মদিনা সনদ : ইসলামী খিলাফত vs সেকুলারদের শয়তানী ব্যাখ্যা

মহানবী ﷺ-এর মদিনা সনদ : মুসলমান আনসার ও মুহাজির এবং অমুসলীমদের মাঝে সম্পাদিত মৈত্রিচুক্তি 

بِسْمِ اللہِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِیۡمِ

الحمد لله و الصلاة و السلام على رسوله محمد و على أله و أمّته


>>> মূল সূচিপত্র (index) থেকে এ পেজের পূর্ববর্তী বা পরবর্তী আলোচনা পড়তে [এখানে ক্লিক করুন


 
পূর্ব আলোচনার পর…
 

কিতাল (সশস্ত্র জিহাদ) -এর প্রথম অনুমতি সহ কুরআনের আয়াত নাজিল হওয়া 

ইমাম ইবনুল কাইয়্যেম রহ.-এখানে খুবই

মহানবী ﷺ-এর ঐতিহাসিক “মদিনার সনদ (دستور المدينة)” বা “মদিনার চুক্তিপত্র (ميثاق المدينة)” বা “মদিনার চুক্তিলিপি (صحيفة المدينة)” ও তার দফা সমূহ 

এসময় মহানবী মুহাম্মাদ মুস্তফা ইয়াসরিব (মদিনা)-এ বসবাসকারী ইহূদী গোত্রগুলির সাথে যেসব রাজনৈতিক মৈত্রিচুক্তিকে -চুক্তিপত্র আকারে প্রস্তুত করিয়ে নিয়েছিলেন, সেটাকেই আরবীতে “ دستور المدينة (দাসতুরুল মাদিনাহ – মদিনা সনদ)” বা “ ميثاق المدينة (মিছাকুল মাদিনাহ – মদিনার চুক্তিনামা)” বা “  صحيفة المدينة (ছহিফাতুল মাদিনাহ – মদিনার চুক্তিলিপি)” নামে উল্লেখ করা হয়ে থাকে। বাংলা ভাষায় এটি “মদিনার সনদ” নামে এবং ইংরেজি ভাষায় এটি Medina charter নামে সমধিক পরিচিত। নিম্নে মদিনা সনদ-এর দফা গুলো উল্লেখ করা হল:- 
 
بِسْمِ اللہِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِیۡمِ (বিসমিল্লাহির রহমানির রাহিম)
 
দফা-১ هَذَا كِتَابٌ مِنْ مُحَمّدٍ النّبِيّ (رسول الله) ﷺ، بَيْنَ الْمُؤْمِنِينَ وَالْمُسْلِمِينَ مِنْ قُرَيْشٍ وَيَثْرِبَ، وَمَنْ تَبِعَهُمْ فَلَحِقَ بِهِمْ وَجَاهَدَ مَعَهُمْ – “এই চুক্তিনামাটি নবী মুহাম্মাদ ()-এর পক্ষ থেকে (তাদের জন্য লিখিত হল, যারা মক্কা থেকে এখানে হিজরত করে এসেছে -সেইসকল মুহাজির) কুরায়েশরা এবং ইয়াসরিবের (তথা মদিনা’র) অধিবাসীদের মধ্য থেকে যারা (আল্লাহ ও তাঁর রাসুল মুহাম্মাদ ﷺ-এর উপরে) ইমান এনে মুসলমান হয়েছে- তাদের জন্য, এবং (তাদেরও জন্য) যারা তাদের অধিনস্ত/অনুগত থেকে তাদের মিত্রে পরিণত হবে ও তাদের সঙ্গী হয়ে (যৌথ ভাবে দুশমনের বিরুদ্ধে সশস্ত্র) জিহাদ করবে”।
 
দফা-২ إنّهُمْ أُمّةٌ وَاحِدَةٌ مِنْ دُونِ النّاسِ – “(যাদের জন্য এই চুক্তিনামাটি লিখিত হল) তারা সকলে এক জাতি (হিসেবে পরিগণিত হবে – বাকি ওইসমস্ত) মানুষের মুকাবেলায় (যারা এই চুক্তিনামা’র অন্তর্ভূক্ত নয়)”।
 
দফা-৩الْمُهَاجِرُونَ مِنْ قُرَيْشٍ عَلَى رِبْعَتِهِمْ يَتَعَاقَلُونَ بَيْنَهُمْ وَهُمْ يَفْدُونَ عَانِيَهُمْ بِالْمَعْرُوفِ وَالْقِسْطِ بَيْنَ الْمُؤْمِنِينَ – “(মক্কা থেকে হিজরত করে আসা) কুরায়েশী মুহাজিরগণ তাদের পূর্ব-নীতির উপরে স্থাপিত থাকবে (যাবৎ না তা ইসলামী শরীয়তের সাথে সাংঘর্ষিক হয়, এবং এ শর্তের  ভিত্তিতেই) –তারা তাদের নিজেদের মাঝে (সংঘটিত রক্তপণের মামলার ক্ষেত্রে) পরষ্পরিক সহযোগীতার ভিত্তিতে (সম্মিলিত ভাবে) রক্তমূল্য লেনদেন করবে এবং তাদের বন্দি-লোকদের (ছাড়িয়ে আনতে) মুক্তিপণও আদায় করবে তারাই। (আর তারা এটা করবে) মুসলমানদের মাঝে পূর্ব-স্বীকৃত-নিয়ম মেনে ও ন্যায়সঙ্গত ভাবে”।
 
দফা-৪ وَبَنُو عَوْفٍ عَلَى رِبْعَتِهِمْ يَتَعَاقَلُونَ مَعَاقِلَهُمْ الْأُولَى، كُلّ طَائِفَةٍ تَفْدِي عَانِيَهَا بِالْمَعْرُوفِ وَالْقِسْطِ بَيْنَ الْمُؤْمِنِينَ – “আর বনু আউফ গোত্র তাদের পূর্ব-নীতির উপরে স্থাপিত থাকবে (যাবৎ না তা ইসলামী শরীয়তের সাথে সাংঘর্ষিক হয়, এবং এ শর্তের  ভিত্তিতেই) –তারা তাদের নিজেদের মাঝে (সংঘটিত রক্তপণের মামলার ক্ষেত্রে) পরষ্পরিক সহযোগীতার ভিত্তিতে (সম্মিলিত ভাবে) তাদের রক্তমূল্য লেনদেন করবে এবং (তাদের) প্রত্যেক উপদল তাদের (নিজেদের) বন্দি-লোকদের (ছাড়িয়ে আনতে) মুক্তিপণও আদায় করবে তারা (নিজেরা)ই। (আর তারা এটা করবে) মুসলমানদের মাঝে পূর্ব-স্বীকৃত-নিয়ম মেনে ও ন্যায়সঙ্গত ভাবে”
 
দফা-৫وَ بَنُو الْحَارِثِ «بنو الخزرج» عَلَى رِبْعَتِهِمْ يَتَعَاقَلُونَ مَعَاقِلَهُمْ الْأُولَى، وَكُلّ طَائِفَةٍ تَفْدِي عَانِيَهَا بِالْمَعْرُوفِ وَالْقِسْطِ بَيْنَ الْمُؤْمِنِينَ – “আর বনু আল-হারিছ (নবু খাযরাজ) গোত্র তাদের পূর্ব-নীতির উপরে স্থাপিত থাকবে (যাবৎ না তা ইসলামী শরীয়তের সাথে সাংঘর্ষিক হয়, এবং এ শর্তের  ভিত্তিতেই) –তারা তাদের নিজেদের মাঝে (সংঘটিত রক্তপণের মামলার ক্ষেত্রে) পরষ্পরিক সহযোগীতার ভিত্তিতে (সম্মিলিত ভাবে) তাদের রক্তমূল্য লেনদেন করবে এবং (তাদের) প্রত্যেক উপদল তাদের (নিজেদের) বন্দি-লোকদের (ছাড়িয়ে আনতে) মুক্তিপণও আদায় করবে তারা (নিজেরা)ই। (আর তারা এটা করবে) মুসলমানদের মাঝে পূর্ব-স্বীকৃত-নিয়ম মেনে ও ন্যায়সঙ্গত ভাবে”।
 
দফা-৬ وَبَنُو سَاعِدَةَ عَلَى رِبْعَتِهِمْ يَتَعَاقَلُونَ مَعَاقِلَهُمْ الْأُولَى، وَكُلّ طَائِفَةٍ مِنْهُمْ تَفْدِي عَانِيَهَا بِالْمَعْرُوفِ وَالْقِسْطِ بَيْنَ الْمُؤْمِنِينَ – “আর বনু সাঈদাহ গোত্র তাদের পূর্ব-নীতির উপরে স্থাপিত থাকবে (যাবৎ না তা ইসলামী শরীয়তের সাথে সাংঘর্ষিক হয়, এবং এ শর্তের  ভিত্তিতেই) –তারা তাদের নিজেদের মাঝে (সংঘটিত রক্তপণের মামলার ক্ষেত্রে) পরষ্পরিক সহযোগীতার ভিত্তিতে (সম্মিলিত ভাবে) তাদের রক্তমূল্য লেনদেন করবে এবং (তাদের) প্রত্যেক উপদল তাদের (নিজেদের) বন্দি-লোকদের (ছাড়িয়ে আনতে) মুক্তিপণও আদায় করবে তারা (নিজেরা)ই। (আর তারা এটা করবে) মুসলমানদের মাঝে পূর্ব-স্বীকৃত-নিয়ম মেনে ও ন্যায়সঙ্গত ভাবে”।
 
দফা-৭ وَبَنُو جُشَمٍ عَلَى رِبْعَتِهِمْ يَتَعَاقَلُونَ مَعَاقِلِهِمْ الْأُولَى، وَكُلّ طَائِفَةٍ مِنْهُمْ تَفْدِي عَانِيَهَا بِالْمَعْرُوفِ وَالْقِسْطِ بَيْنَ الْمُؤْمِنِينَ – “আর বনু জুশাম গোত্র তাদের পূর্ব-নীতির উপরে স্থাপিত থাকবে (যাবৎ না তা ইসলামী শরীয়তের সাথে সাংঘর্ষিক হয়, এবং এ শর্তের  ভিত্তিতেই) –তারা তাদের নিজেদের মাঝে (সংঘটিত রক্তপণের মামলার ক্ষেত্রে) পরষ্পরিক সহযোগীতার ভিত্তিতে (সম্মিলিত ভাবে) তাদের রক্তমূল্য লেনদেন করবে এবং (তাদের) প্রত্যেক উপদল তাদের (নিজেদের) বন্দি-লোকদের (ছাড়িয়ে আনতে) মুক্তিপণও আদায় করবে তারা (নিজেরা)ই। (আর তারা এটা করবে) মুসলমানদের মাঝে পূর্ব-স্বীকৃত-নিয়ম মেনে ও ন্যায়সঙ্গত ভাবে”।
 
দফা-৮وَبَنُو النّجّارِ عَلَى رِبْعَتِهِمْ يَتَعَاقَلُونَ مَعَاقِلَهُمْ الْأُولَى، وَكُلّ طَائِفَةٍ مِنْهُمْ تَفْدِي عَانِيَهَا بِالْمَعْرُوفِ وَالْقِسْطِ بَيْنَ الْمُؤْمِنِينَ  – “আর বনু আন-নাজ্জার গোত্র তাদের পূর্ব-নীতির উপরে স্থাপিত থাকবে (যাবৎ না তা ইসলামী শরীয়তের সাথে সাংঘর্ষিক হয়, এবং এ শর্তের  ভিত্তিতেই) –তারা তাদের নিজেদের মাঝে (সংঘটিত রক্তপণের মামলার ক্ষেত্রে) পরষ্পরিক সহযোগীতার ভিত্তিতে (সম্মিলিত ভাবে) তাদের রক্তমূল্য লেনদেন করবে এবং (তাদের) প্রত্যেক উপদল তাদের (নিজেদের) বন্দি-লোকদের (ছাড়িয়ে আনতে) মুক্তিপণও আদায় করবে তারা (নিজেরা)ই। (আর তারা এটা করবে) মুসলমানদের মাঝে পূর্ব-স্বীকৃত-নিয়ম মেনে ও ন্যায়সঙ্গত ভাবে”।
 
দফা-৯ وَبَنُو عَمْرِو بْنِ عَوْفٍ عَلَى رِبْعَتِهِمْ يَتَعَاقَلُونَ مَعَاقِلَهُمْ الْأُولَى، وَكُلّ طَائِفَةٍ تَفْدِي عَانِيَهَا بِالْمَعْرُوفِ وَالْقِسْطِ بَيْنَ الْمُؤْمِنِينَ – “আর বনু আমর বিন আওফ গোত্র তাদের পূর্ব-নীতির উপরে স্থাপিত থাকবে (যাবৎ না তা ইসলামী শরীয়তের সাথে সাংঘর্ষিক হয়, এবং এ শর্তের  ভিত্তিতেই) –তারা তাদের নিজেদের মাঝে (সংঘটিত রক্তপণের মামলার ক্ষেত্রে) পরষ্পরিক সহযোগীতার ভিত্তিতে (সম্মিলিত ভাবে) তাদের রক্তমূল্য লেনদেন করবে এবং (তাদের) প্রত্যেক উপদল তাদের (নিজেদের) বন্দি-লোকদের (ছাড়িয়ে আনতে) মুক্তিপণও আদায় করবে তারা (নিজেরা)ই। (আর তারা এটা করবে) মুসলমানদের মাঝে পূর্ব-স্বীকৃত-নিয়ম মেনে ও ন্যায়সঙ্গত ভাবে”।
 
দফা-১০وَبَنُو النّبِيتِ عَلَى رِبْعَتِهِمْ يَتَعَاقَلُونَ مَعَاقِلَهُمْ الْأُولَى، وَكُلّ طَائِفَةٍ تَفْدِي عَانِيَهَا بِالْمَعْرُوفِ وَالْقِسْطِ بَيْنَ الْمُؤْمِنِينَ – “আর বনু আন-নাবীত গোত্র তাদের পূর্ব-নীতির উপরে স্থাপিত থাকবে (যাবৎ না তা ইসলামী শরীয়তের সাথে সাংঘর্ষিক হয়, এবং এ শর্তের  ভিত্তিতেই) –তারা তাদের নিজেদের মাঝে (সংঘটিত রক্তপণের মামলার ক্ষেত্রে) পরষ্পরিক সহযোগীতার ভিত্তিতে (সম্মিলিত ভাবে) তাদের রক্তমূল্য লেনদেন করবে এবং (তাদের) প্রত্যেক উপদল তাদের (নিজেদের) বন্দি-লোকদের (ছাড়িয়ে আনতে) মুক্তিপণও আদায় করবে তারা (নিজেরা)ই। (আর তারা এটা করবে) মুসলমানদের মাঝে পূর্ব-স্বীকৃত-নিয়ম মেনে ও ন্যায়সঙ্গত ভাবে”।
 
দফা-১১وَبَنُو الْأَوْسِ عَلَى رِبْعَتِهِمْ يَتَعَاقَلُونَ مَعَاقِلَهُمْ الْأُولَى، وَكُلّ طَائِفَةٍ مِنْهُمْ تَفْدِي عَانِيَهَا بِالْمَعْرُوفِ وَالْقِسْطِ بَيْنَ الْمُؤْمِنِينَ – “আর বনু আল-আওস গোত্র তাদের পূর্ব-নীতির উপরে স্থাপিত থাকবে (যাবৎ না তা ইসলামী শরীয়তের সাথে সাংঘর্ষিক হয়, এবং এ শর্তের  ভিত্তিতেই) –তারা তাদের নিজেদের মাঝে (সংঘটিত রক্তপণের মামলার ক্ষেত্রে) পরষ্পরিক সহযোগীতার ভিত্তিতে (সম্মিলিত ভাবে) তাদের রক্তমূল্য লেনদেন করবে এবং (তাদের) প্রত্যেক উপদল তাদের (নিজেদের) বন্দি-লোকদের (ছাড়িয়ে আনতে) মুক্তিপণও আদায় করবে তারা (নিজেরা)ই। (আর তারা এটা করবে) মুসলমানদের মাঝে পূর্ব-স্বীকৃত-নিয়ম মেনে ও ন্যায়সঙ্গত ভাবে”।
 
দফা-১২وَإِنّ الْمُؤْمِنِينَ لَا يَتْرُكُونَ مُفْرَحًا بَيْنَهُمْ أَنْ يُعْطُوهُ بِالْمَعْرُوفِ فِي فِدَاءٍ أَوْ عَقْلٍ وَأَنْ لَا يُحَالِفَ مُؤْمِنٌ مَوْلَى مُؤْمِنٍ دُونَهُ – “আর (ক) (মদিনার) মুসলমানরা তাদের নিজেদের (মুসলমান ভাই-বোনদের) মধ্য থেকে কাউকেও তার (আদায়যোগ্য) রক্তমূল্য কিংবা মুক্তিপণ-এর দেনার বোঝা’কে (সকলে মিলে সাধ্য মতো) আদায় না করে দিয়ে তাকে (ঋণ পিষ্ট অবস্থায়) দূরে ঠেলে রাখবে না। (খ) এবং কোনো মুসলমান অন্য কোনো মুসলমানের অনুমতি ব্যতিরেকে তার মাওলার (তথা চুক্তিবদ্ধ ভাই/মিত্র’র) সাথে চুক্তিবদ্ধ হবে না”।
 
দফা-১৩:  وَإِنّ الْمُؤْمِنِينَ الْمُتّقِينَ عَلَى مَنْ بَغَى مِنْهُمْ أَوْ ابْتَغَى دَسِيعَةَ ظُلْمٍ أَوْ إثْم أَوْ عُدْوَانٍ، أَوْ فَسَادٍ بَيْنَ الْمُؤْمِنِينَ وَإِنّ أَيْدِيَهُمْ عَلَيْهِ جَمِيعًا، وَلَوْ كَانَ وَلَدَ أَحَدِهِمْ – “আর নিশ্চই মুত্তাক্বী-পরহেজগার মুসলমানগণের (সম্মিলিত) হাত (ঐক্যশক্তি) -ওদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে (সর্বদা) কার্যকর থাকবে, যে ব্যাক্তি তাঁদের বিরুদ্ধে বাগাওয়াত (বিদ্রোহ) করবে, অথবা অন্যায়-উপঢোকন (ঘুষ) চাওয়া বা গুনাহ’র কাজ বা দুশমনী কিংবা মুসলমানদের (ঐক্যের) মাঝে ফ্যাসাদ-বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির পায়তারা করবে। নিশ্চই ওর (মতো দুষ্কৃতিকারীর) বিরুদ্ধে তাদের (মতো মুত্তাক্বী-পরহেজগার মুসলমানগণের) হাত (শক্তি) ঐক্যবদ্ধ থাকবে -এমনকি যদি সে তাদের কারোর সন্তানও হোক না কেনো”।
 
দফা-১৪: وَ لَا يَقْتُلُ مُؤْمِنٌ مُؤْمِنًا فِي كَافِرٍ وَ لَا يَنْصُرُ كَافِرًا عَلَى مُؤْمِنٍ  – “আর এক মুসলমান অপর মুসলমানকে -কোনো কাফেরের বদলায়- হত্যা করবে না, এবং (কোনো মুসলমান অপর) কোনো মুসলমানের বিপক্ষে/বিরুদ্ধে কোনো (হরবী) কাফেরকে সাহায্য করবে না”।
 
দফা-১৫: وَ إِنّ ذِمّةَ اللّهِ وَاحِدَةٌ يُجِير عَلَيْهِمْ أَدْنَاهُمْ – “নিশ্চই (কোনো মুমিন মুসলমান কর্তৃক কোনো ব্যাক্তিকে আমান/নিরাপত্তা দেয়া -তথা কারোর জিম্মাহ নিজের উপরে গ্রহন করা, আর আল্লাহ’র (পক্ষ থেকে ওই ব্যাক্তিকে আমান/নিরাপত্তা দেয়া -তথা ওই ব্যাক্তির) জিম্মাহ (গ্রহন করা মূলত:) একই (কথা)। (মুসলমানদের জন্য বাহ্যত: ক্ষতিকর না হলে) তাদের মধ্যে একজন সাধারণ ব্যাক্তিও (কাউকে তার নিজের) আমান/নিরাপত্তা দিতে পারে, যা(র হক্ব/অধিকার আদায় করা) তাদের (অন্যান্য সকলের) উপরে অপরিহার্য হবে”।
 
দফা-১৬: وَ إِنّ الْمُؤْمِنِينَ بَعْضُهُمْ مَوَالِي بَعْضٍ دُونَ النّاسِ – “আর নিশ্চই অন্য সকল মানুষের মোকাবেলায় মুসলমানরা হল একে অপরের মওলা (শুভ-কামনাকারী বন্ধু/মিত্র/আপন গণ্য হওয়ার মতো ব্যাক্তি)”।
 
দফা-১৭:  وَ إِنَهُ مَنْ تَبِعَنَا مِنْ يَهُودَ فَإِنّ لَهُ النّصْرَ وَالْأُسْوَةَ غَيْرَ مَظْلُومِينَ وَلَا مُتَنَاصَرِينَ عَلَيْهِمْ  – “আর নিশ্চই, ইহূদীদের মধ্যে যে ব্যাক্তি (ইহূদী ধর্মাবলম্বী থাকাবস্থায়েই) আমাদের (মুসলমানদের) অনুগামী/অনুগত্যকারী হবে, তার জন্য থাকবে (মুসলমানদের) সাহায্য এবং (জাগতিক মৌলিক অধিকার বিষয়ে) সমতা; তাদেরকে না (কারোর হাতে) মজলুম হতে দেয়া হবে, আর না তাদের বিরুদ্ধে কেউ (মুসলমানদের) সাহায্য লাভ করবে”।
 
দফা-১৮: وَإِنّ سِلْمَ الْمُؤْمِنِينَ وَاحِدَةٌ لَا يُسَالَمُ مُؤْمِنٌ دُونَ مُؤْمِنٍ فِي قِتَالٍ فِي سَبِيلِ اللّهِ إلّا عَلَى سَوَاءٍ وَعَدْلٍ بَيْنَهُمْ – “আর নিশ্চই (দুশমনদের সাথে) মুসলমানদের (যে কোনো) সন্ধিচুক্তি (হতে) হবে (মুসলীম জামাআতের) এক/অভিন্ন (স্বার্থে)। আল্লাহ’র পথে ক্বিতাল (সশস্ত্র জিহাদ)-এর ক্ষেত্রে কোনো মুসলমান অপর মুসলমানকে বাদ দিয়ে (একক ভাবে দুশমনদের সাথে কোনো রকম) সন্ধিচুক্তি করবে না; তবে সেটা যদি মুসলমানদের মাঝে সাম্যতার ও  ইনসাফের ভিত্তিতে করা হয় তাহলে ভিন্ন কথা”।
 
দফা-১৯:  وَإِنّ كُلّ غَازِيَةٍ غَزَتْ مَعَنَا يُعْقِبُ بَعْضُهَا بَعْضًا – “আর নিশ্চই (ইসলামের চাহিদা মতো মদিনার মুহাজির ও আনসার মুসলমানদের দ্বারা সময়ে সময়ে আমরা যে সকল মুজাহিদ বাহিনী গঠন করবো, তার) প্রতিটি মুজাহিদ-বাহিনী আমাদের সাথি হয়ে জিহাদে অংশ নিতে পালাক্রমে যাওয়া আসা করবে, (কখনো এদের কিছু লোক, কখনো ওদের কিছু লোক অংশ নিবে, যাতে সামর্থবান সকল মুসলমানই দ্বীনের চাহিদা মতো জিহাদে শরীক থাকে, এবং শুধুমাত্র ধরাবাঁধা কিছু মুসলমানের উপরে এ দায়িত্ব সোপর্দ করে অন্যরা দায়িত্বমুক্ত হয়ে অবস্থান করতে না পারে)”।
 
দফা-২০: وَإِنّ الْمُؤْمِنِينَ يُبِئْ بَعْضُهُمْ عَلَى بَعْضٍ بِمَا نَالَ دِمَاءَهُمْ فِي سَبِيلِ اللّهِ – “আর নিশ্চই মুসলমানগণ –আল্লাহ’র পথে তাদের কতক (ভাইদের) প্রবাহিত রক্তের বদলা নিবে অপর কতক (মুসলমান ভাই, কারণ সকল মুসলমান এক দেহের মতো)”।
 
দফা-২১: وَإِنّ الْمُؤْمِنِينَ الْمُتّقِينَ عَلَى أَحْسَنِ هُدًى وَأَقْوَمِهِ – “আর নিশ্চই মুত্তাকী-পরহেজগার মুসলমানগণ (অপরাপর সাধারণ মুসলমানদের চাইতে) অধিকতম নিখুঁত ও পোক্ত ভাবে হেদায়েত (সঠিক পথ)-এর উপরে প্রতিষ্ঠিত থাকে, (সুতরাং, বাহ্যত: যতদূর সম্ভব তাঁদের মর্যাদা ও হক্ব/অধিকার বুঝতে হবে)”।
 
দফা-২২:  وَإِنّهُ لَا يُجِير مُشْرِكٌ مَالًا لِقُرَيْشٍ وَلَا نَفْسَهَا، وَلَا يَحُولُ دُونَهُ عَلَى مُؤْمِنٍ – “আর নিশ্চই (মদিনায় বসবাসকারী ও একই সাথে এই চুক্তিনামা’য় অংশীদারও রয়েছে -এমন কোনো) মুশরেক —(মক্কার) কোনো (মুশরেক) কুরায়েশের -না ধ্বনমালের নিরাপত্তা দিতে পারবে, আর না (পারবে তার) প্রাণের (নিরাপত্তা দিতে)। এমনি ভাবে (মদিনার) সে(ই মুশরেক, মদিনার কোনো) মুসলমানের বিরুদ্ধে অন্য কাউকে তা করতে দিবে না”।
 
দফা-২৩: وَإِنّهُ مَنْ اعْتَبَطَ مُؤْمِنًا قَتْلًا عَنْ بَيّنَةٍ فَإِنّهُ قَوَدٌ بِهِ إلّا أَنْ يَرْضَى وَلِيّ الْمَقْتُولِ وَإِنّ الْمُؤْمِنِينَ عَلَيْهِ كَافّةٌ وَلَا يَحِلّ لَهُمْ إلّا قِيَامٌ عَلَيْهِ – “আর নিশ্চই যে ব্যাক্তি কোনো (নিরপরাধ) মুসলমানকে জেনেবুঝে (না-হক্ব ভাবে) হত্যা করবে ও তা (শরয়ী ভাবে) প্রমাণিত হবে, ও(ই খুনি)কেও অবশ্যই ও(ই নিহতে)র বদলে (কিসাস স্বরূপ) হত্যা করা হবে, তবে নিহতের ওলী (আত্বীয়-স্বজন)রা যদি (নিহতের রক্তমূল্য নিতে বা খুনিকে ক্ষমা করে দিতে) রাজি হয় তাহলে ভিন্ন কথা, (তখন খুনিকে কিসাস স্বরূপ হত্যা করা হবে না)। আর (তখন বাকি) মুসলমানদের সকলের কর্তব্য হবে ও(ই ফয়সালা)র উপরে (ঐক্যবদ্ধ থাকা); তাদের জন্য এটা হালাল নয় যে তারা ও(ই ফয়সালা)র উপরে (ঐক্যবদ্ধ থাকা) ব্যাতীত অন্য কিছু করে বসবে”।
 
দফা-২৪: وَ إِنّهُ لَا يَحِلّ لِمُؤْمِنٍ أَقَرّ بِمَا فِي هَذِهِ الصّحِيفَةِ وَآمَنَ بِاَللّهِ وَالْيَوْمِ الْآخِرِ أَنْ يَنْصُرَ مُحْدِثًا وَلَا يُؤْوِيهِ وَأَنّهُ مَنْ نَصَرَهُ أَوْ آوَاهُ فَإِنّ عَلَيْهِ لَعْنَةَ اللّهِ وَغَضَبَهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ? وَلَا يُؤْخَذُ مِنْهُ صَرْفٌ وَلَا عَدْلٌ – “আর নিশ্চই কোনো মুসলমান -যে এই চুক্তিনামা’র (বিদ্যমান ধারা গুলোর) মধ্যে যাকিছু আছে তা স্বীকার করে নিয়েছে এবং আল্লাহ ও আখেরাতের দিবসের ব্যাপারে ইমান রাখে- তার জন্য এটা হালাল নয় যে, সে (এ চুক্তিপত্রের বিষয়াবলীর সাথে সাংঘর্ষিক) কোনো মুহদিছ (নতুন বিধান আনায়নকারীকে/দুষ্কৃতিকারীকে)কে সাহায্য করবে ও তাকে আশ্রয় দিবে। আর নিশ্চই যে ব্যাক্তি তাকে সাহায্য করবে এবং তাকে আশ্রয় দিবে, তার উপরে আল্লাহ’র লা’নত হবে এবং কেয়ামতের দিবসে (ওর উপরে) তাঁর গজব পড়বে। তার কাছ থেকে -না ছারফ (তাওবা) গ্রহন করা হবে, আর না আদল (ফিদয়া/বদলা)”।
 
দফা-২৫:  وَإِنّكُمْ مَهْمَا اخْتَلَفْتُمْ فِيهِ مِنْ شَيْءٍ فَإِنّ مَرَدّهُ إلَى اللّهِ عَزّ وَجَلّ وَإِلَى مُحَمّدٍ صَلّى اللّهُ عَلَيْهِ وَسَلّمَ – “আর তোমরা যে বিষয় নিয়েই মতবিরোধে লিপ্ত হও না কেনো, সেটাকে (তোমাদের একমাত্র প্রভু প্রতিপালক) আল্লাহ আযযা ওয়া জাল্লার (বিধান কুরআনের) কাছে এবং (তাঁর রাসুল) মুহাম্মাদ -এর কাছে সোপর্দ করবে”।
 
দফা-২৬: وَ إِنّ الْيَهُودَ يُنْفِقُونَ مَعَ الْمُؤْمِنِينَ مَا دَامُوا مُحَارَبِينَ – “আর নিশ্চই (মদিনার হিফাজতের জন্য) যতদিন পর্যন্ত (মদিনার) ইহুদী (সম্প্রদায়, মদিনার) মুসলমানদের সাথে সহযোদ্ধা হিসেবে থাকবে, ততদিন পর্যন্ত তারা (তাদের যুদ্ধের যাবতীয়) ব্যায়ভার বহন করবে, (আর মুসলমানরা তাদের নিজেদের যুদ্ধের ব্যয়ভার বহন করবে)”।
 
দফা-২৭: وَ إِنّ يَهُودَ بَنِي عَوْفٍ أُمّةٌ مَعَ الْمُؤْمِنِينَ لِلْيَهُودِ دِينُهُمْ وَ لِلْمُسْلِمَيْنِ دِينُهُمْ مَوَالِيهِمْ وَ أَنْفُسُهُمْ إلّا مَنْ ظَلَمَ وَ أَثِمَ فَإِنّهُ لَا يُوتِغُ إلّا نَفْسَهُ وَ أَهْلَ بَيْتِهِ – “আর (মদিনার) ইহূদীদের বনু আউফ গোত্রটি মুসলমানদের সাথে (রাজনৈতিক মৈত্রীর দৃষ্টিকোণ থেকে) একদল (হিসেবে গণ্য হবে)। (তবে) ইহূদীদের জন্য থাকবে তাদের ধর্ম (পালনের অধিকার), আর মুসলমানদের জন্য থাকবে তাদের ধর্ম (পালনের অধিকার)। তারা নিজেরা ও তাদের মিত্ররা (এক্ষেত্রে একই গণ্য হবে)। তবে যে জুলুম করবে গুনাহ করবে, সে শুধু তার নিজের ও তার পরিবারের সদস্যদের ছাড়া আর কারোর ক্ষতি করবে না”
 
দফা-২৮: وَإِنّ لِيَهُودِ بَنِي النّجّارِ مِثْلَ مَا لِيَهُودِ بَنِي عَوْفٍ – “আর (মদিনার) ইহূদীদের বনু নাজ্জার গোত্রটির জন্য থাকবে -ইহূদীদের বনু আউফ গোত্রটির অনুরূপ (অধিকার)”।
 
দফা-২৯: وَ إِنّ لِيَهُودِ بَنِي الْحَارِثِ مِثْلَ مَا لِيَهُودِ بَنِي عَوْفٍ – “আর (মদিনার) ইহূদীদের বনু আল-হারিছ গোত্রটির জন্য থাকবে -ইহূদীদের বনু আউফ গোত্রটির অনুরূপ (অধিকার) ”।
 
দফা-৩০: وَ إِنّ لِيَهُودِ بَنِي سَاعِدَةَ مَا لِيَهُودِ بَنِي عَوْفٍ – “আর (মদিনার) ইহূদীদের বনু সাঈদাহ গোত্রটির জন্য থাকবে -ইহূদীদের বনু আউফ গোত্রটির অনুরূপ (অধিকার)”।
 
দফা-৩১: وَ إِنّ لِيَهُودِ بَنِي جُشَمٍ مِثْلَ مَا لِيَهُودِ بَنِي عَوْفٍ – “আর (মদিনার) ইহূদীদের বনু জুশাম গোত্রটির জন্য থাকবে -ইহূদীদের বনু আউফ গোত্রটির অনুরূপ (অধিকার) ”।
 
দফা-৩২: وَ إِنّ لِيَهُودِ بَنِي الْأَوْسِ مِثْلَ مَا لِيَهُودِ بَنِي عَوْفٍ – “আর (মদিনার) ইহূদীদের বনু আল-আওস গোত্রটির জন্য থাকবে -ইহূদীদের বনু আউফ গোত্রটির অনুরূপ (অধিকার)”
 
দফা-৩৩: وَ إِنّ لِيَهُودِ بَنِي ثَعْلَبَةَ مِثْلَ مَا لِيَهُودِ بَنِي عَوْفٍ إلّا مَنْ ظَلَمَ وَ أَثِمَ فَإِنّهُ لَا يُوتِغُ إلّا نَفْسَهُ وَ أَهْلَ بَيْتِهِ – “আর (মদিনার) ইহূদীদের বনু ছা’লাবাহ গোত্রটির জন্য থাকবে -ইহূদীদের বনু আউফ গোত্রটির অনুরূপ (অধিকার)। তবে যে জুলুম করবে গুনাহ করবে, সে শুধু তার নিজের ও তার পরিবারের সদস্যদের ছাড়া আর কারোর ক্ষতি করবে না”।
 
দফা-৩৪: وَ إِنّ جَفْنَةَ بَطْنٌ مِنْ ثَعْلَبَةَ كَأَنْفُسِهِمْ – “আর (মদিনার ইহূদীদের বনু) ছা’লাবাহ গোত্রটির শাখাগোত্র ‘জাফনাহ’ -(তাদের মূল গোত্র বনু ছা’লাবাহ’র) নিজেদের মতোই (গণ্য হবে)”।
 
দফা-৩৫: وَ إِنّ لِبَنِي الشّطِيبَةِ مِثْلَ مَا لِيَهُودِ بَنِي عَوْفٍ  – “আর (মদিনার) ইহূদীদের বনু আশ-শাতীবাহ গোত্রটির জন্য থাকবে -ইহূদীদের বনু আউফ গোত্রটির অনুরূপ (অধিকার)”।
 
দফা-৩৬:  وَ إِنّ الْبِرّ دُونَ الْإِثْمِ  – “আর নিশ্চই (সকলের তরফ থেকে) সৎকর্ম (কাম্য); কু-কর্ম/পাপ (নয়)”।
 
দফা-৩৭: وَإِنّ مَوَالِيَ ثَعْلَبَةَ كَأَنْفُسِهِمْ – “আর (মদিনার ইহূদীদের বনু) ছা’লাবাহ গোত্রটির মাওলা (মিত্রপক্ষ)রা -বনু ছা’লাবাহ’র মতোই (গণ্য হবে)”।
 
দফা-৩৮: وَإِنّ بِطَانَةَ يَهُودَ كَأَنْفُسِهِمْ  – “আর নিশ্চই, (মদিনার) ইহূদীদের শাখা-গোত্র গুলো তাদের (স্ব স্ব) মূল গোত্রগুলোর মতোই (গণ্য হবে)”।
 
দফা-৩৯:  وَإِنّهُ لَا يَخْرَجُ مِنْهُمْ أَحَدٌ إلّا بِإِذْنِ مُحَمّدٍ صَلّى اللّهُ عَلَيْهِ وَسَلّمَ – “আর নিশ্চই, মুহাম্মাদ ﷺ-এর অনুমতি ব্যতিরেকে তাদের মধ্যে থেকে কেউই (কোনো যুদ্ধাভিজানে) বের হতে পারবে না”।
 
দফা-৪০وَإِنّهُ لَا يُنْحَجَز عَلَى ثَأْرٍ جُرْحٌ – “আর নিশ্চই, (কোনো আহতকারীর কাছ থেকে) কোনো আঘাতের বদলা/বিনিময় নেয়ার ক্ষেত্রে (এই চুক্তিপত্রটি কোনোরূপ) প্রতিবন্ধক হবে না।  ”।
 
দফা-৪১وَإِنّهُ مَنْ فَتَكَ فَبِنَفْسِهِ فَتَكَ وَأَهْلِ بَيْتِهِ إلّا مِنْ ظَلَمَ وَإِنّ اللّهَ عَلَى أَبَرّ هَذَا  – “আর নিশ্চই, যে ব্যাক্তি রক্তপাত ঘটাবে, ওই রক্তপাতের দায় সে নিজে ও তার পরিবারের সদস্যরা বহন করবে, (চুক্তিপত্রে শরীকরা তা বহন করবে না)। তবে ব্যাতিক্রম সে, যার সাথে জুলুম করা হয়েছে। আর নিশ্চই আল্লাহ (তাআলা) এক্ষেত্রে সব থেকে অধিক সততার উপরে প্রতিষ্ঠিত (সত্ত্বা)”।
 
দফা-৪২وَإِنّ عَلَى الْيَهُودِ نَفَقَتَهُم وَعَلَى الْمُسْلِمِينَ نَفَقَتَهُم وَإِنّ بَيْنَهُمْ النّصْرَ عَلَى مَنْ حَارَبَ أَهْلَ هَذِهِ الصّحِيفَةِ وَإِنّ بَيْنَهُمْ النّصْحَ وَالنّصِيحَةَ وَالْبِرّ دُونَ الْإِثْمِ – “আর নিশ্চই ইহূদীদের উপরে থাকবে তাদের (যুদ্ধ ও নিরাপত্তার) ব্যয়ভার, আর মুসলমানদের উপরে থাকবে তাদের (যুদ্ধ ও নিরাপত্তার) ব্যয়ভার। আর নিশ্চই যারা এই চুক্তিনামার সদস্যদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে, তাদের বিরুদ্ধে (মুসলমান ও ইহূদী) উভয় পক্ষ পরষ্পরে মিলে সাহায্যে এগিয়ে আসবে। আর অবশ্যই তারা একে অপরের উপকারকামী ও কল্যানকামী হবে, এবং (পরষ্পরের জন্য যথাসম্ভব) পুণ্যকাজ করবে, (একে অপরের বিরুদ্ধে কোনো রকম) কু-কর্ম করবে না”।
 
দফা-৪৩: وَإِنّهُ لَمْ يَأْثَمْ امْرُؤٌ بِحَلِيفِهِ  – “আর নিশ্চই (এই চুক্তিনামার সদস্যদের মধ্যে) কাউকে তার হালীফ (মিত্র)-এর অপরাধের কারণে অপরাধী হিসেবে গণ্য করা যাবে না”।
 
দফা-৪৪:  وَ إِنّ النّصْرَ لِلْمَظْلُومِ وَ إِنّ الْيَهُودَ يُنْفِقُونَ مَعَ الْمُؤْمِنِينَ مَا دَامُوا مُحَارَبِينَ – “আর নিশ্চই মজলুমের জন্য থাকবে (মুসলমান ও ইহূদী -উভয় পক্ষের পরষ্পরিক যৌথ) সাহায্য। আর নিশ্চই (মদিনার হিফাজতের জন্য) যতদিন পর্যন্ত (মদিনার) ইহুদী (সম্প্রদায়, মদিনার) মুসলমানদের সাথে সহযোদ্ধা হিসেবে থাকবে, ততদিন পর্যন্ত তারা (তাদের যুদ্ধের যাবতীয়) ব্যায়ভার বহন করবে, (আর মুসলমানরা তাদের নিজেদের যুদ্ধের ব্যয়ভার বহন করবে)”।
 
দফা-৪৫: وَإِنّ يَثْرِبً حَرَامٌ جَوْفُهَا لِأَهْلِ هَذِهِ الصّحِيفَةِ  – “আর নিশ্চই এই চুক্তিনামার সদস্যদের জন্য ইয়াছরিব (মদিনা)-এর ভিতরভাগটি ‘হারাম’ (সম্মানীত ও নিরাপদ স্থান) গণ্য হবে; (মুসলমান ও ইহূদী -উভয় পক্ষকে এর যথাযথ সম্মান রক্ষা করে চলতে হবে, ফলে এর মধ্যে তারা কোনো প্রকার খুন-খারাবী, ফিতনা ফ্যাসাদ কলহ কোন্দল ইত্যাদি সংঘটিত করতে পারবে না)”।
 
দফা-৪৬: وَإِنّ الْجَارَ كَالنّفْسِ غَيْرَ مُضَارّ وَلَا آثِمٌ وَإِنّهُ لَا تُجَارُ حُرْمَةٌ إلّا بِإِذْنِ أَهْلِهَا – “আর নিশ্চই (এই চুক্তিনামার অংশীদার সদস্যদের দেয়া) নিরাপত্তাপ্রাপ্ত ব্যাক্তি মূলত: (চুক্তিনামার) মূল সদস্যর মতোই (নিরাপত্তাপ্রাপ্ত গণ্য হবে) -যদি না (সেই নিরাপত্তাপ্রাপ্ত ব্যাক্তিটি চুক্তিনামার সদস্যদের জন্য) ক্ষতিকারক ও অপরাধী (প্রমাণিত) হয়। আর অবশ্যই সংশ্লিষ্ট এলাকার অধিবাসীদের অনুমতি ব্যাতিরেকে কাউকে নিরাপত্তা-আশ্রয় দেয়া যাবে না”।
 
দফা-৪৭: وَإِنّهُ مَا كَانَ بَيْنَ أَهْلِ هَذِهِ الصّحِيفَةِ مِنْ حَدَثٍ أَوْ اشْتِجَار يُخَافُ فَسَادُهُ فَإِنّ مَرَدّهُ إلَى اللّهِ عَزّ وَجَلّ وَإِلَى مُحَمّدٍ رَسُولِ اللّهِ صَلّى اللّهُ عَلَيْهِ وَسَلّمَ وَإِنّ اللّهَ عَلَى أَتْقَى مَا فِي هَذِهِ الصّحِيفَةِ وَأَبَرّهِ – “আর নিশ্চই এই চুক্তিনামার সদস্যদের মাঝে যদি এমন কোনো সমস্যা বা বিবাদ সৃষ্টি হয়, যা থেকে (সমাজে) ফ্যাসাদ বাঁধার আশংকা থাকে, তাহলে অবশ্যই বিষয়টিকে (মানুব জাতির একমাত্র প্রভু প্রতিপালক) আল্লাহ আযযা ওয়া জাল্লার (বিধান কুরআনের) কাছে এবং আল্লা’র রাসুল মুহাম্মাদ -এর কাছে সোপর্দ করতে হবে। আর যে ব্যাক্তি এই চুক্তিনামায় যাকিছু আছে সে ব্যাপারে অধিকতর পরহেজগার ও ন্যায়নিষ্ঠ থাকবে, নিশ্চই তার উপরে থাকবে আল্লাহ(র রহমত)”।
 
দফা-৪৮: وَإِنّهُ لَا تُجَارُ قُرَيْشٌ وَلَا مَنْ نَصَرَهَا  – “আর নিশ্চই (মক্কার) কুরায়েশ (মুশরেকদেরকে) এবং যে ব্যাক্তি কুরায়েশ’কে সাহায্য করে -তাদেরকে নিরাপত্তা-আশ্রয় দেয়া যাবে না”।
 
দফা-৪৯:  وَإِنّ بَيْنَهُمْ النّصْرَ عَلَى مَنْ دَهَمَ يثْرِبَ – “আর নিশ্চই, যারা ইয়াসরিব (মদিনা)-এর উপরে অতর্কিত আক্রমন করবে, তাদেরকে মোকাবেলা করার জন্য -(এই চুক্তিনামায় অংশীদার মুসলমান ও ইহূদী পক্ষ যারা আছে) তারা পরষ্পরকে সাহায্য করবে”।
 
দফা-৫০:   وَإِذَا دُعُوا إلَى صُلْحٍ يُصَالِحُونَهُ وَيَلْبَسُونَهُ فَإِنّهُمْ يُصَالِحُونَهُ وَيَلْبَسُونَهُ وَإِنّهُمْ إذَا دُعُوا إلَى مِثْلِ ذَلِكَ فَإِنّهُ لَهُمْ عَلَى الْمُؤْمِنِينَ إلّا مَنْ حَارَبَ فِي الدّينِ عَلَى كُلّ أُنَاسٍ حِصّتُهُمْ مِنْ جَانِبِهِمْ الّذِي قِبَلَهُمْ – “(ক) আর (এই চুক্তিনামায় অংশীদার ইহূদী যারা আছে) তাদেরকে যখন (এমন) সন্ধির জন্য আহবান করা হবে যা -(এই চুক্তিনামায় অংশীদার মুসলমানরা যারা আছে) তারা সম্পাদন করছে ও তাতে শামিল হচ্ছে, তখন ইহূদীরাও তা করবে ও তাতে শামিল হবে। একই ভাবে (এই চুক্তিনামায় অংশীদার মুসলমানরা যারা আছে) তাদেরকে যখন অনুরূপ বিষয়ে আহবান করা হবে, তখন তাদের জন্যও মুসলমানদের উপরে (অধিকার থাকবে একই রকম সারা পাবার) -শুধু ওই ব্যাক্তির কথা আলাদা, যে দ্বীনের ব্যাপারে যুদ্ধ করছে। (খ) (এই চুক্তিনামায় অংশীদার) প্রত্যেক পক্ষের উপরে তাদের নিজ নিজ এলাকার অংশের দিকগুলোর (রক্ষার) দায়িত্ব থাকবে”।
 
দফা-৫১: وَإِنّ يَهُودَ الْأَوْسِ، مَوَالِيَهُمْ وَأَنْفُسَهُمْ عَلَى مِثْلِ مَا لِأَهْلِ هَذِهِ الصّحِيفَةِ مَعَ الْبِرّ الْمَحْضِ مِنْ أَهْلِ هَذِهِ الصّحِيفَةِ – “আর (ইয়াসরিবের বনু) আল-আওস (গোত্রের) ইহূদীরা নিজেরা ও তাদের মিত্ররা -এই চুক্তিনামার সদস্যদের অনুরূপ শর্তাবলির উপরে স্থাপিত থাকবে এবং তারা এই চুক্তিনামার সদস্যদের সাথে পূর্ণ বিশ্বস্থতা রক্ষা করবে”।
 
দফা-৫২:  وَإِنّ الْبِرّ دُونَ الْإِثْمِ لَا يَكْسِبُ كَاسِبٌ إلّا عَلَى نَفْسِهِ وَإِنّ اللّهَ عَلَى أَصْدَقِ مَا فِي هَذِهِ الصّحِيفَةِ وَأَبَرّهِ، وَإِنّهُ لَا يَحُولُ هَذَا الْكِتَابُ دُونَ ظَالِمٍ وَآثِمٍ – “আর নিশ্চই কু-কর্ম নয়, বরং সৎকর্ম(ই কাম্য ও ফলদায়ক) যা উপার্জনকারী কেবল তার নিজের জন্য উপার্জন করতে পারে। আর যে ব্যাক্তি এই চুক্তিনামায় যাকিছু আছে সে ব্যাপারে অধিকতর বিশ্বস্ত ও নিষ্ঠাবান থাকবে, নিশ্চই তার উপরে থাকবে আল্লাহ(র রহমত)। আর এই চুক্তিনামাটি কোনো জালেম ও পাপী-অপরাধীর জন্য সহায়ক হবে না”।
 
দফা-৫৩: وَإِنّهُ مَنْ خَرَجَ آمِنٌ وَمَنْ قَعَدَ آمِنٌ بِالْمَدِينَةِ، إلّا مَنْ ظَلَمَ أَوْ أَثِمَ وَإِنّ اللّهَ جَارٌ لِمَنْ بَرّ وَاتّقَى، مُحَمّدٍ رَسُولُ اللّهِ صَلّى اللّهُ عَلَيْهِ وَسَلّمَ – “আর নিশ্চই (এই চুক্তিনামা’র শর্তাবলি মেনে) যে ব্যাক্তি (যুদ্ধের জন্য) বের হবে সেও নিরাপত্তা পাবে, আবার যে (যুদ্ধে বের না হয়ে) মদিনায় বসে থাকবে সেও নিরাপত্তা পাবে -শুধু সে ছাড়া, যে জুলুম ও অপরাধ করবে। আর নিশ্চই আল্লাহ তার প্রতিবেশি যে সৎকর্ম করে ও পরহেজগারী এখতিয়ার করে, (একই ভাবে) আল্লাহ’র রাসুল মুহাম্মাদ ﷺও (তার সঙ্গি)”।
 
 
 
[বিস্তারিত দেখতে: সিরাতুন নাবাউইয়্যাহ, ইবনে হিশাম- ২/৩৫০; আল-বাদউ ওয়াত তারিখ, ইমাম ইবনু ত্বাহির আল-মাকদিসী- ৫/১৫৩-১৫৪; আল-বিদায়াহ ওয়ান নিহায়া, ইবনে কাসির– ৪/৫৫৪; সিরাতুন নাবাউইয়্যাহ, ইমাম ইবনে কাসির- ২/৩২২; মাজমুআতুল ওয়াছায়েক্বীস সিয়াসিয়্যাহ, ড. মুহাম্মাদ হামিদুল্লাহ- ৫৯-৬২ পৃষ্ঠা; আল-মুজতামাউল মাদানী ফি আহদিন নুবুওয়াহ, ড. আরকাম জিয়া আল-উমারী- ১২১, ১২২ পৃষ্ঠা; আছ-ছাহিফাতু মিছাকুর রাসুল, ড. বুরহান জারিক- ৩-৫৬৪ পৃষ্ঠা; ওয়াছিকাতুল মাদিনাহ আল-মাদ্বমুন ওয়াদ্দালালাতি, আহমদ ক্বায়েদ আশ-শুআইবী- ৪১-৪৬ পৃষ্ঠা] https://shamela.ws/book/9758/187    https://www.alkawsar.com/bn/article/917/
 
 
 
ইমাম ইবনুল কাইয়্যেম রহ.-এখানে খুবই চমৎকার ভাবে সংক্ষেপে রাসুলুল্লাহ ﷺ-এর নবুওত লাভের পর থেকে নিয়ে জমিনের বুকে আল্লাহ’র দ্বীনকে পরিপূর্ণ রূপে কাায়েম করার জন্য কাফের-মুশরেকদের বিরুদ্ধে ক্বিতাল/সমর-জিহাদের নির্দেশ দানের পর ইসলামের দৃষ্টিতে কাফেরদের যে তিনটি ভাগের কথা বলেছে, তা মাথায় রাখলে আমাদের আলোচনা বোঝা সহজ হয়ে যাবে, ইনশাআল্লাহ। 
 
 
 
 
 
 
http://site.eastlaws.com/Dostor/DostorElmadina/Dostor_Elmadian_Show
 
দেওবন্দ http://darululoom-deoband.com/arabic/articles/tmp/1569732831%2014-Dirasat-1-2_1434_6.htm
 
সাঈদ বিন 
http://hrlibrary.umn.edu/arab/IS-1.html
 
ইবনে কাসির https://www.islamweb.net/ar/fatwa/260170/%D8%A7%D9%84%D9%85%D9%8A%D8%AB%D8%A7%D9%82-%D8%A7%D9%84%D8%B0%D9%8A-%D9%88%D8%B6%D8%B9%D9%87-%D8%A7%D9%84%D9%86%D8%A8%D9%8A-%D8%B5%D9%84%D9%89-%D8%A7%D9%84%D9%84%D9%87-%D8%B9%D9%84%D9%8A%D9%87-%D9%88%D8%B3%D9%84%D9%85-%D9%84%D9%84%D9%85%D8%B3%D9%84%D9%85%D9%8A%D9%86-%D8%A8%D8%A7%D9%84%D9%85%D8%AF%D9%8A%D9%86%D8%A9
 
সাল্লাবী https://resalapost.com/2019/07/10/%D9%88%D8%AB%D9%8A%D9%82%D8%A9-%D8%A7%D9%84%D9%85%D8%AF%D9%8A%D9%86%D8%A9-%D8%A7%D9%84%D9%85%D9%86%D9%88%D8%B1%D8%A9-%D8%AF%D8%B3%D8%AA%D9%88%D8%B1-%D8%A7%D9%84%D8%AF%D9%88%D9%84%D8%A9-%D8%A7%D9%84/
 
আল কাউসার https://www.alkawsar.com/bn/article/884/
 
https://en.wikipedia.org/wiki/Constitution_of_Medina
 
ব্যাখ্যা: https://www.islamweb.net/ar/article/33973/%D8%B5%D8%AD%D9%8A%D9%81%D8%A9-%D8%A7%D9%84%D9%85%D8%AF%D9%8A%D9%86%D8%A9
 
 
 
 
 
 
 
 
 

>>> মূল সূচিপত্র (index) থেকে এ পেজের পূর্ববর্তী বা পরবর্তী আলোচনা পড়তে [এখানে ক্লিক করুন