরা ০.০১ ভাগো বই-এ এসব বিষয়ে কোনো আলোচনা পাবেন, তাতে পরিষ্কার করে খুলে খুলে বোঝানো হয়নি যে ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ কী কী কারণে ‘একটি ভয়ঙ্কর পথভ্রষ্ঠ ইসলাম বিরোধী কুফরী মতবাদ’। তদুপরি মুসলমানদের ইমানী দুরাবস্থা আজ এই মাত্রায় গিয়ে ঠেকেছে যে, তাদের মাঝে ইসলাম ও ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ –এর মধ্যে পার্থক্য উপলব্ধি করে ইমান বাঁচনোরও কোনো গরজ নেই।
উপরোক্ত এই বিষয়গুলোকে সামনে রেখে চিন্তা করে দেখলাম, এমনিতেই অনেক বেশি দেরি হয়ে গেছে, আরো দেরি করলে আল্লাহ’র কাছে জবাব দেয়ার কি বাকি থাকবে। নিজের জ্ঞান ও যোগ্যতার দৌড় সম্পর্কে পুরাপুরি উপলব্ধি থাকা সত্ত্বেও আল্লাহ’র উপর ভরসা করে এই বিষয়ে যথাসম্ভব বিস্তারিত আলোচনা পেশ করার নিয়ত করেছি। وَمَا تَوْفِيقِي إِلَّا بِاللَّهِ عَلَيْهِ تَوَكَّلْتُ وَإِلَيْهِ أُنِيبُ
>>> মূল সূচিপত্র (index) থেকে এ পেজের পরবর্তী আলোচনা পড়তে [এখানে ক্লিক করুন]