পথভ্রষ্ট নেতা, শাসক ও তাদের অনুসারী : কুরআন ও হাদিসের আলোকে 

পথভ্রষ্ট নেতা, শাসক ও তাদের অনুসারী : কুরআন ও হাদিসের আলোকে  

 

بِسْمِ اللہِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِیۡمِ

الحمد لله و الصلاة و السلام على رسوله محمد و على أله و أمّته

اَللّٰهُمَّ صَلِّ عَليٰ سَيِّدِنَا مَوْلَانَا مُحَمَّدٍ وَعَليٰ اٰلِ سَيِّدِنَا مُحَمَّدٍ صَلوٰةً تُنَجِّيْنَا بِهَا مِنْ جَمِيْعِ الْأَهْوَالِ وَاْلآفَاتِ وَتَقْضِيْ لَنَا بِهَا مِنْ جَمِيْعِ الْحَاجَاتِ وَتُطَهِّرُنَا بِهَا مِنْ جَمِيْعِ السَّيِّاٰتِ وَتَرْفَعُنَا بِهَا عِنْدَكَ اَعْليٰ الدَّرَجَاتِ وَتُبَلِّغُنَا بِهَا اَقْصىٰ الْغَايَاتِ مِنْ جَمِيْعِ الْخَيْرَاتِ فِي الْحَيَاتِ وَبَعْدَ الْمَمَاتِ- اِنَّكَ عَليٰ كُلِّ شَيْئٍ قَدِيْرٍ بِرَحْمَتِكَ يَا اَرْحَمَ الرَّاحِمِيْنَ

 

[উল্লেখ্য, নিম্নে পথভ্রষ্ট নেতা, শাসক ও তাদের অনুসারী সম্পর্কিত উল্লেখিত আয়াতে কারিমা, হাদিস, আছার ও ইবারত সমূহ ও তার অনুবাদ গুলিকে কোনো বিজ্ঞ মুহাক্কেক আলেমের পরামর্শ ব্যাতীত কারো কাছে বর্ণনা করা থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দিচ্ছি, যাতে আমার অযোগ্যতার কারণে এখানে কোনো উল্লেখযোগ্য ভুল হয়ে থাকলে তা সংশোধন করে নেয়ার আগেই মানব সমাজে ছড়িয়ে না যায়। এগুলো পড়ুন ইলম অর্জনের জন্য এবং যোগ্য আলেম থেকে তা বুঝিয়ে নিন। আর কোনো যোগ্য চোখে উল্লেখযোগ্য ভুল ধরা পড়লে তা আমাকে অবগত করুন।] 

 

আল্লাহ তাআলা এরশাদ করেন-

إِنَّ اللَّهَ لَعَنَ الْكَافِرِينَ وَأَعَدَّ لَهُمْ سَعِيرًا – خَالِدِينَ فِيهَا أَبَدًا ۖ لَّا يَجِدُونَ وَلِيًّا وَلَا نَصِيرًا – يَوْمَ تُقَلَّبُ وُجُوهُهُمْ فِي النَّارِ يَقُولُونَ يَا لَيْتَنَا أَطَعْنَا اللَّهَ وَأَطَعْنَا الرَّسُولَا – وَقَالُوا رَبَّنَا إِنَّا أَطَعْنَا سَادَتَنَا وَكُبَرَاءَنَا فَأَضَلُّونَا السَّبِيلَا – رَبَّنَا آتِهِمْ ضِعْفَيْنِ مِنَ الْعَذَابِ وَالْعَنْهُمْ لَعْنًا كَبِيرًا
“নিশ্চই আল্লাহ কাফেরদের প্রতি লা’নত করেছেন এবং তাদের জন্য প্রস্তুত করে রেখেছেন জ্বলন্ত আগুন। তাতে তারা অনন্তকাল ধরে থাকবে। (সেখানে) তারা না পাবে কোনো অভিভাবক, আর না কোনো সাহায্যকারী। সেদিন আগুনের মধ্যে তাদের চেহারাগুলোকে ওলটপালক করা হবে। তারা বলবে: হায় আমাদের দূর্ভোগ! আমরা (পৃথিবীর জীবনে যদি) আল্লাহ’র অনুগত্য করতাম! আমরা (যদি) রাসুলের অনুগত্য করতাম! আর তারা বলবে: হে আমাদের প্রভু, নিশ্চই আমরা (তোমাকে ও তোমার রাসুলের অনুগত্য-অনুসরণ না করে) অনুগত্য-অনুসরণ করেছি আমাদের নেতাদেরকে ও আমাদের বড়দেরকে, পরে তারাই আমাদেরকে পথভ্রষ্ট করেছিল। হে আমাদের প্রভু, (আজ) তাদেরকে দ্বিগুণ আযাব দিন এবং তাদেরকে বড় মাপের অভিশাপে অভিশপ্ত করুন” [সূরা আহযাব ৬৮]
 
إِنَّهُمُ اتَّخَذُوا الشَّيَاطِينَ أَوْلِيَاءَ مِن دُونِ اللَّهِ وَيَحْسَبُونَ أَنَّهُم مُّهْتَدُونَ
“নিশ্চই তারা আল্লাহ’কে বাদ দিয়ে শয়তানগুলিকে অভিভাবক হিসেবে গ্রহন করে নিয়েছে, (যাদের অনুগত্য অনুসরণ তারা করছে), আর তারা ভাবছে যে, তারা সঠিক পথ প্রাপ্ত”[সূরা আ’রাফ ৩০]
 
 وَ يَوْمَ يُنَادِيهِمْ فَيَقُولُ أَيْنَ شُرَكَائِيَ الَّذِينَ كُنتُمْ تَزْعُمُونَ – قَالَ الَّذِينَ حَقَّ عَلَيْهِمُ الْقَوْلُ رَبَّنَا هَٰؤُلَاءِ الَّذِينَ أَغْوَيْنَا أَغْوَيْنَاهُمْ كَمَا غَوَيْنَا ۖ تَبَرَّأْنَا إِلَيْكَ ۖ مَا كَانُوا إِيَّانَا يَعْبُدُونَ – وَ قِيلَ ادْعُوا شُرَكَاءَكُمْ فَدَعَوْهُمْ فَلَمْ يَسْتَجِيبُوا لَهُمْ وَرَأَوُا الْعَذَابَ ۚ لَوْ أَنَّهُمْ كَانُوا يَهْتَدُونَ
“আর সেদিন তিঁনি তাদেরকে ডাকবেন, তারপর বলবেন: ‘আমরা শরীকরা (আজ) কোথায়, যাদেরকে তোমরা (পৃথিবীর জীবনে আমার শরীক হিসেবে) ধারন করতে’? (সে দিন) যাদের উপরে এই কাথাটি প্রযোজ্য হবে (তাদের ব্যাপারে) সে(ই  শরীক) বলবে: ‘হে আমাদের প্রভু! এরাই সেই লোক যাদেরকে আমরা পথভ্রষ্ট করেছিলাম। আমরা তাদেরকে পথভ্রষ্ট করেছিলাম যেমনি ভাবে আমরা (নিজেরাই) পথভ্রষ্ট ছিলাম। আমরা (আজ) আপনার কাছে (এ ব্যাপারে তাদের থেকে) দায়মুক্ত হচ্ছি। এরা তো আমাদের ইবাদতই করতো না ”[সূরা কাসাস ৬২-৬৪]
 
ফায়দা: কু-পথে প্ররোচনা দানকারী বিভিন্ন জ্বীন শয়তান ও মানুষ শয়তান, যারা পৃথিবীর জীবনে আল্লাহ-বিরোধীতা ও গোনাহ’র পথে কথা ও কাজের দ্বারা মানুষকে ডাকতো বা প্ররোচিত করতো, তাদের মধ্য থেকে মানুষজন যাদেরকে আল্লাহ তাআলার শরীক বানিয়ে রেখেছিল, যাদের মতবাদ মতাদর্শ ও দেখানো পথের মোকাবেলায় আল্লাহ’র মতবাদ মতাদর্শ ও দেখানো পথকে রদ করে দেয়া হত, যাদের কথা ও স্লোগানকে আল্লাহ তাআলার কথা ও স্লোগানের মোকাবেলায় অধিক সঠিক বলে মনে করা হত, এখানে সেই সকল শরীকদেরকে বোঝানো হচ্ছে -চাই তাদের কেউ প্রকাশ্য ইবাদত করুক চাই না করুক। বস্তুত: আল্লাহ তাআলাকে প্রভু হিসেবে যেভাবে অনুগত্য অনুসরণ করার কথা ছিল, এরা জ্বীন শয়তান ও মানুষ শয়তান গুলির মধ্য থেকে কাউকে কাউকে সেভাবে অনুগত্য অনুসরণ করার মাধ্যমে আল্লাহ’র শরীক সাব্যস্থ করে নিয়ে জীবন যাপন করেছে।
 
জ্বীন শয়তান ও মানুষ শয়তান গুলি তাদের অনুসারীদেরকে কু-পথে প্ররোচনা দিয়েছিল মাত্র, বাদ বাকি কু-পথে চলেছে সেই অনুসারীরা নিজ শক্তি ও দেমাগ খাটিয়েই। তাই এসব অনুসারীদের একথা বলে পার পাওয়ার কোনো উপায় নেই যে, জ্বীন শয়তান ও মানুষ শয়তান গুলি তাদেরকে পথভ্রষ্ট করেছিল। আসলে জ্বীন শয়তান, মানুষ শয়তান ও তাদের অনুসারীরা নিজ নিজ স্বাধীন শক্তি ও দেমাগ খাটিয়েই নিজেদের চয়েজে পথভ্রষ্ট হয়েছিল। و الله اعلم بالصواب