হক্ব ও সত্যকে জেনে বুঝে অস্বীকার ও গোপন করার ভয়াবহতা : কুরআনের আয়াত
بِسْمِ اللہِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِیۡمِ
الحمد لله و الصلاة و السلام على رسوله محمد و على أله و أمّته
[উল্লেখ্য, এখানে উল্লেখিত আয়াত সমূহ ও অনুবাদ’কে কোনো বিজ্ঞ মুহাক্কেক আলেমের পরামর্শ ব্যাতীত কারো কাছে বর্ণনা করা থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দিচ্ছি, যাতে আমার অযোগ্যতার কারণে এখানে কোনো উল্লেখযোগ্য ভুল হয়ে থাকলে তা সংশোধন করে নেয়ার আগেই মানব সমাজে ছড়িয়ে না যায়। এগুলো পড়ুন ইলম অর্জনের জন্য এবং যোগ্য আলেম থেকে তা বুঝিয়ে নিন। আর কোনো যোগ্য চোখে উল্লেখযোগ্য ভুল ধরা পড়লে তা আমাকে অবগত করুন।]
আল্লাহ তাআলা এরশাদ করেন-
قُلْ آمَنَّا بِاللَّهِ وَمَا أُنزِلَ عَلَيْنَا وَمَا أُنزِلَ عَلَىٰ إِبْرَاهِيمَ وَإِسْمَاعِيلَ وَإِسْحَاقَ وَيَعْقُوبَ وَالْأَسْبَاطِ وَمَا أُوتِيَ مُوسَىٰ وَعِيسَىٰ وَالنَّبِيُّونَ مِن رَّبِّهِمْ لَا نُفَرِّقُ بَيْنَ أَحَدٍ مِّنْهُمْ وَنَحْنُ لَهُ مُسْلِمُونَ – وَمَن يَبْتَغِ غَيْرَ الْإِسْلَامِ دِينًا فَلَن يُقْبَلَ مِنْهُ وَهُوَ فِي الْآخِرَةِ مِنَ الْخَاسِرِينَ – كَيْفَ يَهْدِي اللَّهُ قَوْمًا كَفَرُوا بَعْدَ إِيمَانِهِمْ وَشَهِدُوا أَنَّ الرَّسُولَ حَقٌّ وَجَاءَهُمُ الْبَيِّنَاتُ ۚ وَاللَّهُ لَا يَهْدِي الْقَوْمَ الظَّالِمِينَ – أُولَٰئِكَ جَزَاؤُهُمْ أَنَّ عَلَيْهِمْ لَعْنَةَ اللَّهِ وَالْمَلَائِكَةِ وَالنَّاسِ أَجْمَعِينَ – خَالِدِينَ فِيهَا لَا يُخَفَّفُ عَنْهُمُ الْعَذَابُ وَلَا هُمْ يُنظَرُونَ – إِلَّا الَّذِينَ تَابُوا مِن بَعْدِ ذَٰلِكَ وَأَصْلَحُوا فَإِنَّ اللَّهَ غَفُورٌ رَّحِيمٌ – إِنَّ الَّذِينَ كَفَرُوا بَعْدَ إِيمَانِهِمْ ثُمَّ ازْدَادُوا كُفْرًا لَّن تُقْبَلَ تَوْبَتُهُمْ وَأُولَٰئِكَ هُمُ الضَّالُّونَ – إِنَّ الَّذِينَ كَفَرُوا وَمَاتُوا وَهُمْ كُفَّارٌ فَلَن يُقْبَلَ مِنْ أَحَدِهِم مِّلْءُ الْأَرْضِ ذَهَبًا وَلَوِ افْتَدَىٰ بِهِ ۗ أُولَٰئِكَ لَهُمْ عَذَابٌ أَلِيمٌ وَمَا لَهُم مِّن نَّاصِرِينَ
‘বলো, আমরা ইমান আনলাম আল্লাহর প্রতি এবং আমাদের উপরে যা নাজিল হয়েছে (তার প্রতি) এবং যা নাজিল হয়েছিল ইব্রাহিম, ইসমাঈল, ইসহাক, ইয়াকুব ও আসবাত্বের উপরে (তার প্রতি) এবং যা দেয়া হয়েছিল মুসা, ঈসা ও (অন্যান্য) নবীদেরকে তাদের রবের পক্ষ থেকে (তার প্রতি)। আমরা তাঁদের কারোর মাঝেও পার্থক্য করিনা এবং আমরা তাঁর কাছে মুসলিমুন (আত্বসমর্পণকারী বান্দাবৃন্দ)। আর যে ব্যাক্তি ইসলাম ছাড়া অন্য কিছুকে (তার নিজের) দ্বীন (বিশ্বাস, ধর্ম, মতাদর্শ) হিসেবে পেতে চাইবে, সেটা মোটেও তার থেকে কবুল করা হবে না, আর সে আখেরাতে হবে ক্ষতিগ্রস্থদের মধ্যে গণ্য। যারা ইমান আনার পর (জেনে বুঝে আবারো আল্লাহ’র সাথে) কুফরী করে, আল্লাহ কি করে (সেই) গোষ্ঠিকে পথ দেখাতে পারেন, অথচ (ইতিপূর্বে) তারা সাক্ষ্য দিয়েছিল যে, (আল্লাহ’র) রাসুল (মুহাম্মাদ একজন) সত্য (নবী) এবং (তাঁর মাধ্যমেই) তাদের কাছে আল-বাইয়্যেনাহ এসেছিল! বস্তুত: আল্লাহ কোনো জালেম/অবিচারকারী গোষ্ঠিকে পথ দেখান না। ওদের (সঠিক) প্রতিদান হল তাদের উপরে আল্লাহ’র, ফেরেশতাদের এবং সকল মানুষের অভিশাপ (বর্ষিত) হোক। তারা (হবে দোযখের অধিবাসী এবং তাতে (তারা) আজীবন থাকবে। তাদের থেকে না আযাবকে হ্রাস করা হবে আর না তাদের প্রতি দৃষ্টি দেয়া হবে। অবশ্য তাদের কথা আলাদা, যারা এর পর (আল্লাহ’র কাছে) তাওবাহ করে এবং (নিজকে) সংশোধন করে, তখন নিশ্চই আল্লাহ (এদের মতো ব্যাক্তিদের জন্য) গাফুরুর রাহিম (হিসেবে ব্যবহার করবেন)। যারা ইমান আনায়নের পর কুফরী করে, এরপর (এই) কুফরীকে বৃদ্ধি করে নেয়, তাদের তওবাকে কক্ষনই কবুল করা হবে না। আর ওরাই হল পথভ্রষ্ঠ। আর যারা কুফরী করে এবং কাফের অবস্থায় মাড়া যায়, তারা যদি (কুফরীর কাফফারা হিসেবে) পৃথিবীর সমপরিমাণ স্বর্ণ দিয়েও ফিদিয়া দেয়, তবুও তাদের কারো থেকে তা কক্ষনই কবুল করা হবে না। তাদের জন্য রয়েছে মর্মন্তুদ আযাব এবং (সে আযাব থেকে বাঁচানোর মতো) তাদের জন্য কোনো সাহায্যকারী থাকবে না ।’ । [সূরা আল-ইমরান ৮৪-৯১]
لَمْ يَكُنِ الَّذِينَ كَفَرُوا مِنْ أَهْلِ الْكِتَابِ وَالْمُشْرِكِينَ مُنفَكِّينَ حَتَّىٰ تَأْتِيَهُمُ الْبَيِّنَةُ (١) رَسُولٌ مِّنَ اللَّهِ يَتْلُو صُحُفًا مُّطَهَّرَةً (٢) فِيهَا كُتُبٌ قَيِّمَةٌ (٣) وَمَا تَفَرَّقَ الَّذِينَ أُوتُوا الْكِتَابَ إِلَّا مِن بَعْدِ مَا جَاءَتْهُمُ الْبَيِّنَةُ (٤) وَمَا أُمِرُوا إِلَّا لِيَعْبُدُوا اللَّهَ مُخْلِصِينَ لَهُ الدِّينَ حُنَفَاءَ وَيُقِيمُوا الصَّلَاةَ وَيُؤْتُوا الزَّكَاةَ ۚ وَذَٰلِكَ دِينُ الْقَيِّمَةِ ٥
“(১) (সর্বশেষ নবী ও রাসুল মুহাম্মাদ ﷺ এবং তাঁর আনিত ‘দ্বীন ইসলাম’-কে কবুল করার ব্যাপারে) আহলে কিতাব (ইহূদী ও খৃষ্টান) এবং মুশরিকদের মধ্যে যারা (তাদের প্রতিপালক প্রভু আল্লাহ তাআলার সাথে) কুফরী করেছে, তারা (তাদের এই কুফরী জীবনের গতিকে থামানো থেকে) নিবৃত হওয়ার (জন্য ততক্ষন পর্যন্ত প্রস্তুতই) ছিল না -যাবৎ না তাদের কাছে (ইমান ও কুফর এবং হক্ব ও বাতিলের মাঝে পার্থক্য প্রতিভাতকারী) আল-বাইয়্যেনাহ (সমুজ্জল প্রমাণ) এসে(উপস্থিত হয়ে)ছে। (২) (আর সেই সমুজ্জল প্রমাণটি ছিল) আল্লাহ’র পক্ষ থেকে (তাঁর প্রেরিত নবী ও) রাসুল (মুহাম্মাদ ﷺ); সেঁ -(মূলত: আল্লাহ’র যে সকল কালামকে লাউহে মাহফুজে লিখে) পবিত্র সহিফা (আকারে সংরক্ষিত রাখা হয়েছে সে)গুলোকে (যখন সম্মানীত ফিরিশতা জিবরীলের মাধ্যমে তাঁর কাছে সময়ে সময়ে নাজিল করা হয় তখন সেঁ তা মানুষের সামনে) তিলাওয়াত করে (শোনায়)। (৩) (ওই যে কুরআন মাজিদ) উহার মধ্যে রয়েছে (ভুল ও ভ্রষ্ঠতা থেকে মুক্ত-পবিত্র) কুতুবে-কায়্যিমাহ (সোজা-পথের দিশা দানকারী ও ন্যায়ের উপরে প্রতিষ্ঠিত বাণী সমগ্র)। (৪) যাদের(পূর্ববর্তীদের)কে (এর আগে তাদের প্রভু আল্লাহ’র পক্ষ থেকে তাদের কাছে প্রেরিত রাসুলের মাধ্যমে) কিতাব দেয়া হয়েছিল, তাদের(ই পরবর্তী এসব আহলে কিতাব অনুসারীদের) কাছে (তাদের প্রভু আল্লাহ’র পক্ষ থেকে) আল-বাইয়্যেনাহ (উজ্বল প্রমাণ) আসার পরেই কেবল তারা (নিছক জেদ ও হিংসার সববর্তী হয়ে আল্লাহ’র দ্বীনের মধ্যে) বিভেদ তৈরী করে নিলো। (৫) অথচ তাদেরকে নির্দেশ দেয়া হয়েছিল -তারা শুধুমাত্র আল্লাহ’র ইবাদত (ও গোলামী) করবে -সম্পূর্ণ খাঁটিত্ব নিয়ে (শুধুমাত্র) তাঁরই দ্বীনের অভিমুখী হয়ে, আর তারা (ফরয) নামায আদায় করবে ও (ফরয) যাকাত আদায় করবে। আর ওটাই হল (আল্লাহ’র) ‘দ্বীন আল-কাইয়্যেম’ (সুপ্রতিষ্ঠিত দ্বীন)”। [সূরা আল-বাইয়্যেনাহ ১-৫]